Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের নিরাপদ টিকা নিশ্চিত করতে ইডটকো ও ফুটস্টেপস এর যৌথ উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০২২, ৬:৫৪ পিএম

সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ইডটকো বাংলাদেশ’ এবার স্বাস্থ্যসেবা খাতে কোম্পানির ‘টাওয়ার টু কমিউনিটি’ সিএসআর (কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা) কর্মসূচি বিস্তৃত করেছে।

এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিষ্ঠানটি ফুটস্টেপস এর সাথে যৌথ উদ্যোগে ‘এনার্জাইজ দ্য চেইন বাংলাদেশ প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলার তালা ও কালকিনি উপজেলার প্রান্তিক মানুষদের জন্য নিরাপদ টিকা সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে থাকে। ফলে পর্যাপ্ত সংরক্ষণ সুবিধার অভাবে অধিকাংশ টিকা-ই কার্যকারিতা হারায়। এতে করে প্রান্তিক অঞ্চলের অধিবাসী, বিশেষত যারা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে দূরে বসবাস করে, টিকাগ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়া অথবা বঞ্চিত হবার শঙ্কা থেকে যায়। ফলে কমিউনিটির বাসিন্দারা, বিশেষ করে শিশুরা বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগে ভুগে থাকে।

যেহেতু টিকা সংরক্ষণের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বা বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা প্রয়োজন, তাই এ প্রজেক্টের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক বিঘ্ন বা ‘গ্রিড ফেইলিওর’-এর সময়ে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় টিকা সংরক্ষণ করতে নিজেদের টাওয়ার থেকে নিকটস্থ ওষুধের দোকান সমূহে ‘পাওয়ার ব্যাকআপ’ দেবার জন্য ইডটকো বাংলাদেশ এগিয়ে এসেছে- প্রাথমিকভাবে ইডটকো দুইটি রেফ্রিজারেটরে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছে, যাতে করে রেফ্রিজারেটরগুলো বিঘ্ন ছাড়াই টিকা সংরক্ষণের উপযুক্ত তাপমাত্রায় সচল থাকতে পারে। এই টিকা প্রকল্পটি থেকে উপকৃত হবে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কমপ্লেক্স থেকে দূরবর্তী স্থানে বসবাসকারী ৩ হাজার ২ শ এর বেশি বাসিন্দা।

আজ রোববার সকালে এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধমে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র ‘এনার্জাইজ দ্য চেইন বাংলাদেশ’ এর কার্যক্রম উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে ইডটকো বাংলাদেশ ও ফুটস্টেপস এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনকালে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র এ প্রসঙ্গে বলেন, “প্রতিরোধযোগ্য বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব প্রশমনে টিকা প্রদানের বিকল্প নেই। তবে প্রযুক্তির অপ্রতুলতা, বিদ্যুৎ সংকটসহ নানাবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই প্রান্তিক ও দূরাঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে প্রয়োজনীয় এই স্বাস্থ্যসেবাটি পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় না। টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইডটকো অনগ্রসর এলাকায় টিকা সংরক্ষণের জন্য বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা একইসঙ্গে অভিনব ও টেকসই। আমি প্রত্যাশা করব প্রতিষ্ঠানটি তার এই ইতিবাচক কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটাবে এবং টেলিযোগাযোগ খাতের অন্য অংশীদারদের কাছেও সামাজিক উন্নয়নে এ ধরনের কার্যকরী পদক্ষেপ নেবার আহ্বান রইল।”

এ বিষয়ে ইডটকো বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার ডিরেক্টর রিকি স্টেইন বলেন, “সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণের লক্ষ্যে আমাদের সিএসআর কর্মসূচি ‘টাওয়ার টু কমিউনিটি’ এমন ভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে যেসব এলাকায় আমরা ব্যবসা পরিচালনা করছি, সে সব স্থানের অনগ্রসর মানুষগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে পারি। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা উপলব্ধি করেছি যে দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় টিকা প্রদান ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রম পরিচালনা যথাযথভাবে হচ্ছে না; যা প্রতিরোধযোগ্য রোগের প্রাদুর্ভাবের অন্যতম কারণ। আমরা বিশ্বাস করি, ইডটকো’র টাওয়ার থেকে বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে টিকা সংরক্ষণ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে এবং প্রকল্প এলাকা সংশ্লিষ্ট কমিউনিটিতে টিকা গ্রহণের হার বৃদ্ধি পাবে। ফলশ্রুতিতে, এ কার্যক্রম প্রান্তিক মানুষের রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হবে এবং জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি-৩ অর্জনে সহায়ক হবে- যার উদ্দেশ্য সুস্বাস্থ্য ও সব বয়সের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা।”

ফুটস্টেপসএর কো-ফাউন্ডার ও প্রেসিডেন্ট শাহ রাফায়েত চৌধুরী বলেন, “ইডটকোর সাথে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে মোবাইল টাওয়ার থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভ্যাকসিন ও মেডিকেল রেফ্রিজারেশান সিস্টেম পরিচালনার বিষয়টি ভবিষ্যতে আরো উদ্ভাবনীয় ভাবনার পথ প্রশস্ত করবে এবং আমরা অনুধাবন করতে পারব কী করে ইতোমধ্যে স্থাপিত বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ব্যবহার করে জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও পরিবেশ এর মতো জটিল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যায়।”

২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা ‘টাওয়ার টু পাওয়ার’ এবং ‘টাওয়ার টু ওয়াটার’ কার্যক্রমগুলো ‘টাওয়ার টু কমিউনিটি’ কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচি এর আওতাভুক্ত, যার লক্ষ্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের চেষ্টা করা। এই সিএসআর কর্মসূচি প্রান্তিক কমিউনিটিগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি ও ইতিবাচক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ইডটকোর সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করে। ইডটকোর সিএসআর উদ্যোগগুলো অভিনব-কারণ প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের টাওয়ার ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নেটওয়ার্ক সংযোগ প্রদানের বাইরেও সিএসআর কার্যক্রমগুলোতে ব্যবহার করে। এই উদ্ভাবনী সিএসআর কর্মসূচির মাধ্যমে দেশজুড়ে ৮ হাজারেরও বেশি অনগ্রসর পরিবার ইতোমধ্যে উপকৃত হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ