Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেরেও নায়ক ফখর-নাসিম

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

আবেশ খানের আচমকা বাউন্সারে ভড়কে গিয়ে ব্যাট চালিয়ে পরাস্ত হয়েছিলেন ফখর জামান। খালি চোখে মনে হচ্ছিল বল লাগেনি ব্যাটে। উইকেটকিপার দীনেশ কার্তিকও কিছু হয়নি ভেবে বল ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন। হঠাৎ নজর গেল হাঁটা ধরেছেন ফখর! আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল তা দেখে পরে দিলেন আউট।
বল ব্যাটে লাগলে আর কেউ না বুঝুক ব্যাটসম্যান ঠিকই বুঝতে পারেন। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ভরপুর গ্যালারির তুমুল আওয়াজের কারণে বল ব্যাটে লাগার শব্দ পাওয়া ছিল কঠিন। আম্পায়ার ও ফিল্ডাররা তা পাননি। বোলার আবেশ হালকা আবেদন করেছিলেন। ফখর এক্ষেত্রে স্থাপন করলেন দৃষ্টান্ত। নিজের ব্যাটে লাগার কথা আড়াল করলেন না তিনি। গতপরশু রাতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের এই ঘটনায় প্রশংসা পাচ্ছেন পাকিস্তানের বাঁহাতি ব্যাটার ফখর। পাকিস্তানের ইনিংসে পাওয়ার প্লের তখন শেষ ওভারের খেলা চলছে।
আবেশকে ছক্কা ও চার মেরে ফখরকে স্ট্রাইক দিয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ফখরও চালাতে গিয়ে হয়ে যান কট বিহাইন্ড। ৬ বলে ১০ রানে থামেন তিনি। ফখর নিজে থেকে আউট হয়ে ফিরে না গেলে এবং মাঠের আম্পায়ারও সাড়া না দিলে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ ছিল ভারতের। তবে কিপার কার্তিক যেভাবে নির্বিকার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন তাতে করে তারা রিভিউ নিত কিনা সেই সংশয় থাকছে। সেদিক থেকে অন্যরকম ক্রিকেটীয় স্পিরিট বা স্পোর্টসম্যানশিপই দেখালেন ফখর। ডিআরএস পূর্ববর্তী যুগে এরকমটা দেখাতে দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ভারতের শচিন টেন্ডুলকারদের।
২০০৩ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আউট বুঝে নিজে থেকেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন গিলক্রিস্ট। ২০০৭ সালে টেস্টে জেমস অ্যান্ডারসনের বলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই মাঠ ছেড়েছিলেন শচিন। টুইটারে ফখরের বেরিয়ে যাওয়ার ছবি পোস্ট করে অনেকেই তাকে বাহবা দিচ্ছেন। ভারত-পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনার ম্যাচে এরকম সততার পরিচয় দেওয়ায় বাঁহাতি ব্যাটার দুই দলের ভক্তদের কাছ থেকেই পাচ্ছেন প্রশংসা। কেউ লিখছেন, ‘ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা, ফখর সেটাই প্রমাণ করলেন’। কয়েকটি গণমাধ্যমের ছবি রিটুইট করে অনেকেই লিখছেন, ‘বৈরিতার মাঝে এমন দৃশ্য সুন্দর।’
এদিকে, একে তো এশিয়া কাপের মতো বড় মঞ্চে অভিষেক, তার ওপর প্রতিপক্ষ দলটার নাম ভারত। এমন একটা দিন নাসিম শাহর টি-টোয়েন্টি অভিষেক হল, যেদিন অভিষেকের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যেতে বাধ্য। অথচ পাকিস্তানবের তরুণ এই পেসার নিজের অভিষেক টি-টোয়েন্টিতে এত লড়াকু পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন, মনেই হয়নি তিনি এই পাড়ায় নতুন!
ভারতের বিপক্ষে মহারণে নাসিম শিকার করেন দুটি উইকেট। তারচেয়েও বড় কথা, শেষদিকে খেই হারানোর আগে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং প্রদর্শন করেছেন। সাজঘরে ফিরিয়েছেন লোকেশ রাহুল ও সূর্যকুমার যাদবকে। বিরাট কোহলিকেও সাজঘরে ফেরানোর সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন, কিন্তু তা ফসকে যায় ফখর জামানের হাত থেকে।
শাহীন শাহ আফ্রিদির অনুপস্থিতিতে নাসিম এতটা বাজিমাত করবেন তা অনেকেই ভাবেননি। নাসিমের লড়াকু চরিত্র ধরা দেয় ম্যাচের শেষ প্রান্তেও। প্রচণ্ড গরমে পায়ে টান লাগলেও বোলিং বন্ধ করেননি। আর তার এমন পারফরম্যান্সে আর অদম্য মানসিকতায় মুগ্ধ গোটা ক্রিকেট দুনিয়া। যদিও নাসিমের ধার অবশ্য অনেক আগেই টের পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে ১৭ ছুঁইছুঁই বয়সে ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেন। এরপর দীর্ঘ সময় কেটেছে টেস্ট নিয়েই। সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়। এবার গায়ে জড়ালেন টি-টোয়েন্টি জার্সিটাও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ