Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২০৫০ সালে দেশে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যাবে না

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:১৭ পিএম

কৃষি খাতের শ্রমিকের কাজের মজুরি বেড়ে যাওয়াসহ নানাবিধ কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে এ খাতে কোনো শ্রমিক খুঁজে পাওয়া যাবে না। পাশাপাশি হারিয়ে যেতে পারে পারিবারিক খামারও। বাংলাদেশ গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল বুধবার ‘ডিস-অ্যাপিয়ারেন্স অব দ্য বেঙ্গলি ফ্যামিলি ফার্ম’ শীর্ষক ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের বাথ ইউনিভার্সিটির সোশ্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. জিওফ উড।
গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশের কৃষির বড় অংশ নিয়ন্ত্রিত হয় বাণিজ্যিক কৃষি খামারিদের মাধ্যমে। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে একটা বড় সমস্যা ছিল খাদ্যে নিরাপত্তাহীনতা। ২০৫০ সালে দেশ থেকে হারিয়ে যেতে পারে কৃষিশ্রমিক। এর পাশাপাশি পারিবারিক খামারও হারিয়ে যেতে পারে। পারিবারিক কৃষি মানে পরিবারভিত্তিক কার্যক্রম এবং এটি গ্রামীণ উন্নয়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
অধ্যাপক উড বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় পারিবারিক খামার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিশ্বায়নের ফলে কৃষিজমি কমে ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে পারিবারিক কৃষি খামার। কৃষিতে নতুন বৈচিত্র এসেছে। সনাতন পদ্ধতির স্থলে জায়গা করে নিয়েছে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ।
তিনি বলেন, ‘আমরা যে কৃষিকে চিনতাম আশির দশক থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত, তার মধ্যে একটা বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আগে কৃষক যেভাবে নিজের জমি নিজে চাষ করতেন, সেই সনাতনি চরিত্র নেই। ’
তিনি আরো বলেন, তবে এখানে তিন ধরনের সম্ভাবনা আছে। তার মধ্যে একটা হলো, ফার্মগুলো ভেঙে যাবে, দ্বিতীয় এর পরিবর্তনে বড় বাণিজ্যিক খামারের জন্ম হবে। তৃতীয় হলো সনাতনি রূপটা থাকবে না, আবার বাণিজ্যিকও থাকবে না; এর মাঝামাঝি কিছু একটা থাকবে। তবে এখানে কৃষকের জায়গাটা নেবে সার্ভিস প্রভাইডাররা। এতে কৃষক পুরোপুরি কৃষি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
অধ্যাপক উডের গবেষণায় উঠে এসেছে বাণিজ্যিক কৃষির কারণে কিভাবে কৃষকরা প্রভাবিত হয়। গবেষণায় বলা হয়, চাষাবাদের মৌসুমে কৃষি খামারিদের ভয়ের বিষয় এসে দাঁড়ায় সন্ত্রাস। এটা বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি।
দেশের বিশিষ্ট কৃষি অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার বলেন, ‘পরিবারভিত্তিক যে কৃষি, তা হারিয়ে যাচ্ছে। আগে দেখতাম, অনেক ধনী কৃষক নিজের জন্য ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি অন্যের জন্যও ফসল ফলাতেন। একদিকে জমি খণ্ড খণ্ড হচ্ছে, অন্যদিকে এ খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা আসছে। বিশেষ করে গ্রামীণ তরুণরা কৃষিজমিতে কাজ করছে। ’ ছোট জমিতে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রসঙ্গে কৃষি অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমরা মনে করছিলাম, যন্ত্র ব্যবহার করতে হলে বড় জমি লাগবে। তবে আমি বাংলাদেশে একটা ভিন্নতা দেখছি। ’
বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষি

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ