নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচেই নিজেদের জাত চিনিয়েছে আফগানিস্তান। বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্রে দ্রুত নিজেদের অস্তিত্ব জোরালো করা আফগানরা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে দাঁড়াতেই দেয়নি। এমন পারফরম্যান্সের পর রশিদ-নবীর দল আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর। এই আফগানিস্তানই আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ।
রহমানউল্লাহ গুরবাজরা যখন লঙ্কানদের সুপার ফোরের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে দিচ্ছিলেন, বাংলাদেশ দল তখন ছিল টিম ডিনারে। সেখানে খেলোয়াড়-কোচদের সাথে ছিলেন বোর্ড কর্তারাও। সবাই একসাথে বসেই শুনেছেন আফগান ক্রিকেটের হুংকার। তাই এখন শেষমুহূর্তের প্রস্তুতি হচ্ছে সেই মোতাবেক। টাইগাররাও আছে ফুরফুরে মেজাজে। আরব আমিরাতের গরমের সাথেও মানিয়ে নিয়েছেন। পাশে পাচ্ছেন দেশের ক্রিকেটের অভিভাবকদেরও। ক্রিকেট অপারেশন্সের প্রধান জানান, ‘খেলোয়াড়রা আসার পর থেকে উজ্জীবিত। ভালো অনুশীলন হচ্ছে। আস্তে আস্তে মানিয়ে নিচ্ছে। এখানে সবাই আছি, মাননীয় সভাপতিও ওদের সাথে কথা বলেছেন, প্রেরণা দিয়েছেন। মাঠের বাইরে থেকে মানসিক সাপোর্ট দেওয়া জরুরী, এজন্যই আমাদের এখানে আসা।’
বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস অবশ্য বলছেন, আফগানিস্তানের এমন পারফরম্যান্সে ভয় পাচ্ছে না টাইগাররা, ‘তারা একপেশে ম্যাচ জেতায় আমাদের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। খেলোয়াড়রা ডিনারের সময় ম্যাচটা দেখেছে। ওদের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে কোচ সিনিয়রদের সাথে কথা বলেছে। আমরা প্রস্তুত আছি। মাঠে যে ভালো খেলবে সেই জয় নিয়ে বের হয়ে আসবে।’ তবে আফগানিস্তানের বোলিং ও ব্যাটিং দুই বিভাগকেই বাংলাদেশের জন্য হুমকি মানছেন এই ক্রিকেট কর্তা, ‘আফগানিস্তানের ব্যাটিং বোলিং দুটিই ভালো। যে উইকেটে শ্রীলঙ্কা সংগ্রাম করল সেখানে আফগানিস্তান দাপুটে ব্যাটিং করেছে। বোলিংয়ে দ্রুত উইকেট এনে দিয়েছে, এরপর শ্রীলঙ্কা এই ঘাটতি পোষাতে পারেনি। দুদিক দিয়েই তারা অনেক ভালো।’
যার প্রমাণ শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দেখেছে বিশ্বও। দুই দিকে সুইং করানোর দক্ষতা ফজলহক ফারুকিকে পরিণত করেছে বিপজ্জনক এক বোলারে। বিশেষ করে নতুন বলে তিনি দারুণ কার্যকর। আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণে তাতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। তাদের বিখ্যাত স্পিনাররা আক্রমণে আসার আগেই প্রতিপক্ষকে এক দফায় কাঁপিয়ে দেন বাঁহাতি এই পেসার। তার নতুন বলের ধার টের পেয়েছে বাংলাদেশও। এবার তাই এই সুইং বোলারের জন্য বিশেষভাবেই প্রস্তুত হচ্ছে দল, জানালেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
বছরের শুরুতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি খেলেন ফারুকি। প্রথম ওয়ানডেতে নিজের প্রথম তিন ওভারে চার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দেন ২১ বছর বয়সী এই পেসার। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে আফিফ হোসেনের সঙ্গে দুর্দান্ত এক জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মিরাজ। সেই সিরিজে ফারুকি নেন ৬ উইকেট। এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৭ রানে নেন ২ উইকেট, পরের ম্যাচে ১৮ রানে ৩টি। ওভার প্রতি স্রেফ ৫.৬২ গড়ে ৫ উইকেট নিয়ে জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
সুইং ও মুভমেন্ট যেমন আদায় করতে পারেন তিনি, পাশাপাশি তার বল স্কিড করে বেশ। ব্যাটসম্যানরা তাই চমকে যান মাঝেমধ্যে। বিশেষ করে, বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য তার ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি দারুণ কার্যকর। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ওয়ানডে সিরিজে এই ধরনের ডেলিভারিতে দুইবার আউট করেন তামিম ইকবালকে। এবার এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচে শনিবার প্রায় একই ধরনের ডেলিভারিতে আউট করেন চারিথ আসালাঙ্কাকে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই ম্যাচে আফগানদের জয়ের মূল নায়ক তিনি। প্রথম ওভারেই দুই উইকেটের পর শেষ দিকে যোগ করেন আরও এক উইকেট। একটি মেডেনসহ স্রেফ ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই। বাংলাদেশের বিপক্ষেও বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে অপেক্ষায় তিনি। আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি তো জানিয়েই রেখেছেন, ফারুকিকে সামনেও একই রূপে দেখতে চান তিনি, ‘ফজলহক ফারুকি উইকেট শিকারি বোলার। বছরখানেক ধরে সে খুব ভালো বোলিং করছে আফগানিস্তানের জন্য। সে উঁচু মানের উইকেট শিকারি বোলার। টুর্নামেন্টে আমাদের ভালো শুরু এনে দিয়েছে। পাওয়ার প্লেতে ভালো বোলিং করেছে। শুরুতেই উইকেট নিয়েছে। টুর্নামেন্টে ভালো শুরু করেছে। আশা করি, সে এটা ধরে রাখবে।’
এক দিকে ফারুকির বোলিং, অন্যদিকে বাংলাদেশের নড়বড়ে উদ্বোধনী জুটি। ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জটা তাই অনুমেয়। তবে আইসিসি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজ বললেন, তারা প্রস্তুত, ‘শুরুতে ওদের যে বোলিং করে, ওর বল কীভাবে ভেতরে আসে, কীভাবে সুইং করে, এটা কীভাবে সামলাবে, ওপেনাররা আগে থেকেই এটার প্রস্তুতি নিয়েছে। এখানে আসার আগে আমরা দেশে অনুশীলন করেছি। এখানেও কিন্তু বেশ কয়েক দিন আগে এসেছি। প্রস্তুতি ভালো। এখন শুধু মাঠে বাস্তবায়ন করতে হবে, আমাদের ভালো খেলতে হবে। আমরা খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি দেশে। কারণ, এখানে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে, এটা নিয়ে সবাই পরিষ্কার। ওপেনার থেকে শুরু করে শেষ ব্যাটসম্যান পর্যন্ত পুরো দলের মধ্যে আমরা সেভাবেই কথা বলেছি। যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। অধিনায়ক প্রতিটা খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমি মনে করি, প্রতিটা খেলোয়াড়ের নিজের ভূমিকা পরিষ্কারভাবে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।