Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিউইর্য়কের বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এর গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন

যুক্তরাষ্ট্র সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২২, ৮:০৯ এএম

নিউইর্য়কের ব্রুকলীনের বায়তুল মা'মুর মসজিদ এন্ড কমিউনিটি সেন্টারের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান "বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এর সামার প্রোগ্রাম"এর সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী গত ২৫শে আগস্ট বৃহস্পতিবার বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিকেল চারটায় সেন্টারের হল রুমে অনুষ্ঠিত উক্ত গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মাওলানা রশীদ আহমদ। ইসলামিক স্কুলের কুরআনিক ক্লাসের ছাত্র ইয়াহইয়া মিক্বদাদের কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।স্কুলের শিক্ষক হাফেজ তাওহিদুর রহমান তালহা ও হাফেজ মোছাব্বীহ হোসাইন এর যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে গুরুত্ব পূর্ণ আলোচনা রাখেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও বায়তুল মামুর মসজিদএন্ড কমিউনিটি সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল ও বর্তমান সেক্রেটারী মোশাররাফুল মাওলা সুজন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের প্রিন্সিপাল মাওলানা রশীদ আহমদ। একই সময়ে ক্রমান্বয়ে পৃথকভাবে গার্লস বিভাগের গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামটিও প্রতিষ্ঠানের ২য় তলায় অনুষ্ঠিত হয়।গার্লস সেকশনের প্রোগ্রামটি পরিচালনা করেন সিস্টার ফিরোজা আক্তার পলি ও সুফিয়া খানম ইমু।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাফেজ মিজান উল্লাহ,হাফেজ আলী আকবর, হাফেজ কাজী ফজলে রাব্বী, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হাফেজ জসীম উদ্দিন, হাফেজ ফাহমিদ আবদুল্লাহ রাইয়ান,সিস্টার আলেয়া বেগম সুমী,হাফেজা ফাতেমা বেররী, কানিজ ফাতিমা,মাসুমা ইয়াসমীন ও হাবীবা আহমদ।

অন্যান্যের মধ্যে বিএমএমসিসির সানী ইমাম মাওলানা আব্দুল মান্নান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আবদুস সাত্তার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ নাসির রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বেশ সংখ্যক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানে ক্লাস ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রতিযোগীতাও অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠান সফলতার সাথে সামার প্রোগ্রাম শেষ করায় ক্লাস ভিত্তিক ১ম থেকে ১০ম গ্রেড পর্যন্ত এবং হিফজ শাখার দু'টি গ্রুপ,উইকেন্ড শাখার ৬টি ক্লাসের মধ্যে প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী ৪৮জন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সনদও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।পাশাপাশি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্র-ছাত্রীদেরকে রিপোর্ট কার্ড প্রদান করা হয়।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি সহ অন্যান্য অতিথিরা শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার ও সনদপত্র তুলে দেন। এবারে ২৮৫ জন ছাত্র-ছাত্রী উক্ত সামার সেশনে অংশ গ্রহণ করেন।সুচারু রূপে পাঠ দান করেছেন অভিজ্ঞ ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ।

প্রধান অতিথি ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন,যদি তোমরা সর্বত্র সালামের প্রচলন করতে পারো,
পাঁচ ওয়াক্ত সময়মতো নামাজ আদায় করতে পারো,
হাসিমুখে কথা বলতে পারো,ধৈর্য্য ও খুলুসিয়াতের সাথে প্রতিটি কাজ সম্পাদন করতে পারো,তাহলে তোমাদের জীবনে সফলতা আসবেই। পাশাপাশি আখেরাতেও কামিয়াবী হাসিল করা সম্ভব। তিনি অভিবাকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রবাসে ইসলামকে বুঝা বা শেখার জন্য আমাদের সন্তানদের জন্য ইসলামিক স্কুলের বিকল্প নেই। একই সঙ্গে পারিবারিকভাবেও কুরআন ও হাদিসের বিষয়গুলো গুরুত্ব দিতে হবে। সামার স্কুল থেকে শিক্ষা নেয়ার পর ইসলামের মৌলিক বিষয়ের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের খাওয়ারের ব্যপারে হালাল হারাম শিখানো হয়েছে তা তাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে। মা-বাবাদেরও হারাম হালালের জ্ঞান থাকতে হবে, সে অনুযায়ী বাচ্চাদের খাবার পরিবেশন হবে।তিনি আরো বলেন,নতুন প্রজন্মকে আরো বেশী বেশী কুরআন-সুন্নাহর মৌলিক জ্ঞান অর্জনে মনোনিবেশ করতে হবে।কেননা ঐ কুরআনিক জ্ঞানই পারে মানুষকে সঠিক ও সত্য পথের পথ দেখাতে।

বিশেষ অতিথি বিএমএমসিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাইয়াজ ফয়সল উপস্থিত অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সকলের আরো সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে বিএমএমসিসি একদিন নিউইয়র্কের নামকরা বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে ইনশা আল্লাহ।তিনি বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল এই সামারের এই অল্প সময়ে শিক্ষার্থীদের সবকিছু শিক্ষা দেয়া সম্ভব নয়। তাই আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উপর গুরুত্তারোপ করেন।

বিএমএমসিসির সেক্রেটারী জেনারেল মোশাররাফুল মাওলা সুজন তাঁর বক্তৃতায় বলেন, আমাদের সন্তানদের শিশু বয়স থেকে ইসলাম শিক্ষা দেওয়া জরুরী। বাসার পাশে ইসলামিক স্কুল হওয়ায় আমাদের জন্য তা অনেক সহজ হয়েছে।সামার স্কুল নিয়ে তিনি আরো বেশী প্রচারের উপর গুরুত্তারোপ করেন, যাতে করে সামার সেশনে মুসলিম কমিউনিটির সকল শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে সক্ষম হয়।

প্রিন্সিপাল মাওলানা রশীদ আহমদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতি বছরই ভুর্তুকী দিয়ে ইসলামিক স্কুল পরিচালনা করতে হয়। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, যেন আগামী প্রজন্ম আমেরিকায় বসেও ইসলামের আলোকে জীবন গঠন করতে পারে।তিনি অভিভাবকদের উদ্দেশ্য বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে নিয়ে আসা এবং ক্লাস শেষে সঠিক সময়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন এবং বাচ্চাদের হোমওয়ার্কে ঠিকমতো দেখভাল করা, তাতে স্কুলের শৃংখলা রক্ষা হয় সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন বৃদ্ধি পায়।

তিনি বলেন, আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২২ শনিবার থেকে স্কুলের অপর প্রোগ্রাম উইকেন্ড স্কুল শুরু হচ্ছে। ইসলামের মৌলিক শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাবলিক স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উইকেন্ড ক্লাসে ভর্তি করার আহবান জানান তিনি।

প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ