Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রুশদির ওপর হামলার দায় অস্বীকার হিজবুল্লাহর

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২২, ২:০৯ পিএম

বুকারজয়ী বিশ্বখ্যাত ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ। স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, এ হামলার ব্যাপারে তাঁদের কাছে কোনো তথ্য নেই। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এসব বলেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হিজবুল্লাহ বলেছে, ‘আমরা এই আক্রমণের ব্যাপারে কিছুই জানি না। সুতরাং এ ব্যাপারে আমরা কোনো মন্তব্য করব না।’
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহকে সমর্থন দিয়ে থাকে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি ১৯৮৮ সালে সালমান রুশদিকে হত্যা করতে ফতোয়া জারি করেছিলেন। কারণ রুশদি তাঁর বই ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এ ইসলাম ধর্ম ও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। তখন তিনি বলেছিলেন, যিনি রুশদিকে হত্যা করতে পারবেন, তাঁকে ৩০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে।
এদিকে রুশদির ওপর সন্দেহভাজন হামলাকারীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ হামলার সন্দেহে আটক হাদি মাতারকে (২৪) জামিন না দিয়ে রিমান্ডে নিতে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
লেবাননের ইয়ারুন শহরের মেয়র আলী তেহফে বলেছেন, ‘হাদি মাতারের পরিবার দক্ষিণ লেবাননের ইয়ারুন শহরে বাস করত। একসময় তাঁর মা-বাবা যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন এবং সেখানেই মাতার জন্ম নেন ও বেড়ে ওঠেন।’
মাতার বা তাঁর বাবা-মা হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত বা সমর্থন করেন কি না, জানতে চাওয়া হলে তেহফে বলেছেন, ‘বাবা, মা ও হাদি মাতার বিদেশে বসবাস করায় তাঁদের রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনো তথ্য নেই।’
এদিকে ইরান সরকার সালমান রুশদির ওপর হামলার ব্যাপারে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রাজধানী তেহরানে কয়েক ব্যক্তি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, রুশদির ওপর হামলা হওয়ায় তাঁরা খুশি হয়েছেন। কারণ তাঁরা বিশ্বাস করেন, ১৯৮৮ সালে রুশদি ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লিখে ইসলাম ধর্মকে কলঙ্কিত করেছেন।
২৭ বছর বয়সী ডেলিভারিম্যান রেজা আমিরি বলেছেন, ‘আমি সালমান রুশদিকে চিনি না। কিন্তু আমি শুনে খুশি যে ইসলামের অবমাননা করার কারণে তার ওপর হামলা হয়েছে। যারা পবিত্র ধর্মের অবমাননা করে তাদের পরিণতি এমনই হওয়া উচিত।’
গত শুক্রবার নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে ছুরিকাঘাতের শিকার হন ৭৫ বছর বয়সী বিশ্বখ্যাত লেখক সালমান রুশদি। ঘটনার পরপরই তাঁকে হেলিকপ্টারে করে পেনসিলভানিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
১৯৪৭ সালের ১৯ জুন ভারতের তৎকালীন বোম্বে (বর্তমান মুম্বাই) শহরে জন্মগ্রহণ করেন সালমান রুশদি। ১৪ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাজ্যের চলে যান। কেমব্রিজের কিংস কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে দেশটির নাগরিকত্ব অর্জন করেন। একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কপিরাইটার হিসেবে চাকরি শুরু করলেও পরে উপন্যাস ও ননফিকশন লেখায় মনোযোগ দেন তিনি। ১৯৮১ সালে দ্বিতীয় উপন্যাস ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ লিখে বুকার প্রাইজ জেতেন। তবে, ১৯৮৮ সালে চতুর্থ উপন্যাস ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ লিখে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন। বইটিতে ইসলাম ধর্মের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে অবমাননা করা হয়েছে এবং নবুয়ত নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ এনে পরের বছর ইরানের তৎকালীন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খোমেনি সালমান রুশদিকে হত্যার ফতোয়া জারি করেন। সূত্র : আল জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ