Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্ডার কিলিং বন্ধে প্রাণঘাতি মরণাস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে না -সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনীদের অবস্থান চিহ্নিত করে দেশে ফিরিয়ে আনতে গঠিত টাস্কফোর্স কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাজাপ্রাপ্ত খুনীদের ছবিসহ তথ্য পাঠিয়ে তাদের অবস্থান চিহ্নিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গতকাল সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দেশে ফিরিয়ে এনে দন্ড কার্যকর করতে আইনমন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টাস্কফোর্স দন্ডপ্রাপ্ত খুনীদের অবস্থান চিহ্নিত করা এবং দেশের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে বর্তমান সরকার নতুনভাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর উক্ত টাস্কফোর্সটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত টাস্কফোর্স একাধিক সভায় মিলিত হয়ে জাতির পিতার খুনীদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সংরক্ষিত আসনের এমপি মাহজাবিন খালেদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ভারতীয় সরকার সীমান্তে হত্যাকান্ড বন্ধ করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইতিমধ্যে বিএসএফ প্রাণঘাতি মরণাস্ত্র ব্যবহারের পরিবর্তে অপ্রাণঘাতি (নন-লেথাল উইপন) ব্যবহার করছে।   
মন্ত্রী বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সর্বদা সীমান্ত রক্ষা ও সীমান্তে বসবাসকারী জনসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছে। সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা বন্ধের ব্যাপারে বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সর্বোচ্চ নের্তৃত্ব পযায়ে আলোচিত হয়েছে। গত ১১ থেকে ১৬ মে ঢাকায় এবং ৩০ সেপ্টেম্বর হতে ৫ অক্টোবর ভারতের নয়াদিল্লীতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এক বছরে সাগর থেকে দেড় হাজার বিদেশগামী আটক
মামুনুর রশীদ কিরণ এমপির প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সমুদ্রপথে অবৈধভাবে বিদেশ গমনকালে ২০১৫ সালে ২৩০ জন এবং এ পর্যন্ত সর্বমোট ১ হাজার ৭৩৬ জন বিদেশগামী নাগরিককে সাগর থেকে আটক করেছে। তিনি বলেন, মানব পাচার রোধকল্পে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। ২০১৬ সালে কোস্টগার্ড এ পর্যন্ত ২০ হাজার ৫০০টি অভিযান পরিচালনা করেছে। তাছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করেছে।
আব্দুল মতিন এমপি প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, সাগরবক্ষে জেলে সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা বিধানে গভীর সমুদ্রে চলাচল উপযোগী অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল ইতালি হতে ক্রয় করা হয়েছে, যার মধ্যে ২টি গত ২ নভেম্বর কোস্টগার্ড বহরে সংযোজিত হয়েছে। অপর দুটি জাহাজ আগামী বছর জুলাইয়ের মধ্যে কোস্টগার্ড বহরে সংযোজিত হবে।
নারী পুলিশ ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ
জেবুন্নেছা আফরোজে এমপির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ পুলিশের মোট মঞ্জুরিকৃত জনবল ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮৩ জন। বর্তমানে নারী পুলিশের শতকরা হার ৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এম এ আউয়ালের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, প্রয়োজনের তুলনায় দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা উন্নয়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী ৫০ হাজার জনবল বৃদ্ধির নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ৫০ হাজার পদ সৃজনের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন ইউনিটের জন্য ৪০ হাজার ৯০৬টি নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে। অবশিষ্ট পদ সৃজনের কাযক্রম বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে/দপ্তরে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
নারী মাদকাসক্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে
সামশুল হক চৌধুরী এমপির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে নারী মাদকাসক্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি জানান, দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা নির্ণয়ের বিষয়ে এ পর্যন্ত কোন জরিপকার্য সম্পন্ন হয়নি। এ বিষয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দগুলোতে চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের মধ্যে নারী মাদকাসক্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে মাদকাসক্তের জন্য ১৮২টি চিকিৎসা ও পূণবার্সন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
সরকার দলীয় নজরুল ইসলাম বাবু এমপির অপর প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের চোরাকারবারীদেও আটক এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য, গরু ও অন্যান্য চোরাকারবারীদের তালিকা বিজিবি ইউনিট কর্তৃক সংরক্ষণ এবং তা হালনাগাদ করা হয়। বাংলাদেশে চোরাকারবারের সাথে জড়িত গডফাদারদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ