Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুনদের প্রমাণ করতে হবে সংসদেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:১০ পিএম

আগামী বছরের শেষের দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। নির্বাচনী উত্তাপকে ছাড়িয়ে অবশ্য দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তির মধ্যকার আসন্ন সংঘাতকে আমলে নিচ্ছে দেশবাসী----এমন মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। যদিও টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থেকে সত্যিকার অর্থেই আওয়ামী লীগের শক্ত প্রতিপক্ষ হিসাবে বিএনপি আগের মত আছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

 

এই প্রসঙ্গেই সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা লিখেছেন, "রাজনৈতিক দল হিসেবে ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। জন্মের পর থেকে এত দীর্ঘদিন কখনো ক্ষমতার বাইরে থাকেনি দলটি। ক্ষমতার ঘরে জন্ম নেওয়া দলের জন্য, বিশেষ করে এর নেতাদের জন্য এটি এক বড় পরীক্ষা। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, মানুষ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির কাছে কর্মসূচি চায়। বিএনপির সমস্যা হয়েছে এখানেই। এই ১৫ বছরের বেশিরভাগ সময় মানুষের জন্য বিএনপির কোনো কর্মসূচি ছিল না।"


জনস্বার্থ উদ্ধারের পথে না হাটতে পারলে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনআস্থা কমে যায়, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সে কারণেই আগামী দিনগুলোতে বিএনপি কতটুকু আন্দোলনমুখী হয়ে বাজিমাৎ করতে পারবে, তা নিয়ে শংকা অনেকেরই।


প্রাসঙ্গিক বাস্তবতায় সাংবাদিক প্রভাষ আমিন লিখে বললেন, "বিএনপি আসলে উভয় সঙ্কটে পড়েছে। বিএনপি যখন প্রেসক্লাবের ঘরোয়া আসরে আন্দোলনের হুমকি দেয়, সরকারি দলের নেতারা তাদের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর হাসিঠাট্টা করেন। আর যখন মাঠে নামে, তখন মামলা-হামলায় পর্যদুস্ত করে মাঠছাড়া করতে চায়। বিএনপি এখন কী করবে? একটা গল্পে এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করি। এক পথিক এক ফসলের মাঠ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। সেটা দেখে কৃষক ছুটে এলেন, তার ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক এসে সেই পথিককে থামালেন। পথিক তখন ক্ষেতের মাঝামাঝি। বললেন, আমি কি পিছনের দিকে চলে আসবো? কৃষক বললেন, না। পথিক বললেন, তাহলে কি আমি সামনে চলে যাবো? কৃষক বললেন, না। পথিক পড়লেন বিপাকে, তাহলে আমি কী করবো? ফসলের ক্ষতির চিন্তায় ব্যাকুল কৃষক বললেন, তুমি কী-ও করতে পারবে না।"


শক্ত বিরোধী দল না থাকার কারণে তাই অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশে এখন আর রাজনীতি নেই।


নিউইয়র্ক প্রবাসী রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইউসুফ আলি বলছেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেন্দ্রিক রাজনীতিই কাম্য। আওয়ামী লীগ সরকারে থেকে তা করতে পারছে। অন্যরা পিছিয়ে যাচ্ছে। জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নত চিন্তা তারা যে করছে, তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বিএনপির মত দলগুলো। একটি রাজনৈতিক দলের ওপর যত দমন -পীড়নের কৌশলই নেয়া হোক না কেন, সাধারণ মানুষের তখনই অংশগ্রহণ বা সমর্থন মিলবে, যখন তাঁদের জন্য রাজনীতি করতে পারা যায়। বিএনপি তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাঁরা উঠে দাঁড়াতে পারছে না। এখানে মামলা বা সরকারের অন্যান্য কৌশল কিছু না।"


এদিকে রাজনীতি করে দেশে নতুন নতুন মুখ যে আসবে, সেখানেও তেমন সংস্কৃতি দৃশ্যমান হচ্ছে না। একজন জনপ্রতিনিধির মেধা প্রমাণিত হয় সাধারণত জাতীয় সংসদে তাঁর বক্তব্য পেশের মধ্য দিয়ে। তখন বোঝা যায় যে, সে দেশ সম্পর্কে কতটুকু হোমওয়ার্ক করতে পেরেছে। সে পরিণত রাজনৈতিক সত্তা কিনা, তা বোঝা যায়, যখন সে সংসদে যেয়ে কথা বলে।


এদিকে একজন সংসদ সদস্যের কাজ হল, আইন প্রণয়ন করা। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় আঞ্চলিক উন্নয়নে এমপিদের সময় ব্যয় করার কদর্য দিক রয়েছে। যার দরুন মেধাবী রাজনীতিক যাচাই করার সুযোগও কম। এছাড়া সংসদে সব দলের প্রতিনিধিত্বমুলক অংশগ্রহণ না থাকার দরুনও বাংলাদেশের নেতৃত্বের একটা সংকট যাচ্ছে।


এর মধ্যেও মেধাবী ও উৎসাহী রাজনীতিক তালিকা সারাদেশে কম নয়। এর মধ্যে প্রায় সকলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে মনোনয়ন নিয়ে সংসদে যেয়ে নিজেদের যে যোগ্যতা আছে তা প্রমাণ করতে হবে। এই ধারাবাহিকতায় রাজধানী ঢাকায় রয়েছে প্রায় এক ডজন নেতা-নেত্রীর নাম। এরমধ্যে যেমন, আওয়ামী লীগের আদম তমিজী হক ও বিএনপির শেখ রবিউল আলম সংসদ সদস্য হতে পারলে মেধাবীদের অংশগ্রহণ বাড়লো বলে মনে করার সুযোগও আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ