Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাংলাদেশি অন্যতম একজন ফ্রিল্যান্সার হলেন বাকীবুল্লাহ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২২, ১:৫৪ পিএম

চাকরি না করেও যে স্বাধীনভাবে কিছু করা যায়, তাই করে দেখিয়েছেন বাকীবুল্লাহ। একটু দুরদর্শিতা, পরিশ্রম ও ধৈর্য বদলে দিতে পারে অনলাইন এবং অফলাইন জীবন। তিনি তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং এবং আইটি উদ্যোক্তা তৈরী করতে ব্রেইনট্রাস্ট আইটি নামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তুলেছেন।

বাকীবুল্লাহ ১৯৯৯ সালের ১৫ আগষ্ট টাঙ্গাইলের জেলার গোপালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। অনেক কম বয়সে ও অল্প সময়ে সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি । বর্তমানে, বাকীবুল্লাহ তার নিজের প্রতিষ্ঠানের সিইও। তার কোম্পানি "ব্রেইনট্রাস্ট আইটি" । এখানে ১০০ জন তরুণ বর্তমানে পার্টটাইম ও ফুলটাইমার হিসেবে কাজ করছেন।তিনি আমেরিকার একটি আইটি প্রতিষ্ঠানের মাকের্টিং ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার এই পথচলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে বাকীবুল্লাহ বলেন,বরাবর চেষ্টা করেছি নিজের কাছে এই উত্তরে স্পষ্ট থাকতে যে, আমি আসলে কোথায় গিয়ে থামতে চাই? কিংবা এ যাত্রায় ঠিক কতটুকু দৌড়ানোর ইচ্ছা? প্রত্যেকবার উত্তরেই সর্বোচ্চ ছুয়ে দেখার এক অসাধারণ স্পৃহা অনুভব করেছি ভেতর থেকে।যেটাই করবো তার চুড়ায় না পৌঁছে থামা যাবে না, এমন লক্ষ্য নিয়েই স্কুল, কলেজ শেষ করলাম, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হলাম।এই সময় গুলোর মধ্যে নিজের পড়ালেখা পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ের উপর নিজের দক্ষতা বাড়ানো মনোযোগী হলাম।কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে, সঠিক বাচন ভঙ্গি, ভাষা দক্ষতা , কম্পিউটার প্রশিক্ষণের মতো প্রয়োজনীয় দক্ষতা গুলো অর্জন করতে থাকলাম নিজের তাগিদেই।
তারপর শুরু হলো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। আমার কাছে মনে হয় যে, নিজেকে তৈরি করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় হলো সেরা জায়গা সে আপনি যাই করতে চান জীবনে; নাচ, গান, শিল্প, সংস্কৃতি, কর্পোরেট সব কিছুর জন্যই।শুরু হলো আমার নিজেকে তৈরি করার পালা। বিভিন্ন সংগঠন, কর্মশালা নিয়মিত চলতে থাকলো।যখনই মনে হয়ত এখনে শেখার মতো কিছু পাবো, সে সুযোগ ছেড়ে দিতাম না।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু কয়েকমাসের মধ্যেই পুরো প্রথিবীজুড়ে আসে করোনা ভাইরাসের থাবা।সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও একটু একটু করে অনলাইন মাধ্যমে পরিবর্তিত হতে শুরু করলো।বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস থেকে শুরু করে যাবতীয় যখন অনলাইন চলতে লাগলো, এটাকে তখন আমার নতুন আর একটা সুযোগ মনে হলো।আমি বিশ্বাস করি যে সুযোগ খুজতে জানে তার জন্য সুযোগ সর্বত্রই।হাতে কিছুটা সময় পেলাম এটা ভাবার যে কি করা যায়।তখনই মনে হলো যেহেতু কম্পিউটার ভিত্তিক সফ্ট স্কিল গুলো আমার আছেই তাহলে এটাকেই কাজে লাগানো যাক।প্রথম যাত্রা শুরু হয় ইউটিউবিং ,খুলে ফেলি ইনফরমেটিভ চ্যানেল গোলকধাঁধা। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় প্রথম ভিডিওটিই ৩৩ লাখ ভিউ ছাপিয়ে যায় এবং 26 হাজার সদস্য ছাপিয়ে যায়। পাশাপাশি শুরু করি ডিজিটাল মার্কেটিং এর হাতে খড়ি ,সেটিও টানা ছয় মাস পরিশ্রমের পর সফলতার মুখ দেখে।কানাডিয়ান এক কোম্পানির ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসেবেও কাজ শুরু করি।এরমধ্যে কর্পোরেট এন্টারপ্রেনারশিপ নিয়ে কাজের একটা ইচ্ছা তৈরি হয় এবং সেই অনুযায়ী বিভিন্ন সময় শিক্ষক বন্ধুদের সাথে আইডিয়া শেয়ারই চলতে থাকে এবং ২০২০ সালের নভেম্বরের দিকে কয়েকজন বন্ধুকে সাথে নিয়ে শুরু হয় নিজেদের অর্গানাইজেশন Youth Alliance For Developing Bangladesh(YADB).এসব কিছু নিয়েই আপাতত জীবন এগোচ্ছে।ডিজিটাল কর্পোরেট সেক্টর এবং YADB কে নিয়ে আরও বড় অর্জনের স্বপ্ন দেখি। আশা রাখি নিশ্চয়ই একদিন।চুড়ায় পৌছাবো। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে ধারন করবো।চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত চারপাশটাকে সাথে নিয়ে নিজেকে বদলে নিতে, উন্নত থেকে উন্নততর হতে।সম্ভব হবে কিনা এই প্রশ্ন মনে আনতেই আমি নারাজ।আমার বিশ্বাস চেষ্টা করলে আমি অবশ্যই পারবো।
এতোকিছু নিয়ে কাজ করতে গিয়ে আমার যে মনে হয়েছে, বাংলাদেশে তরুণদের কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।চাই শুধু বিশ্বাস, ইচ্ছা আর অদম্য যাত্রার মানষিকতা,তাহলেই সফলতা সম্ভব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাকীবুল্লাহ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ