নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
পিচে হালকা ঘাস ছিল, সাথে ভালো বাউন্স। যেখানে ব্যাটিং করতে নেমেই আবারও উন্মুক্ত হল বাংলাদেশ ক্রিকেটেরই সত্যিকারের চেহরা। মোহাম্মদ মিঠুনের দলটির একাদশে ৭ জনের ছিল জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা। সেই শক্তিমত্তা নিয়েও অনভিজ্ঞ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে কুৎসিত ব্যাটিং প্রদর্শনী করল নাঈম-সাব্বিররা। লাল বলের ক্রিকেটে ব্যক্তিগত কিছু ঝলক ছিল কিন্তু আনঅফিসিয়াল ওয়ানডেতে দেখা মিলল না বলার মত কিছু।
গত পরশুরাতে সেন্ট লুসিয়ার ড্যারেন সামি স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথম ব্যাটিং করতে নেমে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যান বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ২৩.২ বল ক্রিজে টিকে থাকতে পেরেছিল টাইগার ‘এ’ দল। সবার প্রচেষ্টায় স্কোরবোর্ডে জড়ো হল মাত্র ৮০ রান। সাব্বির এদিন করলেন ৩ রান। পাওয়ার হিটার নামে বাংলাদেশ ক্রিকেটে পরিচিত এই ব্যাটসম্যানের এশিয়া কাপের স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আছে নানান প্রশ্ন। এদিন তার ব্যাটিংয়ের ধরণ আরও প্রাসঙ্গিক করল সেই প্রশ্নকে। অন্যদিকে ছোট্ট রান তাড়া করতে গিয়ে স্বাগতিকরাও ছিল বেশ অস্বস্তিতে। তবে বাংলাদেশের চেয়ে ১ বল বেশি খেলে ৪ উইকেট হাতে রেখেই অবশ্য জয়ের বন্দরে পৌঁছায় তারা।
রানের খাতা খোলার আগেই বাংলাদেশ ‘এ’ দল হারায় প্রথম উকেট। অফস্টাম্পের বাহিরের চার মারার মতন বলে সিøপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ সেঞ্চুরি হাঁকানো সাইফ ৫ বলে ৬ রান করে লুইসের বলে বিদায় নেন। নাঈমকে ফেরানো পেসার অ্যান্ডারসন ফিলিপে পরে সাজঘরের প[থ দেখালেন আরেক ওপেনার সৌম্যকেও। দারুন শুরুর পরও বিলাসী পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন সৌম্য। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ৩৫। দলীয় ৩ রান পরে জাস্টিন গ্রিভসের বলে উইকেটের বিদায় নেন কাপ্তান মিঠুনও। যেভাবে তিনি অফ স্ট্যাম্পের বাহিরের বল পুল করতে গিয়ে কিপার জশুয়া সিলভাকে ক্যাচ দিলেন, তাতে তার ব্যাটিং টেকনিককেই কাঠগরায় দাড় করানো যায়।
এরপর জুটি বাধা মাহমুদুল জয় ও সাব্বিরের হাতে যথেষ্ট ওভার ছিল, এই ধ্বংসস্ত‚প থেকে দলকে টেনে তোলার জন্য। কিন্তু অফস্টাম্পের বাহিরের বল খোঁচা মেরে সেই জশোয়ার ক্যাচে পরিণত হন দুইজনই। এরপরই মৃত্যুঞ্জয় ও নাঈম হাসান ফেরেন ০ রানে। দলীয় স্কোর তখন ৮ উইকেটে ৫০ রান। সেখান থেকে ২ চার ও ১ ছক্কার মারে ৪১ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ২৫ রান করেন কিপার ব্যাটসম্যান জাকের আলি। সঙ্গে অতিরিক্ত ৯ রানের সৌজন্যে ৮০ রান তুলতে পারে সফরকারীরা। বাংলাদেশ দএদ দলের ৭ ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। শর্ট বা শর্ট অব দ্য লেংথ বলে যে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা অসম্ভব বাজে সেই দৈনতা ফুটে উঠল আরেকবার। এই দলের স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের সবাই টেস্ট ক্যাপ পেয়েছেন প‚র্বে। তাদের টেকনিকের দুর্বলতাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আনকোরা বোলাররা নগ্নভাবে প্রকাশ করে দিল। তাই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কিসের উপরে দাঁড়িয়ে দেশের ক্রিকেটের পাইপলাইন? স্বাগতিকদের হয়ে গ্রীভস ৪ বাংলাদেশীকে শিকার করেন।
জবাবে ত্যাগনারায়ণ ও জশুয়া মিলে ৩৫ রান তুলেন প্রথম জুটিতে। এরপর মৃত্যুঞ্জয় ও মুকিদুল মিলে ৬০ রানের মাঝে তুলে নেন ৪ উইকেট। জশুয়া ও টেডি পরিণত হন মৃত্যুঞ্জয়ের শিকারে। আর ইনিংস সর্বোচ্চ ত্যাগনারায়ণকে (২৩ রান) ও টেভিনকে সাঝঘরের পথ দেখান মুকিদুল। স্বাগতিকরা যেখানে ৫ পেসার খেলিয়েছে সেখানে মিঠুনরা খেলিয়েছেন মাত্র দুজনকে। এমন সিদ্ধান্ত আরেকটি কথিত সত্যকে সামনে নিয়ে আসে। তা হচ্ছে, বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যানেজম্যান্ট পিচের চরিত্র এবং মর্ম বুঝতে প্রায়ই ভুল করে। পেসারদের দিনে পার্ট টাইমার সৌম্যই ১ ওভার হাত ঘুরিয়েই পেয়ে যান উইকেটের দেখা। স্পিনার রাকিবুল পান একটি উইকেট। ২৩.৩ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে ৮০ রান তাড়া করতে সফল হয় ক্যারিবিয়ানরা।
আজকে রাতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে দারুণ চাপে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। সাব্বিরকে এশিয়া কাপের ১৭ জনের প্রাথমিক দলে ঠিক কি কারণে রাখা হয়েছে সেই ব্যাখা অবশ্য সঠিকভাবে দিতে পারেননি নির্বাচকরা। এই মুহ‚র্তে জাতীয় দলের বেশ কজন খেলোয়াড় চোটে আক্রান্ত। তাই দল থেকে বাদ পড়ার পরে কোন পারফরম্যান্স শো না করেও দলে ফিরে আসলেন সাব্বির। কথিত আছে যে, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল থেকে বাদ পড়ালে পারফরম্যান্স করতে হয় না, অপেক্ষা করতে হয় অন্য কারো আরো বাজে পারফরম্যান্সের বা কারো চোটের। সাব্বিরের সিলেকশনতো সেই ব্যাপারটাই ইঙ্গিত করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।