গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সরকার কর্তৃক অস্বাভাবিকভাবে দেশে জ্বালানি তেল ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। শনিবার (৬ আগস্ট) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনে থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের জনগণের যখন দিশেহারা, ঠিক সেই চরম দুঃসময়ে সরকার জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় মানুষের জীবন পরিচালনার ব্যয়ভার লাগামহীনভাবে বাড়বে। দেশের ইতিহাসে কখনোই জ্বালানি তেলের দাম একসঙ্গে এতটা বাড়ানো হয়নি। মুলত ক্ষমতাসীন সরকার তাদের দুর্নীতি ঢাকতেই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে। জ্বালানি তেলের মুল্য বৃদ্ধির ফলে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দেবে। শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হবে, ফলে আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। একদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি ওপর চাপ আরও বাড়বে। অন্যদিকে বেকারত্ব সমস্যা আরও প্রকট হবে। তিনি অনতিবিলম্বে জ্বালানি তেলের এই বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালেও বর্তমানে তেলের বাজার নিম্নমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে কেবল আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের জন্য সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর অযৌক্তিক ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এটা জনগণের সাথে চরম উপহাস ছাড়া কিছু নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ চরম সংকটের মুখোমুখি। বর্তমান সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে, জনগনের প্রতি তাদের কোন দ্বায়বদ্ধতা নেই। সরকারের ব্যার্থতায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি, হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও সন্ত্রাসে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আজ দূর্বিষহ। দেশের মানুষ এখনো করোনা মহামারির আঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি, তারা মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। সর্বোপরি দেশের সার্বিক অর্থনীতি আজ দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এই নৈরাজ্যকর অবস্থা চলতে পারে না। দেশের এই ক্রান্তিকালে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই।
ড. মাসুদ আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী জনগণের অধিকারের কথা বলে। রাজপথে সরকারের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে। ফলে এই ফ্যাসিস্ট সরকার জামায়াতের নেতা-কর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। জুলুম নির্যাতন করে জামায়াতে ইসলামীর কন্ঠরোধ করা যাবেনা বলে তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন। তিনি অবিলম্বে জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী সহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবী জানান। একইসাথে জ্বালানি তেলের মুল্য বৃদ্ধি সহ সরকারের গৃহীত সকল অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবী জানান। অন্যথায় রাজপথে গণআন্দোলনের মাধ্যমে দেশের জনগণ এই অবৈধ সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামতে বাধ্য করবে। তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, হাফিজুর রহমান, আব্দুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি আরিফুর রহমান, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।