Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিবির সন্দেহে ইবিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক দুই শিক্ষার্থীকে মারধর

ইবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:৩৪ পিএম

শিবির সন্দেহে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা দেড়টার দিকে কলা অনুষদ ভবনের করিডরে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জামান ও দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী একরাম।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অনুষদ ভবনে গিয়ে দুইজন শিক্ষার্থীকে শিবির সন্দেহে মারধর করেন। পরে ওই দুই শিক্ষার্থী দৌড়ে পালিয়ে গেলে নেতাকর্মীরা অনুষদ ভবনের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। এসময় ভবনে অবস্থানরত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে অনুষদ ভবন থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ করে নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের অনেকের হাতে লাঠি দেখা যায়। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি কামরুল হাসান অনিক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খাঁনসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দাবি, তারা শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত। ক্যাম্পাসে মিটিং করছিল এমন খবর পেয়ে তাদেরকে ধাওয়া দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একরাম বলেন, অনুষদ ভবনের ৪২৭ নম্বর রুম থেকে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে আমরা বন্ধুরা মিলে গল্প করছিলাম। এসময় কয়েকজন এসে আমাকে ভবনের নিচে নিয়ে গিয়ে আমার বাসা কই, থাকি কোথায় ইত্যাদি অনেক প্রশ্ন করতে থাকে। তারা মূলত আমার এক বন্ধুকে খুঁজতেছিলো। তাকে না পেয়ে উনারা আমার কাছ থেকে ওই বন্ধুর ফোন নাম্বার চায়। আমার কাছে নাম্বার না থাকায় উনারা আমার সাথে খুব কর্কশ ভাষায় কথা বলে এবং এক পর্যায়ে মারধর করে। তারা কেন এমনটি করেছে বা কি কারণে করেছে এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জামান বলেন, ক্লাস শেষে সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে আসলে কয়েকজন আমাকে ঘিরে ধরে অনুষদ ভবনের করিডরে নিয়ে যায়। এসময় তারা আমার নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করে আমি শিবির করি কি না জানতে চায়। আমি শিবির করি না বললে তারা আমাকে বাসায় ফোন দিতে বলে। আমার ফোনে ব্যালেন্স না থাকায় আমি ফোন দিতে পারি নি। এতে তারা আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করে। শেষে তারা আমকে দৌড়ে চলে যেতে বলে। পড়ে দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসি।

এবিষয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন , আমাদের কাছে একটা তথ্য ছিলো অনুষদ ভবনে শিবিরের এক পোস্টেড নেতা ক্যাম্পাস অতিশীল করার জন্য এসেছে । তখন আমরা সেখানে গেলে সে পালিয়ে যায় । পরে আমরা তার দুইজন সহযোগীকে ধরি । আমাদের কাছে তথ্য ছিলো যে তার কাছে অস্ত্র আছে কিন্তু পরে চেক করে কিছু পাইনি । আর ছেলেপেলে কন্ট্রোল করা যায়নি ফলে তারা একটু মারধর করেছে তাদের ।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন , সম্ভবত অনুষদ ভবনে মিটিং ছিলো এবং তাদের কোন পরিকল্পনা থাকতে পারে । তাই নেতাকর্মীরা তাদের খাওয়া করেছে । কিন্তু তাদের মারধর করেছে বলে আমার জানা নেই । ভুক্তভোগীকে শিবির নেতা দাবি করে তিনি বলেন এ বিষয়ে ডিএসবি নুরুজ্জামানের কাছে তথ্য আছে ।

তবে এবিষয়ে ডিএসবি নুরুজ্জামান বলেন , আমার কাছে এমন কোন তথ্য নেই ।

এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড . জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কোন সাড়া মেলেনি ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ