নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
তাসকিনের করা ২৭ তম ওভারের শেষ বলে সিকান্দার রাজার ড্রাইভ, শর্ট কাভারে দাঁড়িয়ে থাকা বদলি ফিল্ডার তাইজুলের হাতে এসে পড়া ক্যাচটি ছেড়ে দিলেন। জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ তখন ৩ উইকেটে ১৩৫, আর রাজার ব্যক্তিগত রান ৪৩ । এরপর ৩৩তম ওভারের শুরুর বল, থার্ডম্যানে থাকা তাসকিন ছেড়ে দিলেন ৬৮ রানে ব্যাট করতে থাকা ইনোসেন্ট কাইয়ার ক্যাচ। ঠিক এই দুটাই ছিল ম্যাচের চেহরা বদলে দেওয়া মুহূর্ত। জীবন পাওয়া জিম্ববুইয়ান দুই ব্যাটসম্যানই পরে শতকের দেখা পেলেন, তাতেই ১৯ ম্যাচ পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের দেখা পেল জিম্বাবুয়ে। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে চার ব্যাটসম্যানের অর্ধশতকে ভর করে ২ উইকেটে ৩০৩ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। ১০ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখে সে রান টপকে যায় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে।
২০১৩ সালের পর জিম্বাবুয়ের সাথে হারের স্বাদ পাওয়া বাংলাদেশের ফিল্ডিং এদিন ছিল হতশ্রীতে ভরপুর। টাইগার ফিল্ডাররা গোটা ম্যাচে ক্যাচ ছাড়ে ৪টি। তা না হলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারতো। তিন শতাধিক রান তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই দুই ওপেনারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। ২ রান করা চাকাভার স্টাম্প ভাঙ্গেন মুস্তাফিজ। আরেক ওপেনার মুসাকান্দাকে ফেরান শরীফুল। সেখান থেকে মাধেভেরাকে সঙ্গী করে কাইয়া ৬৮ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়েন। মিরাজের রান আউটে এই জুটি থামলে ক্রিজে আসেন সিকান্দার রাজা। এসেই সাবলীল ব্যাটিং করতে থাকেন। ২১তম ওভারে দলীয় শতকের দেখা পায় স্বাগতিকরা। এই দুইজন মিলে গড়েন ১৭২ বলে রেকর্ড ১৯২ রানের জুটি। জীবন পাওয়ার পর ১১২ বলে দুই ৬ ও ১১ চারে করেন ১১০ রান। আর ১০৯ বলে ৬টি ছক্কা ও ৮টি চারে নিঃসন্দেহে ক্যারিয়ারের সেরা ১৩৫ রানের ইনিংস খেলেন রাজা।
এদিকে সিনের শুরুতে বাংলাদেশ বেশ সাবধানী শুরুই করে। প্রথম দশ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে তুলল ৫১ রান। প্রথম জুটিতে আসল ১১৯ রান। বাংলাদেশের ইনিংসের ২৪ তম ওভারের পঞ্চম বলে সিকান্দার রাজাকে ৪ হাঁকিয়ে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ৮০০০ রানের মেইলফলক স্পর্শ করলেন তামিম। টাইগার কাপ্তান ৮৮ বলে ৬২ করার পর হাত খুলতে গিয়েই রাজার যে বলে কাটা পড়লেন, তা মোটেই উইকেট নেওয়ার মতন বল ছিল না। লিটন দাশ যখনই আড়ষ্টতা ঝেড়ে নিজের স্বভাবসুলব ব্যাটিং শুরু করলেন তখনই শনির আঘাত। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে তাকে মাঠ ছাড়তে হলো স্ট্রেচারে চড়ে। যে আত্মবিশ্বাসের সাথে খেলছিলেন তাতে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ শতক কেবল সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল। ২০১৯ সালের পর আবারও ওয়ানডে খেলতে নামা বিজয় এই ম্যাচে ঝেড়ে ফেলতে পারলেন তার স্বার্থপরতার তকমা। প্রায় ১১৮ স্ট্রাইক্রেটে করলেন ৭৩ রান। বাকি দুই অভিজ্ঞ ক্যাম্পেইনার তামিম ও মুশফিকও পেলেন অর্ধশতকের দেখা।
এদিন বিজয় ও লিটনের ৪৫ বলে ৫২ রানের জুটি থামে লিটনের চোটে। লিটনের অর্ধশত আসে ৭৫ বলে। বাকি ১৪ বলে তিনি করেন ৩১ রান। ইনিংসটি খেলার পথে তিনি ৯টি চার ও ১টি ছক্কা হাঁকান। এরপর বিজয় ও মুশফিক মিলে ঘুরাতে থাকেন রানের চাকা। এই জুটি ৪ রানের জন্য শতকের ছোঁয়া পায়নি। দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে দলে ফিরে বিজয় প্রথমে ধীরস্থির ছিলেন। কিন্তু সময়ের সাথে ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝে হাত খুলেন এই কিপার-ব্যাটার। ৬ বাউন্দারিতে ৬২ বলে ৭৩ করেন তিনি। ছয়ের মার ছিল ৩টি। অনুদিকে মুশফিক ও রিয়াদ শেষ ২৫ বলে করেন ৩৫ রান। ৪৯ বলে ৫ চারে মুশি তুলেন ৫২ রান, আর রিয়াদের সংগ্রহ ছিল ১২ বলে ২০। অন্যদিকে জিম্বাবুয়ে যেভাবে ব্যাটিং করে জিতল তাতে ৩০৪ রানের টার্গেট খুবই মামুলি দেখাচ্ছিল। তবে ফিল্ডাররা যদি এধরনের বাজে নিদর্শন দিতে থাকেন তবে ভববিষ্যতে চারশো রানও মামুলি হয়ে দাঁড়াবে প্রতিপক্ষর জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।