Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রানির শেষকৃত্যে সউদী যুবরাজকে নিমন্ত্রণ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১:০৯ পিএম

সউদী আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান রানি এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবার জন্য ব্রিটেনের নিমন্ত্রণ পাওয়ার পর মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সউদী দূতাবাসের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, ‘এমবিএস’ নামে পরিচিত যুবরাজ এই সপ্তাহান্তে লন্ডনে আসবেন। তবে তিনি সোমবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ইস্তাম্বুলে সউদী কনস্যুলেটের ভেতরে সউদী সাংবাদিক জামাল খাসোগজিকে হত্যার সাথে এমবিএস সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ করা হয়। সউদী ক্রাউন প্রিন্স এবং তার সরকার এটি অস্বীকার করে। তবে এর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বে তিনি তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন এবং ওই অভিযোগ ওঠার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনি আর ব্রিটেনে যাননি। হত্যাকাণ্ডের শিকার সউদী সাংবাদিকের বাগদত্তা হ্যাটিস গেঙ্গিজ বলেছেন, তাকে আমন্ত্রণ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের স্মৃতির প্রতি একটি কলঙ্ক। যুবরাজ লন্ডনে অবতরণ করার সময় তাকে গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যদিও এমন কিছু আসলেই ঘটার ব্যাপারে সন্দেহ আছে তার।

আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায় এমন সংস্থা ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট দ্য আর্মস ট্রেড অভিযোগ করেছে যে, তাদের ভাষায় সউদী আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো তাদের মানবাধিকার বিষয়ক দুর্নাম ঘোচানোর জন্য রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে ব্যবহার করছে। সংস্থাটি মনে করে আট বছর আগে ইয়েমেনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, ব্রিটেন সেখানে যুদ্ধরত সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে ২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি অস্ত্র বিক্রি করেছে।

দুই হাজার সতের সালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সউদী সিংহাসনের উত্তরাধিকারী হওয়ার পর থেকে সেখানে সামান্য যতটুকু রাজনৈতিক স্বাধীনতা ছিল তাও সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সরকারের সমালোচকদের সেখানে ব্যাপকহারে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, এমনকি শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোন কিছু পোস্ট করার জন্যেও। একই সময়ে মোহাম্মদ বিন সালমান সউদী আরবে সামাজিক উদারীকরণের একটি বিশাল কর্মসূচি শুরু করেছেন। "অনৈসলামিক" বলে বিবেচিত হওয়ায় সউদী রাজতন্ত্রে দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং অন্যান্য বিনোদন জনসাধারণের জন্য আবার চালু হয়েছে।

তার আদেশে সেখানে এখন নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমোদন রয়েছে। মরুভূমির রাজ্যটিতে এখন আন্তর্জাতিক খেলাধুলা এবং সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে, যার মধ্যে ডিজে ডেভিড গুয়েটার একটি কনসার্ট রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়া সত্ত্বেও উপসাগরীয় অঞ্চলে সউদী আরবের সাথে ব্রিটেনের এক ধরনের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। ইরানের আগ্রাসী সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো সউদী আরবকে একটি বাধা হিসেবে মনে করে।

সউদী আরব পশ্চিমা কয়েকটি দেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে অস্ত্র ক্রয় করে। যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ক্রয় করে সউদী আরব তার একটি। সউদী আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির বিরাট অংকের অস্ত্র ব্যবসা রয়েছে। দেশটি হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক নিয়োগ দেয়, বার্ষিক হজ যাত্রার আয়োজন করে। বিশ্বে তেলের মওজুদের ১৮ শতাংশ হচ্ছে সউদী আরবে এবং বিশ্বের সবচাইতে বড় জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশটি। বলা হয় সউদী আরব আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এসব কারণে সউদী যুবরাজের বিরুদ্ধে সমালোচনায় আন্তর্জাতিক মহল প্রায়শই বিরত থাকে বলে মনে করা হয়। সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ