পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাবনা জেলা সংবাদদাতা : পাবনা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ দুই ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় পৃথক দু’টি জিডি করা হয়েছে। এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই শিক্ষার্থী আদৌ নিখোঁজ নাকি অপহরণের শিকার অথবা কোন জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নিখোঁজ ছাত্ররা হলেন, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মোহাম্মদ সুরুজ্জামানের পুত্র জাকির হোসেন। সে পাবনা মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। অপরজন একই জেলার রংপুর নগরীর শালবন মিস্ত্রিপাড়ার নুরুল আলম সরকারের পুত্র তানভীর আহমেদ তনয়। এরা দুইজনই এমবিবিএস চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। এদের মধ্যে ১ ডিসেম্বর সকালে বাড়ি থেকে ট্রেনে করে পাবনা মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ফেরার পথে জাকির হোসেন এবং ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় তানভীর আহমেদ তনয় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে নিখোঁজ হন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পাবনা মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তানভীর আহম্মেদ তনয় কলেজের ১ নম্বর হোস্টেলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। ৩০ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে সে হোস্টেল থেকে বেড়িয়ে আর ফিরে আসেননি। এরপর থেকে তার মোবাইল নাম্বারও বন্ধ রয়েছে। পরদিন তার রুমমেট ও কলেজ কর্তৃপক্ষ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তনয় গ্রামের বাড়িতেও যায়নি।
পাবনা সদর থানার ডিউটি অফিসার এএসআই জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, পাবনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
এদিকে রংপুর জেলার কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানিয়েছেন, পাবনা মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জাকির হোসেন ২৪ নভেম্বর বাড়িতে আসেন। পরে ১ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় জাকির কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি এক্সপ্রেসে করে ক্যাম্পাসে পাবনা মেডিক্যাল কলেজে আসার জন্য রওনা হন। গাইবান্ধায় পৌঁছার পর মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। ‘এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে এবং ক্যাম্পাসে তিনি ফেরেননি বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।’ জাকিরের বাবা সুরুজ্জামান থানায় জিডি করার পর পুত্রের সন্ধান চেয়ে ৫ ডিসেম্বর র্যাব-১৩ রংপুরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ-র্যাব কেউ সন্ধান দিতে পারছে না।
পাবনা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রিয়াজুল হক রেজা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জাকির ও তনয় ক্যাম্পাসে বয়েজ ছাত্রাবাসের পাশাপাশি কক্ষে থাকত। ৩০ নভেম্বর ক্যাম্পাস থেকে তনয় এবং ১ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে জাকির নিখোঁজ হয়। সন্ধান চেয়ে জিডি করা হলেও তাদের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। দুই ছাত্র নিখোঁজের বিষয়টি তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাবনা মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হাসান বলেন, “জাকির আমাদের সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক। ভালো ছেলে। তনয় তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাদের নিখোঁজের কারণ বুঝতে পারছি না।
তনয়ের পিতা নুরুল আলম সরকার বলেন, ৬ অক্টোবর ছোট বোনের মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন বাড়িতে এসেছিল তনয়। দু’দিন পর সে আবার পাবনায় চলে যায়। গত ৩০ নভেম্বর তার নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে ছুটে যাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও পুত্রের কোন সন্ধান পাচ্ছি না।
এদিকে জাকির ও তনয়ের সহপাঠিরা জানান, দু’জনেই নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। তবে তারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত কিনা, তারা তা জানেন না।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার জিহাদুল কবীর সাংবাদিকদের বলেন, পাবনা মেডিক্যালের দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে এমন তথ্য পুলিশ জানার পর তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, তারা আসলেই নিখোঁজ নাকি কোন জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছে সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুব শিঘ্রই তাদের নিখোঁজের রহস্য উদ্ঘাটন করা যাবে বলে পুলিশ সুপার আশা প্রকাশ করেন। অপরদিকে, পাবনার বেশ কয়েকজন মুসল্লি ইনকিলাবকে বলেন, এ এক বড় সমস্যা। কেউ নামাজী হলেই তাকে জঙ্গি বলা এটা কেমন কথা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।