পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ইরানের ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির। হিজাব না পরায় তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এই ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সেদেশের হাজার হাজার মহিলা। মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে ‘নীতি পুলিশের’ বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদে চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদে দেখাচ্ছেন তারা। অভিনব প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। প্রতিবাদীদের অভিযোগ, পুলিশের মারেই মৃত্যু হয়েছে তরুণীর। যদিও পুলিশ ও সরকার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

মেয়েদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে মেয়েদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা তা তদারকি করে থাকে। মনে করা হচ্ছে, বছর বাইশের মাহসা আমিনিকে নীতি পুলিশের অভিযোগেই শুক্রবার গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, মাহসাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয়। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি তরুণীকে মারধর করা হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের পরেই অসুস্থ হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর কোমায় চলে যান। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।

মাহশার মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ইরান জুড়ে প্রতিবাদ শুরু করেন মহিলারা। রাজধানী তেহরানে রাস্তায় নামেন হাজার হাজার তরুণী। তারা নারী অধিকারের দাবি তোলেন। স্লোগান দেন ‘অত্যাচারীর মৃত্যু হোক’, ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’। কিছু ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা কর্মীরা কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করছেন। এইসঙ্গে মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদে বহু তরুণী চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদে শামিল হন। চুল কাটা ও হিজাব পোড়ানোর ভিডিও সোশ্যাল মডিয়ায় পোস্ট করেন তারা। ইরানের সাংবাদিক ও সমাজকর্মীরা এই ধরনের প্রতিবাদী ভিডিও টুইট করায় তা গোটা বিশ্বের সামনে চলে আসে।

উল্লেখ্য, গত ৫ জুলাই মেয়েদের জন্য নতুন পোশাক বিধি জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে মহিলারা কী কী পোশাক কীভাবে পরতে পরবেন সেই তালিকা দেওয়া হয়েছে৷ এরপর থেকেই পোশাক বিধির অন্যথা হলেই তীব্র তিরস্কার, জরিমানা বা গ্রেপ্তারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে মেয়েদের। ‍সূত্র: রয়টার্স।