Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খাবার নিয়ে অভিযোগ করার শাস্তি পেলেন ভারতের সেই পুলিশ কর্মকর্তা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২২, ৪:৪২ পিএম

দীর্ঘ কর্মঘণ্টা এবং ব্যারাকে পরিবেশিত খাবারের ‘নিম্নমানের’ বিষয়ে অভিযোগ করার পরে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। মনোজ কুমার নামে ২৬ বছর বয়সী ওই অফিসার দুই মিনিটের একটি ভিডিওতে খাবারের গুণমানের বিষয়ে কথা বলেছেন যেখানে তাকে কাঁদতে দেখা গেছে।

ওই ভিডিওটি দেখা গেছে, একটি থালায় কয়েকটি রুটি, সামান্য ভাত ও এক বাটি ডাল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ফিরোজাবাদের পুলিশ মেসের এক পুলিশকর্মী। মনোজ কুমার নামে ওই কনস্টেবল কেঁদে কেঁদে বলছেন, পানির মতো পাতলা ডাল এবং কাঁচা রুটি খেতে দেয়া হয় তাদের। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। বরং চাকরি ‘খেয়ে দেয়ার’ হুমকি পেয়েছেন বেশ কয়েকবার।

সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে মনোজ বলেন, ১২ ঘণ্টা ডিউটি করে আসার পর আমাদের এসব খাবার দেয়া হয়। কোনো কুকুরকে এই খাবার দেওয়া হলে সে-ও এগুলো খাবে না। আমরা মানুষ হয়ে কী করে এমন খাবার খাব? আর পেটে যদি খাবারই না থাকে, তাহলে কাজ করব কী করে? মনোজ দাবি করেন, পুরো ব্যাপারটা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের একটা দুর্নীতি। তারাই ইচ্ছা করে এমন নিম্নমানের খাবার দিচ্ছে।

তিনি জানান, খাবারের মান নিয়ে এর আগে তিনি মেস ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তিনি প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা না করে বরং তার চাকরি কেড়ে নেয়ার হুমকি দেন। এরপরই ভিডিওর মাধ্যমে নিজের অভিযোগ জানাবেন বলে ঠিক করেন মনোজ। প্রতিবাদ জানানোর পরই তাকে সরিয়ে নিয়ে যান অন্য পুলিশকর্মীরা।

এ ব্যাপারে আগ্রা জোনের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল অজয় আনন্দ বলেন, ফিরোজাবাদের রিজার্ভ পুলিশ লাইনের মেসে খাবারের মান নিয়ে পুলিশ সদস্যের উত্থাপিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একজন সার্কেল অফিসারকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি ঘটনার তদন্ত করে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেবেন।

এদিকে ভিডিও প্রচারিত হওয়ার পরদিন মনোজ কুমার গণমাধ্যমকে জানান, ওই ভিডিও করার পর তিনি সিনিয়র কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়েছেন। তাকে এনে লকআপে রাখা হয়। পরে তাকে জোরপূর্বক লম্বা ছুটিতে পাঠানো হয়। এ সময় মনোজ তার চাকরির ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন।

ভিডিওটি হাজার হাজার ভিউ অর্জন করেছে এবং টুইটারে লোকেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, অনেকে পুলিশ বাহিনীর খারাপ খাদ্য দেয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে প্রশ্ন করেছে। কুমার টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেছেন যে তাকে "দীর্ঘ ছুটিতে" পাঠানো হয়েছে এবং তার চাকরি বিপদে পড়েছে। ‘আমি আমার কথায় অটল আছি। আমার বিরুদ্ধে কোন তদন্ত মুলতুবি নেই,’ তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা... আমাকে বদনাম করে এবং আমি মানসিকভাবে অসুস্থ বলে বর্ণনা তৈরি করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চান।’

তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে আমাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া করা হয়েছিল এবং একটি ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। আমার ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে এবং পুরো ডেটা মুছে ফেলা হয়েছে। এমনকি তারা আমাকে আগ্রার ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।’ সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ