নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কাকতালীয় ঘটনা! ঠিক নয় দিন আগে যে মাঠে সাবিনা খাতুনরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়েছেন, সে মাঠেই জামাল ভূঁইয়ারা একই ব্যবধানে নেপালের কাছে হেরে দেশের ফুটবলকে লজ্জায় ফেলেছেন। মেয়েরা নেপাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ফেল করেছেন জামালরা। গতকাল সন্ধ্যায় কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফিফা প্রীতি ম্যাচে মিডফিল্ডার অঞ্জন বিষ্টার হ্যাটট্রিকে স্বাগতিক নেপাল ৩-১ গোলে হারায় বাংলাদেশকে। প্রথমার্ধেই নেপাল গোল তিনটি করে। দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের পক্ষে ফরোয়ার্ড সাজ্জাদ হোসেন এক গোল শোধ দিলেও শেষ পর্যন্ত দলকে আর ম্যাচে ফেরাতে পারেননি।
কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামকে বলা হয় বাংলাদেশের জন্য পয়মন্ত ভেন্যু। এখানেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর স্বাগতিকদের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী দল। সদ্য সমাপ্ত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে এখন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা নারী ফুটবল দল সাবিনা খাতুন বাহিনী। তাদের হাত ধরেই ১৯ বছর পর সাফ শিরোপা ঘরে তুলেছে লাল-সবুজরা। এর আগে এ মাঠেই ১৯৯৯ সালে অষ্টম সাউথ এশিয়ান গেমস ফুটবলের ফাইনালে আলফাজ আহমেদের গোলে নেপালকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবার গেমসে স্বর্ণ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তাই তো নেপাল-বাংলাদেশ প্রীতি ম্যাচের আগে ফুটবলপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন ছিল- আলফাজ-সাবিনার মতো দশরথ কি জামালদেরও পয়মন্ত ভেন্যু হবে এবার? কিন্তু না, তা হয়নি। যথারীতি বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবলের দৈন্যতার চিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছে জামাল বাহিনী। মাত্র ক’দিন আগে সাবিনাদের ইতিহাস গড়া জয়ও প্রেরণা হতে পারেনি তাদের জন্য। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে নেপালের (১৭৬) চেয়ে ১৬ ধাপ পেছানো বাংলাদেশ (১৯২) দল। কাল প্রীতি ম্যাচের খেলায়ও ব্যবধানটা ছিল স্পষ্ট। সৌহার্দ্যরে ম্যাচ হলেও সাফে মেয়েদের ব্যর্থতা ভুলতে মরিয়া ছিলেন নেপালের পুরুষ ফুটবলাররা। তাই তো ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে বাংলাদেশের রক্ষণদূর্গে ভীতি ছড়ান অঞ্জন বিষ্টারা। কম্বোডিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কাঠমান্ডুতে পা রাখা জামালরা পুরো ম্যাচই যেন চাপ নিয়ে খেলে। মুলত নেপালকে হারিয়ে এ মাঠে সাবিনাদের সাফ জয়ে চাপে ছিলেন জামাল-জিকোরা। শেষ পর্যন্ত সেই চাপ কাটিয়ে উঠতে ব্যর্থ হন তারা। এক অঞ্জন বিষ্টাকে আটকাতেই হিমশিম খেতে হয় বাংলাদেশ রক্ষণভাগকে। ম্যাচের প্রথম গোলটি হয় ১৮ মিনিটে। এসময় বক্সের ডান পাশে ফ্রি-কিক পায় নেপাল। বিমল মাগার ফ্রি-কিক নিলে পোস্টের মুখে জটলায় বল চলে আসে। সেখান থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন বিষ্টা (১-০)। ধারাবাহিক আক্রমণের মুখে ম্যাচের ২৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় স্বাগতিক দল। পাল্টা আক্রমণ থেকে বল পেয়ে নেপালের এক ফুটবলার ডি-বক্সে ঢুকে শট নিলে তা ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। কিন্তু ফিরতি বলটি পেয়েই বাম পাশ থেকে মাটি কামড়ানো শটে দ্বিতীয় গোল করেন অঞ্জন বিষ্টা (২-০)। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে নিজের হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বিষ্টা। এসময় বাম প্রান্ত থেকে ফ্রি-কিকের বলে আলতো করে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি (৩-০)। তিন গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গেলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে এক গোল শোধ দেয় বাংলাদেশ। ব্যস, এটুকুই। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে মাঝ মাঠে বল পান রাকিব হোসেন। ডানপ্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে নেপালের গোললাইন বরাবর ক্রস করেন তিনি। সেখানে এগিয়ে এসেছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। ড্রাইভ দিয়ে বলে হেড করেস তা নেপালের জালে জড়ান সাজ্জাদ (১-৩)। ম্যাচের বাকি সময় বিচ্ছিন্ন ক’টি আক্রমণ করলেও আর গোল পায়নি লাল-সবুজরা। ফলে শেষ পর্যন্ত ৩-১ ব্যবধানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।