Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাতকানিয়া পৌরসভায়-আপন বড় ভাইয়ের রোষানলের শিকার কাউন্সিলর আরাফাত

সাতকানিয়া প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৮ পিএম

সাতকানিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরাফাতুল্লাহ তার আপন বড় ভাই জহিরুল্লাহর রোষানলে পড়ে সর্বশান্ত হতে হতে পথে বসেছে এমন অভিযোগ ওঠেছে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

সাতকানিয়া পৌরসভার ভোয়ালিয়া পাড়ার একটি ৫তলা ভবনের মালিকানা নিয়ে কাউন্সিলর আরাফাতকে ভবন থেকে বের করে দিয়ে নিজেই একা দখল করার বিভিন্ন নানামুখি ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন কাউন্সিলর আরাফাতুল্লার বড় ভাই জহিরুল্লাহ।

সোমবার দুপুরে পৌরসভার ভোয়ালিয়া পাড়ায় ৫ম তলা বিশিষ্ট এ জি টাওয়ার ভবনে সরেজমিনে গেলে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে তার সত্যতা পাওয়া যায়।

জানাযায়-সাতকানিয়া পৌরসভার ভোয়ালিয়া পাড়ার মরহুম আব্দুল গফুর চৌধুরীর ৪ছেলেও মেয়ের মধ্যে আরাফাত ছোট ছেলেও অভিযুক্ত জহিরুল্লাহ তার বড় ভাই।

জহিরুল্লাহ আর আরাফাতের মধ্যে ছিল সবসময় ভাল বোঝাপড়া,তারই সুযোগে দুবাই প্রবাসী জহিরুল্লাহ এবং কাউন্সিলর আরাফাত উপজেলার সামনে একই সাথে যৌথভাবে জায়গা খরিদ করে ৫তলা ভবন নির্মান করেন।

ভবনের নামও রাখা হয় তাদের পিতামাতার নামের অক্ষরের সাথে মিল রেখে AG টাওয়ার।

২০১৬সাল থেকে কাজ শুরু হয়ে ২০২০সালে এই ভবনের কাজ শেষ হয়,যেখানে দুই ভাইয়ে যৌথভাবে খরচ করেন প্রায় ৩কোটি টাকা।আরাফাত আপন বড় ভাইয়ের(জহিরুল্লাহ) সাথে নির্মান কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন ব্যাংকও এনজিও থেকে প্রায় ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা ঋনও করেন।

পরে পুরোপুরি আরাফাতের তত্বাবধানে এজি টাওয়ারের কাজ শেষ হয় ২০২০সালের অক্টোবরের দিকে। বড় ভাই জহিরুল্লার কথামত আরাফাত ফ্ল্যাটও ভাড়া দিয়ে দেন।

মাসে প্রায় একলক্ষ টাকার মত ভাড়া ওঠে ভবনটিতে-ওগুলি দিয়ে আরাফাত তার বড় ভাই জহিরুল্লার অংশ পরিশোধ করে বাকিগুলি ব্যাংকে বা এনজিওতে ঋণ পরিশোধ করে কোনরকম জীবিকা ধারণ করে আসছেন।

কিন্তু জহিরুল্লা দুবাই ব্যবসা বানিজ্য বাদ দিয়ে এসে ভবনের ফ্ল্যাট ভাড়াটিয়াদের বলে দেন ছোট ভাই আরফাতুল্লাহকে ভাড়া না দেয়ার জন্য।

শুধু এখানে শেষ নয়-রাতারাতি এই জহিরুল্লাহ পাল্টিয়ে ফেলেন মা বাবার নামে দেয়া এজি টাওয়ারের নাম ফলকও,স্থানীয়রা জানান-প্রায় ৪০/৫০জন বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে সাইনবোর্ড সরিয়ে জহিরুল্লাহ তার নিজের নামেই সাইনবোর্ড বসিয়ে দেন।

তারা আরো বলেন- বিল্ডিং থেকে সুকৌশলে আপন ছোট ভাইকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টায় জহিরুল্লাহ মাতাল হয়ে গেছেন।

যা এই সভ্য সমাজে বিরল,অথচ!আমরা দেখেছি এই কাউন্সিলর আরাফাত রাতদিন না ঘুমিয়ে এই বিল্ডিং নির্মান কাজে ব্যস্ত থেকেছেন।

জহিরুল্লাহতো প্রবাসী তাই সে জানেনা যে মূলত কত কষ্টের ফসল এই ৫মতলা ভবন।

মূলত প্রবাস থেকে এসে ৫ম-তলা ভবন দেখে প্রবাসী জহিরুল্লার লোভ ঢুকে যাওয়াতেই আপন ছোট ভাই আরাফাতের বিরুদ্ধে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

স্থানীয়রা আরো জানান-এই জহিরুল্লাহ আপন ছোট ভাই আরাফাতকে শুধু এই ভবনের মালিকানা ছাড়ার জন্য একটি বানোয়াটি ধর্ষণের মামলায়ও আসামী করেন,যে মামলার কারণে কাউন্সিলর আরাফাতের যথেষ্ট মানসম্মানহানি হয়েছে তবে ওই মামলা প্রমাণ করতে পারেনি।

আমরা মনেকরি এই জহিরুল্লাহর শাস্তি হওয়া উচিৎ।

এদিকে ভোক্তভোগী কাউন্সিলর আরাফাত বলেন -আসলে আমার বলার কোন ভাষা নেই যেহেতু আমার আপন বড় ভাই।

আমি ধারদেনা করে আর ওনার টাকা নিয়েই সমান ভাবে ভবন করলাম।ওনি প্রবাসে ছিল আমি নিজেই দেশে থেকে সময় নষ্ট করে পরিশ্রমও দিলাম,ওই ভবনের তলার জায়গা আমার মাও পাবেন,আমরা মার নামেও কিনেছি, কিন্তু আমার মা আমাকে মৃত্যুর পূর্বে হেবা করে গেছেন,যেখানে আমি ৩ভাগের ২ভাগ পাওয়ার কথা- সেখানেই আমার ভাই জহিরুল্লাহ আমাকে টোলা ভবন থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন কুচক্রী মহলের সাথে যোগসাজশে নিয়মিত হয়রানি করে আসছেন।

আমার বিরুদ্ধে তিনি সিভিল মামলাও করেছেন, আমি সেই মামলায় রায়ও পেলাম -তিনি পুনরায় আপীল করলেও পরে মাননীয় সুপ্রিমকোর্ট আবার আমার পক্ষে রায়ও দিয়েছেন।

আমার ভবনে থাকা ভাড়াটিদের আমাকে ভাড়া না দিতে বলায়, ভাড়াটিয়ারা আর আমাকে ভাড়া না দেয়ায়- আমি লেবার কোর্টে মামলাও করেছি।

তিনি আরো বলেন-জহিরুল্লাহ আর আমার আরেক ভাই মাষ্টার সেলিমুল্লাহর চরিত্র ঠিক নেই আসলে।
তারা নারীলোভীও পরের সম্পদ হরণ করার নজরে থাকেন সবসময়।

জহিরুল্লাহ দুবাই থেকে শতশত শ্রমিকের টাকা আত্মসাৎ করে দেশে পালিয়ে আসছেন,এবং ওই দেশে বিয়েও করেছেন আগের বউ দেশে রেখে।

সেই ভিনদেশের দেশের বউ বাচ্চারা কত আকুতি করে জহিরুল্লাহকে কল করেন,কিন্ত এতেও তার মন গলেনা,সে খুবই স্বার্থপর লোক।

আমার আরেক ভাই মাষ্টার সেলিমুল্লাহও তার দলের অনুসারী, নিজের বিয়ে করা বউকে দিচ্ছেনা স্বামীর স্বীকৃতি, তার জন্ম দেয়া একটি মেয়েও আছে তাকেও দিচ্ছেনা পিতৃ পরিচয়।

এখন মাষ্টার সেলিমুল্লাহর কুপরামর্শেই মূলত জহিরুল্লাহ পথ চলেছেন। তাই আমার এত কষ্ট আর সাধনার ভবনটি একাই খেয়ে ফেলার ষড়যন্ত্রে বিভোর তারা।

আমি এই প্রভাবশালীও দুষ্টচরিত্রের জহিরুল্লাহ থেকে কোনরকম প্রানে বেঁচে খেয়েপড়ে বেঁচে থাকতে চাই।

জহিরুল্লাহ আর মাষ্টার সেলিমুল্লাহ বিভিন্নমাধ্যমে আমাকে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ পোষ্টও দিচ্ছেন,এতে আমি খুব শংকায় আছি।আমি প্রশাসনের উচ্চমহল থেকে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করি।এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাউন্সিলর আরাফাতুল্লাহর সম্মানহানির বিষয়ে সাতকানিয়া আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট শাহাদাত হোসেন হিরু বলেন-আমি ইতিমধ্যে গনমাধ্যমে প্রতিবাদ পাঠিয়েছি কুরুচিপূর্ণ পোষ্টের বিষয়ে,আমরা এই বিষয়ে ডিজিটাল আইনে মামলাও করব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিকার কাউন্সিল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ