গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশে নারীদের কর্মসংস্থানসহ নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের প্রকৃত পথ প্রদর্শক। তিনি আজ রাজধানীর দোয়েল চত্তর-সংলগ্ন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সম্মেলন কক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’র ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক’ প্রদানের বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের সকলকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সহধর্মিণী ও সহযোদ্ধা। বঙ্গমাতা বেগম মুজিব বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি পদক্ষেপে বঙ্গন্ধুকে সক্রিয় সহযোগিতা করেছেন ও প্রেরণা দিয়েছেন।
মহান স্বাধীনতা অর্জনে এই মহীয়সী নারীর রয়েছে গৌরাবজ্জ্বল ভূমিকা এ কথা উল্লেখ করে ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে রেখে গেছেন অনন্য ভূমিকা। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে দক্ষতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কুটির শিল্পসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রেও বঙ্গমাতার অবদান অনস্বীকার্য।
প্রতিমন্ত্রী এ সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেশপ্রেম, রাজনৈতিক দুরদর্শিতা, সাহসকিতা, ত্যাগ ও অনুপ্রেরণার উৎস বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’র ‘জন্ম-দিনটি’ স্মরণীয় রাখার লক্ষে সরকারিভাবে প্রতিবছর ৮ আগস্ট ‘ক’ শ্রেণির জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে।
এই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গমাতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করার লক্ষে প্রত্যেক বছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ক’ শ্রেণীভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক প্রদান করা হবে। এ বছর রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পাঁচ জন বিশিষ্ট নারীকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২’ প্রদান করা হচ্ছে।
সরকার এ বছর ‘রাজনীতি’র ক্ষেত্রে সিলেট জেলার সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, অর্থনীতিতে কুমিল্লা জেলার সেলিমা আহমাদ এমপি, শিক্ষা ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবা ক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জ জেলার মোছা. আছিয়া আলম এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য (যুদ্ধকালীন কমান্ডার) ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদকে ভূষিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
এ সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ৮ আগস্ট রাজধানীর আবদুল গণি রোডস্থ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’র ৯২ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ ও ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক’ প্রদান উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দিবেন। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। এছাড়াও, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত থাকবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব নিজ জীবনের কঠিন দুঃসময়েও অসহায় মানুষের আর্থিক সহায়তা করেছেন এবং তাদের পাশে দাড়িয়ে সাহস যুগিয়েছেন। বঙ্গমাতার এই মহানুভবতাকে স্মরণ করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বঙ্গমাতার জন্মদিনে অস্বচ্ছল নারীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সেলাই মেশিন ও আর্থিক অনুদান প্রদান করে আসছে।
এবছরও সাম্প্রতিক বন্যাকবলিত পাঁচটি জেলাসহ সারাদেশে অস্বচ্ছল ও অসহায় নারীদের প্রায় পাঁচ হাজার সেলাই মেশিন এবং পঞ্চাশ লাখ টাকা প্রদান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই দিনে একই সময়ে এ কার্যক্রমেরও শুভ উদ্বোধন করবেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গমাতার উপর তাঁর রচিত “শেখ ফজিলাতুন নেছা আমার মা” শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয, আগামী ৮ আগস্টের অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবন ভিত্তিক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: হাসানুজ্জামান কল্লোল, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব, শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব মোঃ মুহিবুজ্জামান, জাতীয় মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সাকিউন নাহার বেগমসহ ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।