পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফের টক অব দ্য কান্ট্রি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এবার তিনি সরকারে থাকতে ভারতের সহায়তা চেয়ে আলোচিত হচ্ছে। বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো বলছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে প্রকৃত সত্য বের হয়ে এসেছে। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ফের ক্ষমতায় আসার জন্য ভারতকে কখনো অনুরোধ করেনি এবং শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। এটা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাক্তিগত অভিমত হতে পারে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখ থেকে সত্য কথা বের হয়ে এসেছে, বেহেশতে বসে তো আর মিথ্যা বলা যায় না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বিতর্ক চলছে। তোলপাড় চলছে নেটিজেনদের মধ্যে।
সিলেটের এক অনুষ্ঠানে ‘দেশের মানুষ বেহেশতে আছে’ বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে দেয়া একটি বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের কারা ক্ষমতায় এনেছে সে তথ্য যেন ফাঁস করে দিয়েছেন। জানিয়েছেন দিল্লি গিয়ে তিনি ভারতকে বলেছেন শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে। তার এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। বিএনপিসহ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, ২০১৪ সালের সেসময়ের ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে দেয়া প্রস্তাবের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের যোগসুত্র খুঁজে পাওয়া যায়। এ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তার বক্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অবশ্য গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন তার বক্তব্য টুইস্ট করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উৎসবের এক অনুষ্ঠানে গেলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তার বিরুদ্ধে মিছিল করেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তিনি ভারতকে বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে হবে। নিজের দেশের কতিপয় ‘দুষ্ট’ মানুষের বিরুদ্ধেও ভারতকে জানান তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ব্লগ, টুইটার এবং ইউটিউবে এই বক্তব্য ভাইরাল হয়ে গেছে। নানা জনে নানা মন্তব্য করছেন তার বক্তব্য নিয়ে।
ড. এ কে আব্দুল মোমেনের এমন বক্তব্যে আওয়ামী লীগ অনুসারি বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ এবং সাংবাদিকরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছেন। তারা যে দিল্লির তোষামোদী করে নিজেরা বেঁচে রয়েছেন এবং আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রয়েছে এটা ফাঁস করে দেয়ায় সরকার দলীয় তোষামোদকারী সাংবাদিকরা বিব্রত। সে জন্য সরকারের সুবিধাভোগী একাধিক সাংবাদিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার বক্তব্য ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে বা তিনি মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন এমন উপদেশ দেন। তারা তার এ সংক্রান্ত বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য গতকাল শুক্রবার সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। প্রশ্ন করা হয় পররাষ্ট্রন্ত্রী আপনি এ বক্তব্য সরল মনে বা মুখ ফসকে দিয়েছেন নাকি তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন? জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি জেনে বুঝেই ভারতের কাছে সহায়তার চাওয়ার কথা বলেছি। আমি আমার বক্তব্য থেকে সরছি না। আমি ভুল কিছু বলিনি’। তিনি বলেন, ‘আমরা স্থিতিশীলতা চাই। আমাদের বন্ধুরাও তা চান। সে জন্য আমার যা যা বলা দরকার বলেছি। কোনো কিছু ভুল বলিনি। নাথিং রং ইট। আমি আরও বলব। তাদের সহযোগিতা আমাদের দরকার।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অস্থিরতা সবার জন্যই অমঙ্গল। আমি না জেনে মনগড়া কথা বলিনি। আমি আমাদের প্রতিবেশী বন্ধুদের বলব, আমাদের পাশে থাকো। তাতে তোমাদেরও লাভ। আমাদেরও লাভ।’ তিনি বলেন, ‘এই রিজিওনে আমরা স্থিতিশীলতা চাই। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। এ জন্য তাদের সহযোগিতা চাওয়ার কথা বলেছি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যাখ্যা : এদিকে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীর উৎসব উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এতে তিনি বলেন, আমি বলেছি যে শেখ হাসিনা যদি সরকারে থাকেন, তাহলে স্থিতিশীলতা থাকে। আর স্থিতিশীলতা থাকলেই উন্নয়নের মশাল আমরা পাই। আমি ভারতে গেলে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি বলেছিলাম, কেন? তিনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনার সন্ত্রাসবাদ বিরোধিত জিরো টলারেন্সের কারণে আসাম, মেঘালয়সহ এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী তৎপরতা নেই। সন্ত্রাসী তৎপরতা না থাকায় তাদের দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। আমার এলাকায় অনেক বিনিয়োগ আসছে, যেহেতু এখন আসামে কোনো সন্ত্রাসী তৎপরতা নেই ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি বলেছি, কিছু কিছু দুষ্টু লোক আমার দেশেও আছে, আপনার দেশেও আছে। তারা উস্কানিমূলক কথা বলে তিলকে তাল করে। আমার সরকারের দায়িত্ব আছে, আপনার সরকারেরও দায়িত্ব আছে, তিলকে তাল করার সুযোগ সৃষ্টি না করা। আমরা এটা করলে, আমাদের মধ্যে সম্প্রীতি থাকবে, কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা থাকবে না। শেখ হাসিনা এ অঞ্চল স্থিতিশীলতা রাখতে বদ্ধ পরিকর। আপনারা এ ব্যাপারে সাহায্য করলে আমরা খুব খুশি হবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।