মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বছরের শুরুতে বেড়েছে তেলের দাম, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর মার্চ মাসে ব্যারেল প্রতি ১৪৭ ডলারের সর্বকালের সর্বোচ্চের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে তাদের আর্থিক নীতি কঠোর করেছে। তারপর থেকে এর মান প্রায় ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কেউ কেউ আশা করেন, মুদ্রাস্ফীতি শীর্ষে পৌঁছেছে এবং বৈশ্বিক বাজারের মন্থরতা আর্থিক কঠোরতায় চালিত কম চাহিদার দিকে পরিচালিত করবে এর ফলস্বরূপ তেলের দাম কমে আসবে। তবে, এটি খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার কারণ নাও হতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের জ্বালানির দাম আরো বৃদ্ধি হবে এ জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত।
কারণটা এখানে : চীনে কোভিড-১৯ লকডাউনের কারণে বিশ্বব্যাপী চাহিদা বর্তমানে কম। প্রথমত, চীন বাকি বিশ্বের জন্য একটি শ্বাস প্রদান করছে, এমন লক্ষণ রয়েছে যে, দেশটি লকডাউন শিথিল করতে পারে, বিশেষত অক্টোবরে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নির্বাচনের পরে।
দ্বিতীয়ত, রাশিয়া-ইউক্রেন সঙ্কট আরো বাড়তে পারে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ছয় মাস হয়ে গেছে এবং যখন বাজারগুলো এতে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে তখন সঙ্কট আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ দেখায় যে, এটি শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক গোলাবারুদসমৃদ্ধ। ফলস্বরূপ, ইউরোপের জন্য শীতকাল খুব কঠিন হবে। রাশিয়া আক্রমণের আগে ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করায় মুদ্রাস্ফীতি এই অঞ্চলের জন্য একটি প্রধান সমস্যা হয়ে উঠবে। কেউ কেউ অনুমান করছেন যে, যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি ১৮ শতাংশে পৌছাবে এবং এর সুদের হার ৪ শতাংশে উঠবে। এছাড়াও, ইউক্রেনের জাপোরিঁিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে যে কোনো দুর্ঘটনা বিশ্বকে আরো বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত করতে পারে।
তৃতীয়ত, তাইওয়ানের পরিস্থিতি উপেক্ষা করা যায় না। দ্বীপের কাছে সামরিক মহড়া শুরু করে মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন। এটি বিশ্ব রাজনীতির জন্য আরেকটি উত্তেজনার বিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
মার্কিন বিলিয়নেয়ার বিনিয়োগকারী রে ডালিও, যিনি বিশ্বের বৃহত্তম হেজ ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, এই ঝুঁকির ওপর একটি অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ নিবন্ধ লিখেছেন। ডালিও যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে চীনের অংশ রাশিয়ার চেয়ে সাত গুণ বেশি। ব্লুমবার্গের মতে, গত বছর বৈশ্বিক কন্টেইনার বহরের অর্ধেক তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে গেছে।
চীনা সামরিক মহড়ার কারণে তাইওয়ান প্রণালীতে সমুদ্র ট্র্যাফিকের যে কোনো ব্যাঘাত বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি বড় ধাক্কা দেবে, যা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করবে। ইতোমধ্যে, দুটি সামুদ্রিক লাইনার প্রণালী এড়াতে তাদের বহরকে পুনঃনির্দেশিত করেছে। মহামারির উত্থানের পর থেকে এটি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠতে পারে।
সর্বশেষ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেলের মজুদ কমছে। দেশটি জরুরি রিজার্ভের ওপর চলছে এবং নভেম্বরের মধ্যে এটি পুনরায় পূরণ করতে হবে, যা তেলের দাম বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ইরানের পুনঃপ্রবেশ ক্ষমতার একমাত্র উল্লেখযোগ্য সংযোজন হবে, তবে অন্যান্য সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য এটি যথেষ্ট নাও হতে পারে। যতদিন রাশিয়া-ইউক্রেন দ্ব›দ্ব এবং চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা থাকবে, তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ২০০ ডলারে ওঠার শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অতএব, সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতির শঙ্কা থেকেই যায়। সূত্র : ডন অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।