Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সুইস ব্যাংকে জমা হওয়া টাকা সম্পর্কে তথ্য চায়নি বাংলাদেশ : ডিকাব টকে সুইস রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ড

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২২, ৬:৫৪ পিএম

বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে সুইস ব্যাংকে জমা হওয়া অর্থ সম্পর্কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য চায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়ার্ড। তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা অর্থের বেশির ভাগ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সুইস ব্যাংক বা কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি। বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ডিকাব টকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এ বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে করণীয় সম্পর্কে সম্ভাব্য সব তথ্য আমরা সরকারকে দিয়েছি। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি। ফলে বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে ওই তথ্য প্রতিবছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে এবং ওই অর্থ অবৈধপথে আয় করা হয়েছে কি না, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

সুইস রাষ্ট্রদূত নাতালি চুয়াড বলেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক বা এসএনবির ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫ দশমিক ৭০ টাকা হিসেবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। তিনি বলেন, তথ্য পেতে হলে কী করতে হবে, সে সম্পর্কে আমরা সরকারকে জানিয়েছি। কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি। আমরা আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দুই পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এ ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব এবং সেটি তৈরি করতে হবে। এটি নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছি।

নাতালি চুয়ার্ড বলেন, আমাদের ব্যাংকগুলো (সুইচ ব্যাংকসহ সে দেশের অন্যান্য ব্যাংক) অবৈধ অর্থ রাখার নিরাপদ স্থান নয়। বৈশ্বিক আর্থিক খাতে সুইস ব্যাংকগুলো বিভিন্ন ধরনের সংস্কার করেছে। নতুন ও উন্নত মানদ- তৈরি করছে এবং তারা অবৈধ অর্থ রাখার জন্য প্রলুব্ধ করে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত ৫৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। সুইজারল্যান্ড তার ব্যাংকে অবৈধ সম্পদ জমা করতে জনগণকে উৎসাহিত করে কি না জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত জানান, তার দেশ তা করেনি। সুইস ব্যাংকিং সিস্টেম বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত। সুইস ব্যাংক দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ অবদান রাখে।

সুইজ রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর দুই দেশের বাণিজ্য এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। সুইস সরকার ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে। আগামী দিনগুলোতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। গ্রিন জ্বালানী ও প্রযুক্তির প্রসারে সুইজ সরকার অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকটে সুইজারল্যান্ড সব সময় পাশে আছে। রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক ও নিরাপদে প্রত্যাবাসন সব সময় সুইজারল্যান্ড চেয়ে আসছি।

 

রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, সুইস সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ দেশে স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম সুইস সরকারের সহায়তায় হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মতো স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারলে এ দেশের জনগণ আরও বেশি উপকৃত হবে।

ডিকাব সভাপতি রেজাউল করিম লোটাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈন উদ্দিন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ