মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
হিজাব ইস্যুতে ইরাতে সম্প্রতি প্রচণ্ড বিক্ষোভ হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনি নামে এক নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভে এখনো পর্যন্ত ৭৬ জন নিহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে এতে সরকারের উপরে কতটা প্রভাব পড়বে?
উনিশশো উনআশি সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে শরিয়া আইনের বিপক্ষে এ ধরণের বিক্ষোভ হয়নি। বেয়াল্লিশ বছর আগে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পরে সেখানে যত বিক্ষোভ হয়েছে সেগুলো শক্ত হাতে দমন করেছে ইরানের সরকার। ইরানের তরুণ নাগরিকদের অনেকেই মনে করে তাদের হারানোর কিছুই নেই। দশকের পর দশক ধরে 'ব্রেইন ড্রেইনে'-র শিকার হচ্ছে ইরান। সেখানকার মেধাবীদের মধ্যে যাদের সুযোগ আছে তাদের বেশিরভাগই দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধের কারণে ইরানের অর্থনীতি বেশ ভঙ্গুর। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সের আন্তর্জাতিক ইতিহাসের শিক্ষক এবং ইরান বিষয়ক পর্যবেক্ষক রোহাম আলভান্দি আমেরিকার সিএনবিসিকে বলেন, যে দ্রুত গতিতে এই বিক্ষোভ ছড়িয়েছে এবং যত দ্রুততার সাথে তারা আন্তর্জাতিক সমর্থন পাচ্ছে, সেটি ক্ষমতাসীনদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
তবে এ বিক্ষোভ ইরানের ক্ষমতাসীনদের হঠাতে সক্ষম হবে না বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। বাংলাদেশে ইন্সটিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের ইরান বিষয়ক গবেষক রাজিয়া সুলতানা মনে করেন, বিক্ষোভ যদি আরো চলতে থাকে তাহলে হয়তো কিছু সংস্কারের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে। কিন্তু এটি ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘তাদের যে পলিটিকাল স্ট্রাকচার আছে সেটা চাইলেই পরিবর্তন করা যাবে না। ইরানের রাজনৈতিক কাঠামো ওভাবেই তৈরি করা। ফলে সেখানে কোন আঘাত আসবে না।’
এর বড় কারণ হচ্ছে দেশটির বিশাল এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী। ইরানে রেভ্যুলশনারি গার্ড এবং তাদের আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আরো প্রায় পাঁচ লাখের মতো। দুই হাজার নয় সালে দেশটিতে যখন 'গ্রিন মুভমেন্ট' হয়েছিল তখন নিরাপত্তা বাহিনীগুলো তাদের শক্তি দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিল।
এ বিক্ষোভ দমনের জন্য ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী এখনো পুরো শক্তি ব্যবহার করেনি। যদিও কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মীসহ অনেককে আটক করা হচ্ছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এই বিক্ষোভ কতদূর যাবে। এই বিক্ষোভ বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধানের বিষয়টি বিলুপ্ত করা এবং নারীদের হিজাব পরিধানের উপর পুলিশের নজরদারি বন্ধ করা পর্যন্ত যায় কি না।
তবে একসময় যেটা অকল্পনীয় ছিল এই বিক্ষোভের মাধ্যমে সেটি অর্জন হয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এখন থেকে অধিকাংশ ইরানি যে বিষয়টিকে অপরাধ মনে করে না সেটি নিয়ে যদি ইরানের সরকার শাস্তি চাপিয়ে দিতে চায় তাহলে তাদের মূল্য দিতে হবে। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।