পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শত শত কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অগ্রণী ব্যাংকের মহা-ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মোল্লাসহ তিন জনকে দায়মুক্তি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ‘জাবের অ্যান্ড জোবায়ের’, ‘ডলি কনস্ট্রাকশন’, ‘সোনালী টেক্সটাইল’ এবং ‘জজ ভুইয়া (জেবি) গ্রুপকে নামমাত্র জামানতের বিপরীতে ঋণ প্রদানের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরিপূর্ণ অনুসন্ধান না করেই সংশ্লিষ্টদের দায়মুক্তি দেন ইকবাল মাহমুদ নেতৃত্বাধীন বিগত কমিশন।
দুদক সূত্র জানায়, অগ্রণী ব্যাংকের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার এবং ক্রেডিট ডিভিশনের প্রধান ছিলেন আব্দুস সালাম মোল্লা। এ পদে দায়িত্ব পালনকালে স্বল্প মূল্যের সম্পত্তি জামানত নিয়ে তিনি বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানিকে ঋণ লাভের ব্যবস্থা করে দিতেন। জাবের অ্যান্ড জোবায়ের (নোমান গ্রুপ)র নির্বাহী পরিচালক আবুল কাসেম এবং মো. রকিবুল ইসলাম তার এ কাজে সহযোগিতা করেন Ñমর্মে উল্লেখ ছিলো অভিযোগে। বিশেষ একটি জেলায় বাড়ি হওয়ার সুবাদে সালাম মোল্লা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতেন। পাস করিয়ে নিতেন বড় বড় ঋণের প্রস্তাব। এভাবে অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থে তিনি স্ত্রী-পরিবারের সদস্যসহ নামে Ñবেনামে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন।
অভিযোগ মতে, বর্তমানে অবসরোত্তর ছুটিতে থাকা আব্দুস সালাম মোল্লার সম্পদের পরিমাণ অঢেল। এর মধ্যে রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১০ কাঠা জমির ওপর বহুতল বাড়ি, রাজধানীর গুলশানে যথাক্রমে: ২৫০০, ২৮০০ এবং ৩ হাজার বর্গ ফুটের ৩টি ফ্ল্যাট। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ৫ নং রোডে একটি বাড়ি রয়েছে। এটি তার শ্বশুরের নামে কেনা। যমুনা ফিউচারপার্কে আব্দুস সালাম মোল্লা তার স্ত্রী সালমা সুলতানার নামে কিনেছেন ৬/৭টি দোকান। এইচএসবিসি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে স্ত্রী এবং শ্যালিকার নামে রয়েছে ১০/১৫ কোটি টাকার এফডিআর। বাড়ি নং-৩৩, রোড-০১, ব্লক সি, বনশ্রী আবাসিক এলাকার নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন।
অভিযোগটি সুনির্দিষ্ট হওয়ায় দুদকের বাছাই কমিটি অনুসন্ধানের সুপারিশ করে। কমিশন বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ব্যাংক থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর রেকর্ডপত্র তলব (স্মারক নং ০০.০১.০০০০.৪০৪.০১.০০৮.১৯.৪৫৯০২) করা হয়।এর মধ্যে ছিল অগ্রণী ব্যাংক লোকার অফিস শাখার গ্রাহক ‘জাবের অ্যান্ড জোবায়ের’(নোমান গ্রুপ) ডলি কনস্ট্রাকশন, সোনালী ট্রেক্সটাইল, জজ-ভুইয়া গ্রুপ‘র চলতি হিসাব খোলার আবেদন, ছবিসহ নমুনা স্বাক্ষর কার্ড, কেওয়াইসি ফরম, টিপি, প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে ঋণ প্রাপ্তির আবেদন, আবেদনের ওপর ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন, গ্রাহকের সিআইবি রিপোর্ট, ঋণ মঞ্জুর সংক্রান্ত সুপারিশ, ঋণ মঞ্জুর সংক্রান্ত প্রধান কার্যালয়ের মঞ্জুরিপত্র, ঋণ প্রদান সংক্রান্তে গৃহিত জামানত এবং জামানতের মূল্যায়ন প্রতিবেদন। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে প্রদত্ত ঋণের খাতওয়ারি রেকর্ডপত্রসহ বিবরণ, এসওডি, এফডিবিপি, ব্যাংক টু ব্যাক এলসি, পিএডি, ঋণ হিসাব বিবরণী এবং সুদ-আসলসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান স্থিতি। প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে বিভিন্ন অনিয়ম ও ঋণদান বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংক লি:র অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্ট। এসব রেকর্ডপত্র হস্তগত করার পর দুদক ঋণ জালিয়াতি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে আব্দুস সালাম মোল্লাসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ৩ জনকে দায়মুক্তি দেয় সংস্থাটি। অভিযোগটি অনুসন্ধান করেন দুদকের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে ওইসময় পর্যন্ত ঋণের কোনো অর্থ স্থানান্তর হয়নি। আত্মসাতেরও প্রমাণ মেলেনি। আমি তাই প্রতিবেদনে নথিভুক্তির সুপারিশ করি। ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগও ছিল। সেটির কোনো অনুসন্ধান হয়েছিলো কি-না’ Ñজানতে চাওয়া হলে শাহজাহান মিরাজ ফোন কেটে দেন।
এদিকে দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিগত কমিশন আমলে অদৃশ্য হাতের ইশারায় সালাম মোল্লাসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দেয়া হয়। যে কারণে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে ঋণ জালিয়াতিসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকেও দায়মুক্তি দেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।