পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) একটি চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মধ্যে ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছে এটিইউ। তাদের কারণেই জঙ্গি দমনে সফলতা আসছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের এটিইউয়ের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেনস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি আরো বলেন, আর কোনো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আমরা ঢুকতে দেবো না। যে সংখ্যক রোহিঙ্গা আমাদের দেশে রয়েছে, অ=ামরা নিজেরাই এখন তাদের নিয়ে নানান ধরনের জটিলতায় রয়েছি। বিদেশের কোনও বিচ্ছিন্ন বাহিনী বা সংগঠনের কোনও সন্ত্রাসীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হবে না। এটিইউ, র্যাব, ডিএমপি’র সিটি সবাই মিলে আমরা জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করেছি। যারা জঙ্গিবাদের পথে রেডিক্যালাইজড হয়েছে তাদের কাউন্সিলিং করা হচ্ছে।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটকে কখন প্রয়োজন হলো তা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে যখন জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছিল বাংলাদেশে কিন্তু আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের কানেকশন ছিল না। হঠাৎ করে তারা (জঙ্গিরা) বেগবান হয়ে গেল। বিভিন্ন জায়গায় তাদের উপস্থিত দেখা যাচ্ছিল। তার আগে আমরা টেররিস্টদের উত্থান দেখেছি। বাংলা ভাইয়ের উত্থান দেখেছি, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেডের পর গ্রেনেড হামলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার উদ্দেশ্য নারকীয় কাÐ সেটাও আমরা দেখেছি। ৬৩ জেলায় একসঙ্গে বোমার বিস্ফোরণ দেখেছি। জঙ্গিদের কীভাবে প্রতিহত করা যায়, সে জন্য কাউন্টার টেররিজম দিয়ে শুরু করলাম। কীভাবে জঙ্গিদের তথ্য আগে পাওয়া যায় কাজ করার জন্য।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিবাদ উপরে ফেলেছি তা বলব না। তবে আমরা কন্ট্রোলে এনেছি। যা জোর গলায় বলতে পারি। আমাদের এটিইউ, সিটিটিসি, পুলিশ, র্যাব সবাই মিলে কাজ করছে। এজন্যই বর্তমানে এই জায়গায় আসতে পেরেছি। য্বুকরা আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে নিয়ে কাজ করছে এটিইউ। পাঁচ বছরের মাথায় তাদের অনেক সফলতা রয়েছে। আমি তাদের নেতৃত্ব, দক্ষতা দেখেছি। এটিইউ কাজের মাধ্যমে চৌকস বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তাদের কারণেই জঙ্গি দমনে সফলতা আসছে। আর দেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ না।
অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, বঞ্চনা ও ক্ষোভ থেকে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়। তাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এদিকে আমাদের ও আন্তর্জাতিক মহলকে খেয়াল রাখতে হবে। বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের প্রেক্ষাপটে দেখা গেছে, আমাদের দেশের কোনও কারণে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দেয় না, আমাদের দেশে জঙ্গিবাদ আন্তর্জাতিক কারণে মাথাচাড়া দেয়। প্রথমে আফগান যুদ্ধ, তারপর ইরাক যুদ্ধ, এরপর আইএস সৃষ্টি হলে দেশেও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। আমরা সবকিছু মোকাবিলা করেছি, দমন করেছি।
অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অতিরিক্ত আইজি এস এম রুহুল আমিন, লজিস্টিক সাপোর্ট ও প্রশিক্ষণের অভাবে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এখনো কাক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।
জাতিসংঘ ২০০৬ সালে গেøাবাল কাউন্টার টেররিজম স্ট্র্যাটেজি প্রকাশ করে। সেখানে চারটি স্ট্র্যাটেজির কথা বলা হয় সদস্য রাষ্ট্রের জন্য। আমরা এটিইউ নতুন সংগঠন। আমাদের লজিস্টিক সাপোর্ট ও প্রশিক্ষণের অভাবে কাক্সিক্ষত জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি। এখানে আমাদের আরও সাপোর্ট দরকার।
অতিরিক্ত আইজি এস এম রুহুল আমিন বলেন, আমি যে বিষয়টি বলতে চাচ্ছি, চারটি স্ট্র্যাটেজির প্রথম বিষয়টি হলো জঙ্গিবাদ বিস্তারে ভ‚মিকা রাখে যে বিষয় সেগুলোকে দমন করা। তার মধ্যে অনেকগুলো বিষয় আছে। যেমন অর্থসামাজিক, রাজনৈতিক। আমি যেটি তুলে ধরতে চাই সেটি হলো একাডেমিক। আমরা ২০০৭-০৮ সালে ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলা টেররিজম নিয়ে কাজ করছিলাম। তখনও জঙ্গি দমনে জাতিসংঘ ঘোষিত প্রথম স্ট্র্যাটেজির মানে হলো Ñআমাদের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় ব্যাপক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা বিচ্ছিন্নভাবে সেটা করছি। অর্থ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন তাদের দায়িত্ব রয়েছে। এই বিষয়টা আরেকটু গোছাতে পারলে ভবিষ্যতে জঙ্গিদের এই পথে আসা কঠিন হবে। নিরুৎসাহিত হবে।
অতিরিক্ত আইজি আরও বলেন, ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর ওপর বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর আমরা অনেকটা নিরাপদে ছিলাম। ২০১৬ সালে আবার বিচ্ছিন্নভাবে দেশকে অশান্ত করতে একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ঠিক সেই সময়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী একটি কেন্দ্রীয় সংগঠন গঠনের প্রয়োজনীয়তা প্রবলভাবে দেখা দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট গঠিত হয়। ২০১৭ সাল থেকে ২২ সাল এই পাঁচ বছরে আমরা অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে সকলের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রমাণ করেছে। ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার ইনস্টিটিউট অব ইকোনমিক অ্যান্ড টেররিজমের লিস্টে আমাদের অবস্থান ছিল ২১তম। গত পাঁচ বছরে সেখান থেকে পিছিয়ে ৪০তম হয়েছি। অর্থাৎ আমাদের দেশে জঙ্গিবাদের পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এটি সরকারের জঙ্গিবাদ নিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি এবং এটিইউসহ জঙ্গিবাদ দমনে নিয়োজিত সকল সংগঠন কার্যক্রমের ফল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।