Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘বিতর্ক মানস গঠনে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক হওয়া জরুরি’: ভিসি ড. মশিউর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২২, ৭:১৪ পিএম

জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘বিতর্ক মানস গঠনে গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক হওয়া জরুরি। কারণ বিতর্ক উপজীব্যের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যুক্তির খেলাঘর উন্মোচিত হয়। একটি মানুষের মধ্যে যুক্তিবোধ তৈরি করতে হলে তাকে গণতান্ত্রিক হতে হয়, অসাম্প্রদায়িক হতে হয়, দেশকে ভালোবাসতে হয়। তাকে জাতীয়তাবাদ বুঝতে হয়। ধর্মনিরপেক্ষ হতে হয়।’

 

শনিবার (২০ আগস্ট) ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত জাতীয় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ২০২২ ও আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন ভিসি। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে বিতর্ক মানস গঠন, মানুষকে যুক্তিপূর্ণ করা, বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সকল ব্যবস্থা সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের কাছে অনুসরণীয় আমাদের স্বার্থে। একজন মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক, যৌক্তিক ও আধুনিক হতে হলে বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরে যেতে হবে। রবীন্দ্রনাথের কাছে ফিরে যেতে হবে। যারা এই চর্চার বাইরে থাকতে চান তারা হারিয়ে যাবেন।’

 

বিশিষ্ট এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘২০২২ এ এসেও যদি জাতির পিতার স্মরণে সৃজনশীল শিক্ষার্থীরা কোনো অনুষ্ঠান করে, সেটি নিয়ে যদি বিতর্ক হয় তাহলে বুঝতে হবে আমাদের অস্থিমজ্জায় কোথাও সংকট আজও রয়ে গেছে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের পরেও এই দেশে ২১ আগস্ট এর পুনরাবৃত্তি ঘটেছিল। ২১ আগস্টের ঘটনায় বঙ্গবন্ধুর অবশিষ্ট রক্ত, তাঁর উত্তরাধিকারকে হত্যার ষড়যন্ত্র ছিল স্পষ্ট। শুধু ২১ আগস্ট নয়, কয়েকদিন আগে আমরা দেখলাম বাংলাদেশের সেরা একটি বিদ্যাপিঠ-বুয়েট। যেটিকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। সেই বুয়েটের কিছু শিক্ষার্থীরাও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন কোথায় থাকবে আর থাকবে না সেটির নির্দেশনা দেয়ার চেষ্টা করে। আমি মনে করি এসবই ধৃষ্টতা। এসব ধৃষ্টতার অবসান হওয়া অপরিহার্য। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মকা-ে দোষ ক্রুটি থাকতে পারে, সেসবের উর্ধ্বে হয়তো অন্য ছাত্রসংগঠনও না। কিন্তু জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির মহানায়ক যিনি এটি ছাত্রসংগঠন সৃষ্টি করলেন, একটি রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করলেন, একটি জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টি করলেন, অত:পর শোষিতের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দ্বিতীয় বিপ্লব। এই চারটি মহান কাজের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যারা সমালোচনা করেন তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা পৃথিবীর ইতিহাসে আর কোনো ক্যারিশমেটিক লিডার আছে কিনা, যিনি একইসঙ্গে চারটি বিপ্লবের সূচনা করেছেন, বাস্তবায়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে যদি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাহলে মনে করতে হবে আমাদের বিপ্লব এখনো অসম্পূর্ণ।’

 

জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় ভিসি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু এদেশের অর্থনৈতিক ভিত রচনা করে দিয়েছেন। তিনি সবসময়ের জন্যই বিশ^জনীন। সেটি আমরা এখানে বসে বলছি না। বঙ্গবন্ধু যে বিশ^জনীন সেটি ইউনেস্কো বিশ^ ঐতিহ্য সম্পদ হিসেবে যখন বঙ্গবন্ধুর ৭-ই মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি দেয়, যখন বিশ^ ইতিহাসের বিরল সব বক্তৃতাকে নিয়ে কোনো কিছু হয় সেখানে যখন স্থান পায় বঙ্গবন্ধুর অনন্য ভাষণ, তখনই তো স্পষ্ট হয় বঙ্গবন্ধু কতবেশি বিশ^জনীন, কতবেশি সার্বজনীন।’ ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি শেখ মো. আরমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান, প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যার্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ভট্টাচার্য প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ