Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তরায় প্রাইভেটকারে গার্ডার : ঝুঁকির কাজ রাস্তায় কেন করবে?

উত্তরায় গার্ডারের চাপা থেক বেঁচে যাওয়া হৃদয়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০২২, ২:১১ পিএম

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে পাঁচজন নিহত হয়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১)। গত শনিবার তাদের বিয়ে হয়েছে। এদিন বউভাতের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন হৃদয়ের বাবা, রিয়ার মা, খালা ও খালাতো ভাই এবং বোন। হৃদয় বলেন, ভাবতেও পারিনি এটা আমাদের ওপর পড়বে। ঝুঁকির কাজ রাস্তায় কেন করবে? ঝুঁকি নেই দেখেই তো সেখানে যানবাহন চলছিল। সব গাড়ি যাচ্ছে, এজন্য আমরা রানিংয়ে গাড়ি টান দিয়েছিলাম। ক্রস করার সময় ওইটা গাড়ির ওপর পড়ে। দুই/এক সেকেন্ডের মধ্যেই ক্রেন কাত হয়ে যায়। সেখানে তো আরও গাড়ি থাকতে পারতো।

মঙ্গলবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এমন হৃদয়বিদারক কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন তিনি।

লাশ বুঝে নিতে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বাইরে বাকরুদ্ধ রিয়া মনিকে স্বামী হৃদয়ের হাত ধরে বসে থাকতে দেখা যায়। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পুরো মর্গ এলাকা।

হৃদয় বলেন, আমি আর আমার বাবা সামনে ছিলাম। আর পেছনে আমার স্ত্রীসহ বাকিরা ছিলেন। এয়ারপোর্ট রোডে ক্রেনে একটা বক্স গার্ডার ঝুলছিল। আমরা দূর থেকে এটা দেখেছি। একের পর এক গাড়ি এর নিচ দিয়ে চলে যাচ্ছিল। ভাবলাম, আমরাও যেতে পারবো। যখনই পার হতে গেলাম তখনই গার্ডারটা গাড়ির ওপর পড়লো।

তিনি বলেন, আমি বাবার বামপাশে ছিলাম, আমার স্ত্রী পেছনের সিটে বামপাশে ছিলেন। আমার বাবাসহ বাকিরা ডানপাশে ছিলেন। তারা সবাই ঘটনাস্থলেই মারা যান।

হৃদয় আরও বলেন, স্থানীয়দের সহায়তায় সহজেই আমাকে উদ্ধার করা হয়। আমার পা আটকে ছিল। গাড়ির গ্লাস ভেঙে আমাকে সহজেই উদ্ধার করা হয়। আমার স্ত্রী পুরোপুরি আটকে ছিলেন, ওকে বের করতে অনেক সময় লাগে। আমাকে ১০ মিনিটে বের করে ফেলে কিন্তু আমার স্ত্রীকে বের করতে আধঘণ্টার মতো সময় লাগে। এ ঘটনায় আমরা মামলা করেছি, এর বিচার চাই।

ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরা হৃদয় বলেন, ভাবতেও পারিনি এটা আমাদের ওপর পড়বে। ঝুঁকির কাজ রাস্তায় কেন করবে? ঝুঁকি নেই দেখেই তো সেখানে যানবাহন চলছিল। সব গাড়ি যাচ্ছে, এজন্য আমরা রানিংয়ে গাড়ি টান দিয়েছিলাম। ক্রস করার সময় ওইটা গাড়ির ওপর পড়ে। দুই/এক সেকেন্ডের মধ্যেই ক্রেন কাত হয়ে যায়। সেখানে তো আরও গাড়ি থাকতে পারতো। সরকারের কাছে এই ঘটনার বিচার চাই যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে।

এদিকে সোমবার উত্তরা পশ্চিম থানায় এ দুর্ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অবহেলাজনিতভাবে ক্রেন পরিচালনাকারী চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ