Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ম্যাঙ্গালোরে দুই মুসলিম হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

কর্ণাটক বিজেপি সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির নিন্দা জানিয়ে একটি বিশাল প্রতিবাদের আয়োজন করে মুসলিম ঐক্যথা বেদিকে। ২৬টিরও বেশি মসজিদ কমিটি এবং সুরথকালের বেশ কয়েকটি সংগঠন একত্রিত হয় মাসুদ এবং ফাজিল হত্যার বিচার দাবিতে, যাদেরকে আগস্টে মাত্র ১০ দিনের ব্যবধানে হিন্দুত্ববাদী উগ্রপন্থীরা কুপিয়ে হত্যা করে।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ম্যাঙ্গালোরের ক্লক টাওয়ারের কাছে ৩ হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী জড়ো হয়। বিক্ষোভকারীরা ভুক্তভোগীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদানে রাজ্য সরকারের বৈষম্য এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সেøাগান দেয়।
সমাবেশে ফাজিলের বাবা উমর ফারুক বলেন, তার ছেলে নির্দোষ এবং কোনো সংগঠনের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। ন্যায়বিচার কবে পাবে জানতে চান তিনি। উমর ফারুক চোখের পানি ফেলে বলেন, ‘কারো সন্তানকে এভাবে খুন করা উচিত নয়! আমরা এখনও ন্যায়বিচার পাইনি এবং খুনের আসামি জামিন পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, জেলা কালেক্টর বা মুখ্যমন্ত্রী কেউই তাদের বাড়িতে যাননি। স্থানীয় আলেম ইয়াকুব সা’দি এবং সুন্নি ছাত্র ফেডারেশনের (এসএসএফ) নেতা বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী বোমাইয়ের ‘অ্যাকশন-প্রতিক্রিয়া’ মন্তব্যই জেলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার একমাত্র কারণ। তিনি মন্তব্য করেন, ‘এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে তিনি নিজেই দাঙ্গাকে জ্বালিয়েছেন যা আজ একের পর এক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জ্বলছে।
পিএফআই-এর সেক্রেটারি এ কে আশরাফ, বিক্ষোভকারীদের সম্বোধন করার সময়, রাজ্য সরকারের করা বৈষম্যের নিন্দা করেন এবং ইউএপিএর মতো কঠোর আইনের অপব্যবহারের বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ক্ষতিপূরণের দাবিতে বলেন, ‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী বোমাইয়ের পৈতৃক উত্তরাধিকার চাই না বরং আমরা আমাদের অধিকার চাইছি’।
‘ফাজিল হত্যা মামলার অভিযুক্ত যিনি খুনিদের আশ্রয় দিয়েছিলেন তিনি গ্রেফতারের ২০ দিনের মধ্যে জামিন পেয়ে যান যেখানে তার ওপর ৩০২ ধারা চাপানো হয়েছিল। আদালতে যথাযথ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশ বিভাগের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে’। এ কে আশরাফ বৈষম্যের উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রবীণ হত্যার মামলাটি এনআইএ-র কাছে হস্তান্তর করা হলেও মাসুদ ও ফাজিলের মামলা রয়েছে স্থানীয় পুলিশের হাতে।
পরে জেলা কালেক্টরের মাধ্যমে কর্ণাটকের রাজ্যপালের কাছে নিম্নোক্ত দাবিগুলো নিয়ে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়;
১. মাসুদ এবং ফাজিলের খুনেরও তদন্তও হওয়া উচিত এনআইএ এর আওতায়।
২. যারা মাসুদ ও ফাজিল হত্যায় উসকানি দিয়েছে, যারা খুনিদের মদদ দিয়েছে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা উচিত এবং এসব হত্যার পেছনের ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করা উচিত।
৩. পুলিশের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পক্ষপাতদুষ্ট তদন্তে জেলার জনগণ আস্থা হারিয়েছে, তাই ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নেতৃত্বে এসব ঘটনার তদন্ত করা উচিত।
৪. প্রবীনের পরিবারকে যেভাবে ক্ষতিপূরণ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেভাবে সরকারের পক্ষ থেকে মাসুদ ও ফাজিলের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ২৫ লাখ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
বিজেপি সরকার আর্জি শোনার পরিবর্তে চোখ ফিরিয়ে নেয়। এমনকি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্র তার লিখিত বিবৃতিতে বলেছেন যে, মাসুদ বা ফাজিলের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি এবং মাসুদ হত্যার প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে যে, এটি কোনো পরিকল্পিত হামলা ছিল না। তাই এটি এনআইএ-তে স্থানান্তর করার দরকার নেই এবং ফাজিলের মামলা এখনও তদন্তাধীন রয়েছে বলে তিনি জানান। সূত্র : সিয়াসাত ডেইলি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ