পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই অসময়ে যমুনা নদীতে পানি হ্রাস পাওয়ায় সিরাজগঞ্জ জেলার নদী তীরবর্তী উপজেলা চৌহালীতে সময়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। পরপর কয়েক দফার ভাঙনে মাত্রচিত্র থেকে মুছে যেতে শুরু করেছে চরাঞ্চলের এ উপজেলা। ইতেমধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয়, তাঁত কারখানা, হাটবাজার-দোকানপাটসহ হাজারো বিঘা আবাদি জমি ও বসতভিটা গ্রাস করে চলেছে রাক্ষুসি যমুনা। নদীর হিংস্র থাবা তীরবর্তী মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। নদী ভাঙনে কোন কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে পানি কমার সাথে সাথে চৌহালী উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে তীব্র নদী ভাঙন। গত এক মাসের ব্যবধানে চারটি গ্রামের শতাধিক বসত বাড়ি, ২৫টি দোকান পাট, ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা অন্যের বাড়িতে এবং ওয়াবদা বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ভাঙনরোধে নেয়া হয়নি কোন কার্যকর পদক্ষেপ ও দেয়া হয়নি ত্রাণ সহায়তা। তারা ভাঙনরোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, উক্ত উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের খাষপুখুরিয়া থেকে সীমান্তবর্তী পাথরাইল পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকার বাঘুটিয়াপূর্ব, চরছলিমাবাদ, পাথরাইল পূর্বপাড়া, খাষপুখুরিয়া পশ্চিম ও উমারপুর ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী বিনানই, হাপানিয়া ও হাটাইল এলাকায় অসময়ে নতুন করে যমুনা নদীর ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চরসলিমাবাদ বাজার, বাঘুটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ মুসলিমিয়া দাখিল মাদরাসা, চৌবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাথরাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাপানিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরছলিমাবাদ ও বাঘুটিয়া কবরস্থানসহ শতাধিক কাচা-পাকা ঘর বাড়ি, তাঁত কারখানা, বাজার, কাঠ ও ফলদ বাগানসহ বহু আবাদি জমি গত ১ মাসের ব্যবধানে যমুনা নদী গর্ভে চলে গেছে। এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্তরা আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে উঠেছে। এছাড়া অনেকেই ওয়াবদা বাঁধে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের জন্য পৌঁছায়নি জরুরী ত্রাণ সহায়তা এবং ভাঙনরোধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে বাঘুটিয়ার আলমাস উদ্দিন, জরিনা বেওয়া, জহির প্রামানিক, রাজ্জাক ও সোলায়মানসহ অনেকেই অভিযোগ করেন।
এদিকে ভাঙন অব্যাহত থাকলে চৌবাড়িয়া কারিগরি কলেজ, পয়লা দাখিল মাদরাসা, চরসলিমাবাদ দাখিল মাদরাসা, বিনানই বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাপানিয়া ও হাটাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবরস্থান, বুতের মোড় বাজার ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুনের বাসভবনসহ চারটি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া অসময়ের ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসির মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এব্যাপারে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাহহার সিদ্দীকি বলেন, উপজেলা সদর এলাকা রক্ষায় নির্মাণাধীন তীর রক্ষা বাঁধের সাথে দক্ষিণাঞ্চলের পাথরাইল পর্যন্ত যমুনা তীরবর্তী এলাকা ভাঙন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দক্ষিণাঞ্চল মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে বলে উল্লেখ করে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সরকারীভাবে অতিরিক্ত ত্রাণ সহায়তা এবং ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান। এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। তারা দক্ষিণাঞ্চল ভাঙন প্রতিরোধে ৮ কোটি টাকার বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।