Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রযুক্তি যুদ্ধ: সরঞ্জাম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনের সেমিকন্ডাক্টর উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবতা যাচাইয়ের মুখোমুখি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ আগস্ট, ২০২২, ৮:০৫ পিএম | আপডেট : ৮:১১ পিএম, ৭ আগস্ট, ২০২২

চীনের সেমিকন্ডাক্টর স্বয়ংসম্পূর্ণতার অগ্রসরতা আরেকটি বাধার সম্মুখীন হতে পারে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনে তার সরঞ্জাম রপ্তানির সুযোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রযুক্তি যুদ্ধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কদিন আগেই চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে দেশের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন খাতে ভর্তুকি দিতে নতুন আইন পাস করেছে মার্কিন সিনেট। নতুন এ আইন চীনের সঙ্গে বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সহায়তা করবে। পাশাপাশি গাড়ি থেকে শুরু করে সব ধরনের বৈদ্যুতিক ও প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে যে ঘাটতি, সেটির সমাধানে সহায়তা করবে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জাম সরবরাহকারী ল্যাম রিসার্চ এবং কেএলএ কর্প নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১৪-ন্যানোমিটার এবং তার নিচে চিপ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো চীনে রপ্তানি জন্য কঠোর নিয়মের জন্য চাপ দিচ্ছে। যদি এটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়, তবে এটি ১০-এনএম এবং তার নিচে কভারিংয়ের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী নিষেধাজ্ঞা থেকে একটি বৃদ্ধি চিহ্নিত করবে।


নতুন বিধিনিষেধ এমন এক সময়ে আসছে যখন ওয়াশিংটন ডাচ সরকারকে চাপ দিচ্ছে দেশটির সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি এএসএমএল’কে চীনে কম উন্নত ডিপ আল্ট্রাভায়োলেট (ডিইউভি) লিথোগ্রাফি সিস্টেম রপ্তানি করা থেকে আটকাতে। এএসএমএল সিইও পিটার ওয়েনিঙ্ক সাম্প্রতিক একটি টেলিকনফারেন্সে এটিকে একটি রাজনৈতিক অবস্থান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।


বিশ্লেষকরা বলেছেন, সরঞ্জামের ওপর নিষেধাজ্ঞা বিস্তৃত হলে চীনের জন্য আমদানি করা চিপগুলোর ওপর নির্ভরতা হ্রাস করা কঠিন করে তুলতে পারে। কারণ এ জাতীয় সরঞ্জাম দেশটি খুব নিকট সময়ে তৈরি করতে সক্ষম হবে না। এগুলো চিপ উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য।


স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিক্সের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক শ্রাবণ কুন্দোজালা বলেছেন, এটি চীনভিত্তিক কারখানাগুলোর জন্য একটি বড় সমস্যা হতে পারে। তবে এই বিধিনিষেধগুলো কতটা বিস্তৃতভাবে প্রয়োগ করা হয় তা দেখার বিষয়।


তিনি বলেন, কারখানাগুলোর একাধিক বিক্রেতার কাছ থেকে সরঞ্জাম কেনার প্রয়োজন হয় এবং এমনকি একজন বিক্রেতার সমর্থন ছাড়া জিনিসগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।


সাংহাই-ভিত্তিক সেমিকন্ডাক্টর কনসালটেন্সি আইসিওয়াইজ’র গবেষণা প্রধান ওয়াং জিয়াওলং বলেছেন, মার্কিন এই পদক্ষেপ স্থানীয় কারখানাগুলোর জন্য সামনে আরও অসুবিধার সূচনা করবে, কারণ তাদের মূল সরঞ্জাম আমদানি করতে হয়।


ইতিমধ্যে, ল্যাম রিসার্চ এবং কেএলএ উভয়ই চীনের বাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) ভোক্তা বাজারে পরিণত করার পর এটিকে বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ চালক হিসেবে মূল্যায়ন করে। ল্যাম রিসার্চ শীর্ষ তিন মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সরঞ্জাম সরবরাহকারীর মধ্যে একটি।
২০২১ অর্থ বছরে ল্যাম রিসার্চ তাদের মোট ১৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আয়ের মধ্যে ৩৫ শতাংশ আয় করেছে চীনের মূল ভূখণ্ড থেকে। ২০২০ সালে ৩১ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ২২ শতাংশ বেড়েছে। আর কেএলএ ২০২১ অর্থ বছরে তাদের মোট ৬.৯২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের মধ্যে ২৬ শতাংশ আয় করেছে চীনের মূল ভূখণ্ডভিত্তিক গ্রাহকদের কাছ থেকে।


দুটি সংস্থাকে ২০২১ সালের মার্কিন আর্থিক প্রতিবেদনের আলোকে চীন-সম্পর্কিত ব্যবসার জন্য সামনের ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। যা রপ্তানি লাইসেন্স ছাড়া সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনের (এসএমআইসি) মতো সংস্থাগুলোর পণ্য এবং পরিষেবা সরবরাহ করার ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করেছে।


২০২০ সালের ডিসেম্বরে মার্কিন বাণিজ্য কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর নিষেধাজ্ঞার কারণে এসএমআইসি, চীনের বৃহত্তম কারখানা ইতিমধ্যেই ১০-এমএন এবং তার নিচে উন্নত প্রযুক্তির বিকাশ থেকে ২৮-এমএন এবং তার থেকে ওপরে পরিণত প্রযুক্তির দিকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন সিনেটে পাস হওয়া বিলে চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার অংশ হিসেবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার উন্নয়নে আগামী পাঁচ বছরে ১৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে। বিলটি নতুন আরও ১০-১৫ সেমিকন্ডাক্টর কারখানার অর্থায়নে সহায়তা করবে। সূত্র: সাউথ চায়না মনিং পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ