Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের সব দেশ ও সংস্থা আমাদের পাশে রয়েছে

| প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে পৃথিবীর প্রায় সব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। এ ইস্যুতে দেশটির বিভিন্ন লেভেলে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে অং সান সুচির সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটি অত্যন্ত সংবেদনশীল পর্যায়ে রয়েছে। ম্যাডাম সুচি রোহিঙ্গা ইস্যুটি সুরাহার ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আর কঠোর টহলের পরও যেসব মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে, মানবিক কারণে আমাদের যেটুকু করার তা করছি। খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা তাদের প্রদান করা হচ্ছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় এমপি আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহল ছাড়াও আশিয়ানভূক্ত কয়েকটি দেশও বিষয়টি সুরাহার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, অং সান সুচির সঙ্গে আলোচনায় তিনি যেসব কথা বলেছেন তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। তিনিও চেষ্টা করছেন, তার নিজেরও সদিচ্ছা রয়েছে।

চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভারতের
সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়বে না
মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরে বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সকল দেশের সাথে বন্ধুত্ব, কারো প্রতি বৈরিতা নয়’। বাংলাদেশ বরাবরই প্রতিবেশি দেশসহ প্রতিটি রাষ্ট্রের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে বিশ্বাসী। আর প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রনীতির প্রাধিকার। ভারতের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটবে না। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ এবং ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানগত বাস্তবতার নিরিখে রচিত। অপরদিকে, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অর্থনৈতিক, প্রযুক্তি ও প্রকল্প সহযোগিতা এবং বাণিজ্য অর্থায়নসহ উন্নয়ন রাজনীতির বহুধাপ বিশিষ্ট ধারায় প্রবাহিত। ভারত এবং চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তাই স্বতন্ত্র, স্বকীয় এবং উন্নয়নের পরিভাষায় একে অপরের পরিপূরক। এ প্রেক্ষাপটে চীনের প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক সফরের কোনো নেতিবাচক প্রক্রিয়া কোথাও পড়বে না।
আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ভৌগলিক নৈকট্য, ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং অভিন্ন মূল্যবোধের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক কাঠামোর আওতায় পারস্পরিকভাবে লাভজনক সহযোগিতার সম্পর্ক তৈরিতে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। দক্ষিণ এশিয়ার সমন্বিত ও সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আমাদের মূল লক্ষ্য। এটা বাস্তবায়নের উদ্দেশে এ অঞ্চলের দেশসমূহের সঙ্গে ফরেন অফিস কনসালটেশন এর মত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যা সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। ভারত, নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে আমরা উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কার্যক্রম (বিবিআইএন) শুরু করেছি। গতানুগতিক ক্ষেত্র ছাড়াও নতুন নতুন এবং নন ট্রেডিশনাল ক্ষেত্রে সহযোগিতার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। যা মাত্র এক দশক আগেও অচিন্তনীয় ছিল।
 
বিদেশের কারাগারে আটক ১০ হাজার বাংলাদেশি
মো. নুরুল ইসলাম ওমরের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা অপরাধে জড়িয়ে ৯ হাজার ৯৬৭ জন বাংলাদেশি কারাগারে রয়েছেন। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বিভিন্ন দেশে অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয়ে আটকাধীন ও বিচারাধীন বাংলাদেশির সংখ্যা ৯ হাজার ৯৬৭ জন। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায় ২ হাজার ৪৬৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এক হাজার ৯৮ জন, ভারতে ২ হাজার ৬৯৭ জন, সৌদি আরবে ৭০৩ জন, যুক্তরাজ্যে ২১৮ জন এবং মিয়ানমারে ৫৭ জন উল্লেখ যোগ্য।
শান্তিরক্ষা মিশন থেকে প্রতিবছর ৪৩৭ কোটি টাকা আয়
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০০১ থেকে আগস্ট ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম ভাড়া দিয়ে বার্ষিক গড়ে ৪৩৭ কোটি ৫২ লাখ ৯৫ হাজার ২৬৪ টাকা আয় করেছে। সংসদে মন্ত্রীর দেয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের বছরওয়ারী আয়ের হিসাব হলো- ২০০১ সালে ১৬ কোটি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার ৫৮৫ টাকা, ২০০২ সালে ১০৮ কোটি ৫০ লাখ ৭ হাজার ৩৬১ টাকা, ২০০৩ সালে ২৩০ কোটি ৮২ লাখ ১৬ হাজার ৬১৬ টাকা, ২০০৪ সালে ২৭১ কোটি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫০৫ টাকা, ২০০৫ সালে ২৬৫ কোটি ৮৫ লাখ ৪৩ হাজার ২০৬ টাকা, ২০০৬ সালে ৫৯৮ কোটি ৭৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৪৮ টাকা, ২০০৭ সালে ৬১৭ কোটি ৩১ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৭ টাকা, ২০০৮ সালে ৩৫০ কোটি ৯৮ লাখ ১৭ হাজার ৮২৭ টাকা, ২০০৯ সালে ২৪১ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ১৭ টাকা, ২০১০ সালে ৪০১ কোটি ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৭১৬ টাকা, ২০১১ সালে ৩৭১ কোটি ৭ লাখ ৭৪ হাজার ১৯০ টাকা, ২০১২ সালে ৭৭৯ কোটি ৬৭ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৩ টাকা, ২০১৩ সালে ৭৫৪ কোটি ৬৮ লাখ ৩২ হাজার ৯৩২ টাকা, ২০১৪ সালে ৬৩৭ কোটি ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার ১৩২ টাকা, ২০১৫ সালে ৬৪৪ কোটি ২৬ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৮ টাকা, আগস্ট ২০১৬ পর্যন্ত ৫৬৬ কোটি ৩৯ লাখ ৮৯ হাজার ৯০৩ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ