গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করতে সরকারের আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী নিষ্ঠুর নতুন খেলায় মেতেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাংবিধানিক অধিকার সভা-সমাবেশে হামলা করে গুলি চালিয়ে নেতাকর্মীদের হত্যার পাশাপাশি এখন শর্টগানের গুলি চালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের চোখ অন্ধ করে দেয়া হচ্ছে, পঙ্গু করে দেয়া হচ্ছে।
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভোলায় বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে ছাত্রদল নেতা নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী মো. শাওন প্রধানকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে ঐসব স্থানসহ নেত্রকোণা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, বরগুনা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, ঝালকাঠিতে পুলিশ শর্টগানের গুলি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীসহ ছাত্রদল, যুবদলের কর্মীদের শরীর ও চোখ-মুখ ঝাঁজরা করে দিয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। ইতোমধ্যে অনেকে চোখ হারিয়েছে, পা হারিয়েছে, হাত হারিয়েছে কিংবা অসংখ্য গুলি শরীরে নিয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে। গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পর শর্টগানের গুলি দিয়ে নেতাকর্মীদের পঙ্গু করে দেয়ার আরেক নতুন নিষ্ঠর নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, পুলিশকে ব্যবহার করে এটি একটি নতুন নিপীড়ণের পথ অবলম্বন করা হয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরেকটি নতুন ফর্মূলা। আমি এসব প্রতিহিংসামূলক নিষ্ঠুর ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এধরণের মরণঘাতি কর্মসূচি থেকে সরে আসার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, নিপীড়ক শেখ হাসিনার সরকার ইউটিউবে নানা চ্যানেল খুলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমিসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নামে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে কন্ঠ নকল করে বিভিন্ন ধরণের বানোয়াট ফোনালাপ, কিসসা-কাহিনী বানিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে-যার সাথে সত্যতার কোন বালাই নেই। সরকার বিএনপি’র বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য ৫ লাখ অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট নিয়োগ দিয়েছে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তারা সবসময় বিএনপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালাতে লিপ্ত রয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যা, কাল্পনিক গল্প বানিয়ে কাটপিস তৈরী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে বা ছাড়া হচ্ছে।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষনেতা বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে বিদেশিদের সহায়তায় টিকে থাকা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এখন তারা শত শত কোটি টাকা খরচ করে ইউটিউব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে লাগামহীন মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই মিথ্যচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। কারণ সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। দেশের মানুষ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পাচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার সকল ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের জীবন আর চলছেই না। দেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা লুট করে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। মেগা প্রকল্প ও কুইকরেন্টালের নামে লুটপাটের ভর্তুকি এখন সাধারণ মানুষের ঘাড়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটে কৃষিসহ মানুষের স্বাভাবিক জৗবন-যাপন এখন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। সত্য কথা বললেই নামে মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের খড়গ। সারাদেশে আবারো বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকেমীদের নামে মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক চলছে। এ অবস্থায় মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরাতেই বিএনপি’র শীর্ষ নেতাদের নামে বিভিন্ন অপপ্রচারে মেতে উঠেছে সরকার। আমি সরকারের এসব অসদাচরণ ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় বিএনপি'র সভাপতি ও সম্পাদক সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন,সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।