Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোলাপি পদ্মের টানে প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় ভুতিয়ার বিলে

পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্পট হতে পারে

ডিএম রেজা সোহাগ, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৪ এএম

বিশাল বিলের মাঝে ফুটন্ত অজস্র গোলাপি পদ্ম দেখতেই খুলনার তেরখাদায় ভুতিয়ার বিলে প্রতিদিন ভিড় জমে। মেঘলা আকাশ, চারদিক কিছুটা অন্ধকার এবং মাঝে মধ্যে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। দেখলেই মন জুড়িয়ে যায়। নৈসর্গিক অপরূপ এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ভিড় করছেন পদ্মফুলের রাজ্যে।
ছোট ছোট ডিঙি নৌকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন বিলের মাঝে, হাত দিয়ে স্পর্শ সুখ নিচ্ছেন পদ্মপাতা ও ফুলের। যেদিকে দু’চোখ যায়, শুধু পদ্ম আর পদ্ম। বিলটির নামই এখন হয়ে গেছে পদ্মবিল। ডিঙি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায় ঘণ্টা প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। বর্ষায় বিলে পানি থৈ থৈ করে। আয়তনও বৃদ্ধি পায়। বিলের মাঝে মাঝে রয়েছে উঁচু স্থান। ওইসব স্থানে নৌকা থেকে নেমে বিশ্রাম নেয়া যায়।

গত কয়েক বছরে প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে পদ্মবিলের সৌন্দর্য্য দেখানোর জন্য নৌকার মাঝি হয়ে গেছেন তেরখাদা এলাকার অনেকেই।
এমনই একজন জামাল উদ্দিন জানান, বছরের এই সময়টা ৩/৪ মাস বিলে পদ্ম ফুল থাকে। তখন প্রতিদিন একেকটি নৌকার মাঝির আয় হয় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা। মাঝি রয়েছেন ৩০ থেকে ৩৫ জন। বছরের অন্য সময়ে নৌকাগুলো পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই বছর লবণাক্ততার কারণে বিলে সেভাবে পদ্ম ফোঁটেনি। এবার ফুটেছে এবং প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দূরদূরান্ত থেকে আসছেন। ভাল খাবার হোটেল বা রেস্টুরেন্ট না থাকায় অনেকেই হতাশ হন।
বিলে যেসব নৌকা চলাচল করে সেগুলো ছোট। বিলের অনেক স্থানে গভীরতা বেশি। যারা ঘুরতে আসেন, তাদের নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট বা এ জাতীয় কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার অকারণে মানুষ পদ্ম ছিড়ে এটা সেটা ফেলে পানি নোংরা করেন। সরকারিভাবে বিলটির সৌন্দর্য্য রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়া হলে ভাল হত বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

তেরখাদা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, ভুতিয়ার বিলের এলাকা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর। বিলের অবস্থান তেরখাদা উপজেলার তেরখাদা সদর, সাচিয়াদহ ও ছাগলাদহ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে। লবণাক্ততার কারণে বিলে কোনো ফসল উৎপাদন হয় না। প্রায় ১০০ হেক্টরের মত জমিতে পদ্ম ফুল হয়ে থাকে।
এছাড়া পুরো বিল জুড়ে রয়েছে হোগলা, শেওলা আর আগাছা। দেশি মাছের ভাÐার পদ্মবিল। কৈ, শিং, মাগুরের মজুদ এখানে। আছে শোল, গজার, রয়না, খলিশা, পুঁটিসহ দেশি অনেক প্রজাতির মাছ। শীতে পানি কমতেই জাল, পোলো নিয়ে মাছ ধরতে নামেন অনেকেই। চারদিকে তখন উৎসবের আনন্দ বিরাজ করে।

তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ইনকিলাবকে জানান, এবার বিলে প্রচুর পদ্ম ফুটেছে। প্রকৃতিপ্রেমীরা আসছেন। তাদের নিরাপত্তায় প্রশাসন সজাগ রয়েছে। তবে অনেকেই এসে অকারণে পদ্ম ছিঁড়ে নিয়ে যান। খাবারের প্যাকেট পানির বোতল বিলে ফেলেন। তাদের নিষেধ করার পরও এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। তাই সবার প্রতি অনুরোধ বিলটিকে দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করুন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পর্যটকদ

১৬ জানুয়ারি, ২০২২
২৬ নভেম্বর, ২০২১
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ