পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উচ্চ রক্তচাপ ও ভার্টিগো (ঝিমুনি) জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের প্রতিনিধি দলের তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেয়া হয়। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা এ তথ্য জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ড. মোমেনের উচ্চ রক্তচাপ ও ভার্টিগো (ঝিমুনি) জনিত অসুখ বেড়ে গেছে। তবে সেই পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্ট আজ দেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের প্রতিনিধি দলের নামে তালিকায় শেখ হাসিনার পরেই ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেনের নাম। ৪ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে জানানো হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরসঙ্গী হচ্ছেন। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর দেখা গেল সফরসঙ্গীর তালিকা থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় অসুস্থতার কারণে ড. এ কে আব্দুল মোমেন দিল্লি সফরে যেতে পারেননি। কিন্তু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বিস্তর লেখালেখি ও সমালোচনা শুরু হয়। নেপথ্যের রহস্য জানার চেষ্টা করা হয়।
নেটিজেনদের বেশির ভাগের বক্তব্য ‘ফের কোনো বেফাঁস কথা বলতে পারেন সেই আশঙ্কা থেকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর তালিকা থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে’। কেউ বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সম্প্রতি সময়ের বক্তব্যে দিল্লি বিব্রত, তাদের পক্ষ থেকে বিতর্ক এড়াতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সফরসঙ্গী হিসেবে না রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ তাদের আশঙ্কা ফের ডা. মোমেন বেফাঁস কথা বলতে পারেন।
অসুস্থতার কথা প্রচার করা হলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন অফিস করেছেন। এ নিয়ে ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে বিতর্ক শুরু হলে একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী বলেন, ‘অসুস্থতা নিয়ে অফিস করা যায়, কিন্তু এতো হাই-লেভের (উচ্চ পর্যায়ের) ভিজিট করা কঠিন।’
অতপর গণমাধ্যমে খবর বের হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেক-আপের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গেছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ড. এ কে আব্দুল মোমেনের উচ্চ রক্তচাপ ও ভার্টিগো (ঝিমুনি) জনিত অসুখ বেড়ে গেছে।
গতকাল পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিকিৎসা নিতে বিএসএমএমইউ›র কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. ফজলুর রহমানের চেম্বারে যান। হার্ট ফেইলর ক্লিনিকের প্রধান প্রফেসর ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ এবং এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. আবুল হাসনাত এসময় উপস্থিত ছিলেন। তারা মন্ত্রীর শারীরিক চেক-আপ করেন। চিকিৎসকের পরামর্শে মন্ত্রীর ইকো-কার্ডিওগ্রাম এবং রক্ত পরীক্ষা করা হয়। আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) এসব পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে।
মন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. শেখ ফয়েজ আহমেদ জানান, রোববার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় অসুস্থবোধ করলে আমি তাকে দেখতে যাই। ওই সময় তার রক্তচাপ কিছুটা অস্বাভাবিক ছিল এবং তার ভার্টিগো হচ্ছিল। তিনি জার্নি করার মতো অবস্থায় ছিলেন না। এর আগে গত মার্চ মাসে তুরস্ক থেকে ঢাকা আসার পথে মন্ত্রী মহোদয় একই সমস্যার কারণে প্লেনে অজ্ঞান হয়ে যান।
চিকিৎসক যাই বলুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা এসব বিশ্বাস করছেন না। কারণ নানা বিতর্কের জন্ম দেয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে দিল্লি সফরের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
১৯ আগস্ট চট্টগ্রামে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে হবে’। এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল বিতর্ক উঠে। প্রশ্ন তোলা হয় আওয়ামী লীগ ভারতের সহয়াতায় ২০১৪ ও ২০১৮ সালে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। শুধু তাই নয় ওই বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার কারণে ভারত সুবিদা পাচ্ছে। ভারতের তিন লাখ কর্ম বাংলাশে কার করছে। প্রতিবছর বাংলাদেশের ২৮ লাখ মানুষ ভারত ভ্রমণ করে। ভারতের উত্তর-পূর্ণাঞ্চলে সীমান্তে প্রহরায় ভারতের খবর কমে গেছে বাংলাদেশের কারণে।’ এ ছাড়াও আরো কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। শুধু তাই নয় এ নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠলে পরের দিন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যা বলেছি বুঝেশুনে বলেছি’। এ নিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রধান অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন্মাষ্টমীতে এই বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের হিন্দুদের ক্ষতি করেছেন। তিনি এ দেশের মানুষের কাছে আমাদের ভারতের দালাল হিসেবে চিহ্নিত করে তুলেছেন। ’ অবশ্য পরের দিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দাবি করা হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বক্তব্য গণমাধ্যমে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ‘ভারতকে বলেছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তা করতে হবে’ এমন বক্তব্য ড. এ কে আবদুল মোমেন দেননি। এর কয়েকদিন আগে সিলেটে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ‘বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে’ বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি প্রথম দিন নিজের অবস্থানে অটল থাকলেও দু’দিন পর ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে বলেন, ‘এমন কথা বলিনি। সাংবাদিকরা আমাকে খ্যায়া দিলেন’। শুধু এই দুটি বক্তব্যই নয়, এর আগেও এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেনা, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। এ সম্পর্কের মধ্যে মান অভিমান হবে তবে তা কেটে যাবে। এ ছাড়াও ‘প্রবাসীরা দেশে এলে নবাবজাদা হয়ে যায়’সহ অসংখ্য বক্তব্য দিয়ে তিনি বিতর্কের মুখে পড়েন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে ড. মোমেনের নাম সফর সূচি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এটা বিব্রতকর হওয়ায় অসুস্থতার বিষয়টি সামনে আনা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ৪ দিনের সফরে নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনেরও ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি সফরে অংশ নেননি। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা ত্যাগ করার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিলের বিষয়টি প্রকাশ পায়। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।