গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। তার এই সফর নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলোতে আজ শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, বাংলাদেশে আগামী বছর গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন। এ নির্বাচনের আগেই ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ভিতরে প্রায়ই ভারতপন্থি হিসেবে সমালোচিত হতে হয় তাকে। এর আগে বাংলাদেশ পুনরায় তিস্তার পানিবণ্টনের দাবি তুললেও ভারতে সরকারি বিবৃতি এ বিষয়ে নীরব। ঢাকার সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুরো ইস্যুর মধ্যে আছে দুই দেশের মধ্যে বিস্তৃত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বিষয়ক চুক্তি থেকে মুলতবি হয়ে থাকা ইস্যুগুলোর সমাধান। এর মধ্যে আছে অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টনের বিষয়।
ভারতের অনলাইন দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত ‘হাসিনা টু ভিজিট, বাংলা ওয়াচেস’- শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চারদিনের জন্য ভারত সফরে যাচ্ছেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত প্রতিবেশীর অন্যতম দেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য ক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় মিডিয়ার কাছে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় পক্ষ উচ্চ পর্যায়ে স্থিতিশীল যোগাযোগ রক্ষা করছে। এর মধ্যে আছে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। ভারতে অবস্থানকালে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুরমু, ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকর সহ অন্য নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাতের শিডিউল আছে শেখ হাসিনার। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি’তে এক মিটিংয়ে তার ভাষণ দেয়ার কথা আছে।
দ্য হিন্দুর রিপোর্টে যা বলা হয়েছে :
ভারতের অনলাইন দ্য হিন্দুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সাংবাদিক কল্লোল ভট্টাচার্য্য লিখেছেন, ইতিবাচক পদক্ষেপ সত্ত্বেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান চাপ মোকাবিলা করছে বাংলাদেশ। এ অবস্থা নির্বাচনমুখী আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও শেখ হাসিনার ভারত সফরে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান রয়েছে উচ্চ পর্যায়ের এজেন্ডায়। ৫ বছর ধরে চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অপর্যাপ্ত কূটনৈতিক সমর্থনের জন্য হতাশা প্রকাশ করেছে ঢাকা। কারণ, এখনও রোহিঙ্গাদেরকে রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবাসন করতে প্রতিশ্রুতি দেয়নি মিয়ানমার। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তাইওয়ান উত্তেজনার বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। কিন্তু গত মাসে তারা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’কে স্বাগত জানিয়েছে, যখন ‘ওয়ান চায়না’- পলিসি অনুসরণ করার জন্য বেইজিংয়ের প্রশংসা পেয়েছে ঢাকা।
‘বাংলাদেশ প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা টু ভিজিট ইন্ডিয়া নেক্সট উইক’- শীর্ষক প্রতিবেদনে তিনি আরও লিখেছেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেছে যে, আগামী সপ্তাহে ভারতে সরকারি সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতে অবস্থানকালে তিনি আজমীর শরীফে প্রার্থনা করবেন। মুজিব স্কলারশিপ দেবেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য নিহত হয়েছেন বা গুরুতর জখম হয়েছেন, তাদের বংশধরদের জন্য এটা হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় পক্ষ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় সহ উচ্চ পর্যায়ে স্থিতিশীল যোগাযোগ বজায় রেখেছে। শক্তিশালী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন, পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে বহুমুখী এই সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। ঢাকার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী হবেন বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব এবং বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি প্রতিনিধিদল। এই সফরের আগেই উভয়পক্ষ ২৫শে আগস্ট যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক করেছে।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তিন বছরের ব্যবধানে এই সফর হতে যাচ্ছে শেখ হাসিনার। তিনি সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অধিবেশনে যোগ দিতে ভারত সফরে গিয়েছিলেন। তার এই সফরে বিভিন্ন সমঝোতা চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে ঢাকার ঘোষণায় ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মুক্ত হবে এই সফরে। তাই এ সফর বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আগামী বছর নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা শক্ত ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছেন। তিনি গত মাসে জন্মাষ্টমীর সময় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় তিনি দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করেছেন। ভার্চ্যুয়াল এক ইভেন্টে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বলেছেন, আমরা চাই সব ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ সমান অধিকার। আপনারা এই দেশের নাগরিক। আপনাদেরও সমান অধিকার আছে, যেমন অধিকার আছে আমার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।