গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
পর্দা করায় ভাইভা বোর্ডে মুখ না খোলার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের এক ছাত্রীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় সেমিস্টারের ভাইভা দিতে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা চেহারা দেখতে চাইলে পর্দা (নিকাব) করার কারণে ওই শিক্ষার্থী তাতে অসম্মতি জানায়। ফলে ওই শিক্ষার্থীকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখায় ভাইভা বোর্ড। এবং একই কারণে আগের সেমিস্টারের ভাইভাতেও উপস্থিত থেকেও অনুপস্থিত হয় ওই শিক্ষার্থী।
দু'জন প্রফেসর ও দু'জন অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের সমন্বয়ে গঠিত ওই ভাইভা বোর্ডের প্রধান ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন শামীম। অন্যান্য সদস্যরা হলেন প্রফেসর ড.ভীস্মদেব চৌধুরী, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সোহানা মেহবুব, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড.তারিক মনজুর।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি নিকাব করে ভাইভা পরীক্ষা দিতে গেলে শিক্ষকরা আমাকে নিকাব খোলা সাপেক্ষে উপস্থিতি স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি বারবার তাদেরকে অনুরোধ করি যে, নন মাহরাম কারো সামনে আমি নিকাব খুলি না। আমি একাধিক ম্যাডামের সামনে আমার মুখ খুলে আমার পরিচয়ের সত্যতা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। কিন্তু শিক্ষকগণের বক্তব্য তারা আমার নিকাব খুলে চেহারা প্রদর্শন না করলে ভাইভা পরীক্ষা নিবেন না এবং উপস্থিতি স্বাক্ষর করতেও দিবেন না। আমি আবারো তাদের অনুরোধ জানাই যেন, একাধিক ম্যামের সামনে আমার চেহারা শনাক্ত করে নিকাব পরিহিত অবস্থায় আমার ভাইভা নেয়া হয়। কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং আমাকে গত ফার্স্ট সেমিস্টারসহ দুই সেমিস্টারের ভাইভাতে অনুপস্থিত করে দেন। আমি তাদের কাছে বার বার অনুরোধ করলেও তারা সাফ জানিয়ে দেয় যে আমার ভাইভা তারা আমার মুখ দেখা ছাড়া গ্রহণ করবে না।
ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, আমার পর্দা করা কি অন্যায়? আমি শুধু পর্দা করার কারণে ভাইভাতে উপস্থিত থেকেও কোন মার্ক পাচ্ছি না। যার ফলে এটি আমার রেজাল্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ভাইভা বোর্ডের সদস্য অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর তারিখ মনজুর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুয়ায়ী চেহারা ও কান দেখে পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করেই পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়। ঠিক অনুরূপভাবে ভাইভাতেও একই কাজ করা হয়। সুতরাং আমরা এখানে নিয়মের বাইরে কিছুই করিনি। তবে তাকে ভাইভাতে অনুপস্থিত দেখানো হয়নি। তাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল যাতে সবকিছু ভেবেচিন্তে (অর্থাৎ চেহারা দেখানো সাপেক্ষে) পরেরদিন আসতে পারে। তবে সেই সুযোগও গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ হয় বলে জানা যায়।
আরেক সদস্য প্রফেসর ড. ভীস্মদেব চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর গিয়াসউদ্দিন শামীম স্যারের সাথে কথা হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীকে পরেরদিন আসতে বলা হয়েছিল কিন্তু সে আসেনি।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান যে, তাকে পরেরদিন একই শর্তে অর্থাৎ চেহারা প্রদর্শন সাপেক্ষে ভাইভা দিতে যেতে বলা হয়েছে।
অপর এক সদস্য অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর সোহানা মেহবুবাকে ফোন করা হলে তিনি ভাইভা বোর্ডে আছেন বলে ফোন রেখে দেন এবং পরবর্তীতে আরো একাধিক কল করা হলেও সাড়া দেননি। একইভাবে একাধিক ফোন ও ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর গিয়াসউদ্দিন শামীমের সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী যদি ডিপার্টমেন্ট কোনো কিছু করে থাকে তাহলে সেটা তো ডিপার্ট্মেন্টের বিষয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে শিক্ষার্থী যদি বাড়তি কোনো সুবিধা পেতে চায় তাহলে তো তা আমাদের জানানো উচিত। তবেই আমরা একটা পদক্ষেপ নিতে পারব। আমাদের প্রশাসন তো সবসময় শিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।