নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অ্যাস্টন ভিলা ফুটবল ক্লাব (এভিএফসি)। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের একটি ঐতিহ্যবাহী পেশাদার ফুটবল ক্লাবের নাম। যে ক্লাবটির আজ থেকে প্রায় ১৪৮ বছর আগে আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৮৭৪ সালের ২১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা হয় অ্যাস্টন ভিলা এফসি’র। এই ক্লাবটি বর্তমানে ইংল্যান্ডের শীর্ষ স্তরের প্রিমিয়ার লিগে স্বগৌরবে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। অ্যাস্টন ভিলা তাদের সব হোম ম্যাচ খেলে থাকে অ্যাস্টনের ভিলা পার্কে। যে স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার ৭৪৯জন। বর্তমানে এই ক্লাবের কোচ-ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন স্টিভেন জেরার্ড এবং সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন নাসেফ সাউইরিস। অ্যাস্টন ভিলার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব হচ্ছে তাদের প্রতিবেশী বার্মিংহাম সিটি।
কমনওয়েলথ গেমসের ২২তম আসর কাভার করতে বার্মিংহামে এসে নানা ব্যস্ততার মাঝেও অ্যাস্টন ভিলা দর্শনে যাওয়ার লোভ সামলানো গেল না। এখানে আমার আবাসস্থল অ্যাস্টনে হওয়ায় কাজটা আরো সহজ হলো। কমনওয়েলথ গেমসের কাজের ফাঁকে সময় বের করে গত ৩ আগস্ট বিকালে হাজির হলাম অ্যাস্টন ভিলায়। বিশাল ভিলা এলাকায় প্রবেশ করতেই চোখে পড়েছে,‘চ্যাম্পিয়ন্স অব ইউরোপ ১৯৮২’- লেখাটি। ইউরোপিয়ান ক্লাব টুর্নামেন্টে সাফল্যের বছরটি স্টেডিয়ামের দেয়ালে খোদাই করে লিখে রেখেছেন অ্যাস্টন ভিলা কর্তারা। আজ থেকে ৪০ বছর আগে দলকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি এনে দেয়া ১১ ফুটবলারের ছবির সঙ্গে তাদের পরিচয়গুলো ফ্রেমবন্দী হয়ে আছে দেয়ালে। এতেই মনে পড়ে যায় ইংলিশ এই ক্লাবের ঐতিহ্য। ফুটবল স্টেডিয়ামের ঠিক পাশেই আছে ভিলা পার্ক। যেখানকার বাস্কেটবল কোর্টে প্রতিদিন বিকালে শিশু-কিশোররা মাতের বাস্কেটবল খেলায়। দারুণ মনমুগ্ধকর পার্কে শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য রয়েছে নানা উপকরণ। ভিলা পার্কের ভেতরে ফুটবল খেলার জন্য আছে অ্যাস্টন পার্ক স্পোর্টস পিচ। সবুজের গালিচা বিছানো মাঠ ও সুসজ্জিত। ঝকঝকে রঙিন গ্যালারির কারণে এ স্টেডিয়ামের ভেতরের পরিবেশটাকে করে তুলে আরো মনমুগ্ধকর। গ্যালারির একটি অংশ রাখা হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য। সবকিছুই যেন ছবির মতো দেখেই বোঝা যায় এখানকার সব কাজ করা হয়েছে পরিকল্পনামাপিক। স্টেডিয়ামের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানটি যেন আরেকটি মাঠ। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের চেয়ে বড় এখানকার পার্কিংয়ের জায়গা। তার পাশেই আছে অ্যাস্টন ভিলা একাডেমি। তবে এই একাডেমিটি শুধু প্রতিবন্ধীদের জন্য।
ইংল্যান্ডের সব ক্লাবেই আছে সুস্থ শিশু-কিশোরদেও পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের জন্য আরেকটি একাডেমি। তবে অ্যাস্টন ভিলার মূল একাডেমিটা হলো ট্রেনিং গ্রাউন্ডের সঙ্গে। বডিমুর হেলথ ট্রেনিং গ্রাউন্ডের পাশে আছে বিভিন্ন বয়সীদের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা। একাডেমিতে ৫ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন বয়সীরা ট্রেনিং করেন। যাদের চোখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন। মা এলিটা যে স্বপ্ন দেখছেন প্রতিবন্ধী ছেলে অ্যাটন হেনরিকে ঘিরে। ১৪ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা করতে আসেন এলিটা। সঙ্গে নিয়ে আসেন ১০ বছরের ছোট ছেলে ব্রডলিকে। বুধবার বিকালে অ্যাস্টিন ভিলা স্টেডিয়ামে প্রবেশের আগে একাডেমির বাইরে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই মন খুলে কথা বলেন এলিটা। প্রতিবন্ধী ছেলেকে ভবিষ্যতে বড় ফুটবলার বানাবার স্বপ্ন তার মতো দেখছেন আরো অনেক ইংলিশ মা।
বামিংহাম শহরে অ্যাস্টন ভিলা, বার্মিংহাম এফসি এবং ওয়েস্ট ব্রুমউইচ ক্লাব আছে। তবে অ্যাস্টন ভিলার প্রতিদ্ব›িদ্ব বার্মিংহাম এফসি খেলছে দ্বিতীয় স্তরে। সত্তর-আশি দশকে ইংলিশ ফুটবলে রাজত্ব করা অ্যাস্টন ভিলা প্রথম বিভাগ/প্রিমিয়ার লিগে যে সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তার শেষটি জিতেছিল ১৯৮০-৮১ মৌসুমে। পরের মৌসুমেই ইউরোপিয়ান কাপ জেতায় এই দলটি তারকাদের স্মৃতিগুলোও যত্নে রেখে দিয়েছে। নতুন প্রজন্ম সাফল্যের রংয়ে এখনো পর্যন্ত ভাসতে না পারলেও অ্যাস্টন ভিলার ম্যাচের দিন পুরো এলাকায় থাকে নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। তাই ভিলার রাস্তার দুপাশেই লেখা,‘ম্যাচ ডে পার্কিং রেস্ট্রিকেশন্স অ্যাপ্লাই’। অর্থাৎ খেলার দিন একমাত্র প্রেসিডেন্ট ছাড়া আর কারো গাড়ি পার্কিং করার অনুমতি নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে অ্যাস্টন ভিলার বড় কোনো সাফল্য নেই। সর্বশেষ মৌসুমে ২০ দলের লিগে ১৪তম হয়ে অবনমন এড়িয়েছে তারা। কোচ স্টিভেন জেরার্ড এবার দলে নিয়েছেন ব্রাজিলের ফিলিপে কুতিনহোকে। বার্মিংহামে তিনটি ক্লাব থাকলেও বেশিরভাগই অ্যাস্টন ভিলার সমর্থক। তাই নতুন মৌসুমে দলের কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা তাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।