পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভাগী শহর, জেলা শহর ও উপজেলা শহরগুলোতে হাজার হাজার বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। সারা দেশে এসব বিলবোর্ড গিলে খাচ্ছে শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। অথচ এসব বিলবোর্ডের পরিসংখ্যানে কোনো তথ্য নেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে রাত ৮টার মধ্যেই মার্কেট, শপিংমল, দোকান বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। অতঃপর পিক আওয়ারে বৈদ্যুতিক বিলবোর্ড বন্ধ রাখতে দির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু এখনো রাজধানীসহ সারা দেশে শত শত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চটকদারী বিজ্ঞাপনী এই বিলবোর্ড বন্ধ করা হয়নি। সন্ধা ৬টা বাজলেই এসব বিল বোর্ডে আলোর ঝলক দেখা যাচ্ছে। আবার অনেক বিজ্ঞাপনী সংস্থা লাখ লাখ সরকারি টাকার বিদ্যুৎ বিল পারিশোধ করেনি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আলোসজ্জা না করার সংক্রান্ত নির্দেশনাসহ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে এরই মধ্যে জারিকরা নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে ডিসি ও ইউএনও দের বলা হয়েছে।
রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে শত শত বাড়ি এবং ভবনের ছাদে বিজ্ঞাপন বোর্ডের প্রচলন শুরু হয়েছে দু’দশকেরও বেশি সময় আগে। অথচ এতদিন পর্যন্ত রাজউক এ বিষয়ে আমলে নেয়নি। আবাসিক/অনাবাসিক যে কোনো ভবনের ছাদে বিজ্ঞাপনী ফলক বা ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপনের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এখনো পর্যন্ত কোন নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারেনি। এদিকে কি পরিমান বিল বোর্ডে রয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান নেই দুই সিটিতে।
গত ২৪ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, প্রধান তথ্য অফিসার, সব জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) কাছেও নির্দেশনার চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় কার্যপত্রে বলা হয়, নিজ এবং আওতায়ভুক্ত দপ্তর, সংস্থা এবং কার্যালয় গুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। রাত ৮টার পর দোকান-পাট, শপিংমল, মার্কেট, বিপণী বিতান, কাঁচাবাজার ইত্যাদি বন্ধ রাখার পূর্বঘোষিথ সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা, মসজিদ, শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ও অন্যান্য বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এসি’র তাপমাত্র ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর উপরে রাখা, সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত দপ্তরসহ দোকান পাট, পেট্রোল পাম্প, ও সিএনজি গ্যাস ষ্টেশনসহ অন্যান্য বানিজ্যক ভবনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে অপ্রয়োজনে বাতি ও এসির ব্যবহার না করা। পিক আওয়ারে বৈদ্যুতিক বিলবোর্ড গুলো বন্ধ রাখা, ইজিবাইক, অটোরিক্সা ইত্যাদি অবৈধভাবে চার্জিং বন্ধ করা এবং রাত ১১ পরে চাজিং করা।
বিলবোর্ড পাড়া’ বললে ভুল হবে না নগরীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেট ও শাহবাগ। শত শত বিলবোর্ড সাঁটানো থাকে এসব এলাকায়। সড়কের পাশে খুঁটির ওপরে এমনকি বড় বড় দালানো শোভা পায় দেশি-বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির বিলবোর্ড। এখন বিলবোর্ডমুক্ত করা হয়েছে এ বিলবোর্ড পাড়া। এমনকি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্বলিত কোনো বিলবোর্ডও চোখে পড়েনি। নগরীর আগারগাঁও চন্দ্রিমা উদ্যান লেকের কাছে গোলচত্বর, বিজয় সরণি মোড়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়কেও কোনো ধরনের বিলবোর্ড চোখে পড়েনি। বিলবোর্ড পাড়া হিসেবে পরিচিত ফার্মগেট এলাকায় এখন ঝুঁলছে বিলবোর্ড সাঁটানোর অবকাঠামো, যেমন লোহার বিশাল খুঁটি ও রডের তৈরি গার্ডার। ফার্মগেটে দালানের ওপরেও এসব অবকাঠামো রয়েগেছে।
গতকাল সরেজমিনে রাজধানীর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড, শাপলা মোড়ের করিম পেট্রোল পাম্পের বিলবোর্ডে চলছে আলোকসজ্জা তা যেন দেখার কেউ নাই। ফার্মগেট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইলিয়াস বলেন, সরকারি অফিসে গুলোতে বিল বোর্ড আছে। মেন বিমানের বিল দিনরাত জলছে। শাহবাগ মোড়ের চা বিক্রেতা হানিফ বলেন, সিটি কর্পোরেশন অনেক বিল বোর্ডে ভেঙ্গে দিয়েছে তারপর কয়েকটা আছে।
জানা গেছে, পণ্য প্রচারের জন্য গোটা পৃথিবীটাই আজ বিজ্ঞাপনময় বা বিজ্ঞাপন কেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। কোথায় নেই বিজ্ঞাপন? এই বিজ্ঞাপন বিপ্লবের যুগে বিশ্বের যে কোন পণ্য সম্পর্কে মানুষ চট করেই জেনে যাচ্ছে বিস্তারিত তথ্য। ক্রেতা-বিক্রেতা এবং পণ্য উৎপাদনকারীদের প্রধান মাধ্যম এই বিজ্ঞাপন শিল্প। গোটা বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে পিছিয়ে নেই দেশও। টিভি, রেডিও, পত্রিকা, পথের পাশে বিলবোর্ড, দেয়াল, বাসের বডি, বাড়ীর ছাদ, সুউচ্চ ভবনের ছাদ, ওভার ব্রিজের পিলার, গাছপালা, লাইট পোস্ট, সবখানে ছেয়ে গেছে বিজ্ঞাপন। পণ্যটি খারাপ কিংবা ভালো যাই হোক না কেন তাকে ক্রেতার সামনে তুলে ধরতে চলে আকর্ষণীয় কলা Ñকৌশলের প্রতিযোগিতা। সারাক্ষণ চেষ্টা থাকে কত ভালো স্থানে পণ্যের বিজ্ঞাপনটি দেয়া যায়। কত বেশি সংখ্যক ক্রেতার নজর কাড়া যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিলবোর্ড স্থাপন করা যায়। গত কয়েক বছরে ঢাকা শহরে রাস্তার দু’পাশে, ভবনের দেয়ালে, বিভিন্ন আবাসিক বাণিজ্যিক ভবনের ছাদেও বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড রয়েছে। দেশি-বিদেশি নানা ব্র্যান্ডের পণ্যের আকর্ষণীয় রং বেরংয়ের চটকদার বিলবোর্ডগুলো নগরীর প্রতিটি এলাকায় শোভা পাচ্ছে। মাত্র কয়েক দিন পুর্বে পত্রিকায় দেখলাম-সামান্য ঝড়ের কারনে তেজগাঁও এলাকায় একটি বিল বোর্ড ভেঙ্গে ২ জন নিহত এবং ৫ জন আহত। ঝড়ের সময় অনেকজন পথচারী ঐ বিল বোর্ডের নীচে আশ্রয় নিয়েছিল।
রাজধানীর বনানী, গুলশান ও ধানমন্ডি বিলবোর্ড ব্যবসায়ে সবচেয়ে দামী এলাকা হিসেবে পরিচিত। এসব এলাকার প্রধান সড়কের ওপর যেসব ভবন রয়েছে তার মালিকরা ভবনের ছাদ ভাড়া দিচ্ছেন চড়া দামে। বাণিজ্যিক কিংবা আবাসিক ভবন যাই হোক না কেন এগুলোর একেকটির ছাদে বিজ্ঞাপন বোর্ড স্থাপনের জন্য ভবন মালিকপক্ষ বছরে ৪-৭ লাখ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। প্রধান সড়ক ছাড়াও ভেতরের সড়কের সুউচ্চ ভবনের ছাদ-যা দূর থেকেও নজরে পড়ে, এমন ছাদের ভাড়াও মাসে ২-৩ লাখ টাকা হয়। অন্যদিকে বাণিজ্যিক এলাকা তেজগাঁও, মহাখালী, কারওয়ানবাজার, মতিঝিলসহ বাংলামোটর, ইস্কাটন, মগবাজার, মালিবাগ, কাকরাইল, নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন এলাকায় ভবনের ছাদের ভাড়া নির্ধারিত রয়েছে ২-৪ লাখ টাকা পর্যন্ত। নগরীর পুরানো এলাকাও এই ছাদ ব্যবসায় পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন রাস্তার পাশে কিংবা কর্ণার প্লটের ভবন সমূহের ছাদ ভাড়া খাটছে ৩০ হাজার-১ লাখ টাকায় । সিটি কর্পোরেশনের বিজ্ঞাপন ও সৌন্দর্যায়ন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা শহরে বর্তমানে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী মোট ১৮০০টি ভবনের ছাদ ভাড়া খাটছে। যা ডিসিসির তালিকাভুক্ত রয়েছে। কিন্তু এর বাইরেও বহু ভবনের ছাদ রয়েছে যা ডিসিসির অনুমোদন ছাড়াই ভাড়া দেয়া হচ্ছে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) নগর পরিকল্পনাবিদ (চলতি দায়িত্ব) মো. আশরাফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, বিষয় নিয়ে একটি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে। তবে রাজউক এ ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু করবে। সিটি কর্পোরেশনের নিয়ম মোতাবেক, বিজ্ঞাপনী ফলক স্থাপনের জন্য অবশ্যই ডিসিসির অনুমতি লাগবে। সেক্ষেত্রে ভবন মালিক কিংবা বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান বছরে একটি নির্দিষ্ট হারে মডেল ট্যাক্স বা ডিসপ্লে ট্যাক্স ডিসিসিকে দেবে। এই ট্যাক্স বা কর নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৫০ টাকা হারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।