গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
যেখানে প্রয়োজন হয় সেখানেই শক্তি প্রয়োগ করে র্যাব। যেখানে প্রয়োজন হয় না সেখানে করা হয় না। কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে, দায়ী পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। এ বিষয়ে বাহিনীর দীর্ঘদিনের যে অনুশীলন তা মেনে চলবে। একই সঙ্গে সামনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করবো। র্যাব ডিজি হিসেবে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন শেষে আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে যোগ দেয়ার আগে বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
নিষেধাজ্ঞার কারণে র্যাবে ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করাটা কঠিন সময় ছিল কি না? এবং এ কারণে বন্দুকযুদ্ধ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তা মনে করি না। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন তোমরা এদেশের পুলিশ, এদেশেরই নাগরিক। আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কেন আমরা দাঁড়াব। যখন আমরা আক্রান্ত হই, মাদক, অস্ত্র উদ্ধার, মানবপাচারকারী যখন আমাদের ওপর আক্রমণ করে তখন আমরা প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আইনে যে ক্ষমতা র্যাবকে দিয়েছে তা আমরা ক্রস করি না।
ইদানিং বন্দুকযুদ্ধ কমে গেছে। তাহলে র্যাবের ওপর হামলা কমে গেছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে র্যাব ডিজি বলেন, যেখানে যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুই আমরা শক্তি প্রয়োগ করি। একটা লোক দৌড় দিলো, ধাক্কা দিলো আর গুলি করে দিতে হবে? সিচুয়েশন যে ডিমান্ড করে সে অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আমাদের দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
বিরোধী দল বলছে, বিগত দিনে পুলিশ সরকারের হয়ে কাজ করেছে। পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর বিষয়টিকে কীভাবে মোকাবিলা করবেন? জবাবে আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, মাঝেমধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে। কেউ এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর নির্বাচনকালে নির্বাচন কমিশনের কাঠামোর আলোকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার দায়িত্ব পালন করে। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, র্যাবের সাবেক-বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আছে। এ কারণে আগামী পথচলায় তার ওপর চাপ থাকবে কি না? জবাবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গত আড়াই বছরে তিনি র্যাবে স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করেছেন। র্যাব আইনানুগপ্রক্রিয়া অবলম্বন করে কাজ করে। কাজ করতে গিয়ে র্যাব বাধা হয়ে দাঁড়ালে অপরাধীরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে। অপরাধীরা র্যাবকে প্রতিহত করে অপরাধমূলক কর্মকা- ঘটায়। এতে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। সে ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। ম্যাজিস্ট্রেট আসেন। কেউ নিহত হলে অভিজ্ঞ ময়নাতদন্তকারী লাশের ময়নাতদন্ত করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনা তদন্ত করেন। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন। রায় দেন। গণমাধ্যম সবকিছু মনিটর করে। এসব প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পাদিত হয়।
মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে র্যাব। কিন্তু মাদক বাড়ছে মাদকসেবিও বাড়ছে। তাহলে মাদকের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযান ব্যর্থ কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা যে যুদ্ধ করছি সেটা বৈশ্বিক যুদ্ধ, এই যুদ্ধ শুধু আমরা না, বিশ্বজুড়েই চলছে। আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজের কারণে কারাগারে যে আসামি তার বেশিরভাগই মাদকের। প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পর যেখানেই মাদক সেখানেই সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। শুধু র্যাব নয়, সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তাদের ধরছে। মাদকের বিষয়ে সবার ঘর থেকেই সচেতনতা দরকার। সন্তান কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে অভিভাবকদের।
র্যাবের ডিজি জানান, তার সময়কালে ৩৬ হাজার মাদক কারবারিকে গ্রেফতার, ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং ৭৭ হাজার বোতল মাদকের চালান জব্দ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার র্যাব সদর দপ্তরে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হবে। শুক্রবার তিনি পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপির দায়িত্ব নেবেন। একই দিন র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেবেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মিডিয়া ও লিগ্যাল উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনসহ র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।