Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একটি ভুল পদক্ষেপেই নিশ্চিহ্ন হওয়ার ঝুঁকিতে বিশ্ব: গুতেরেস

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ আগস্ট, ২০২২, ১২:২২ পিএম

বিশ্বনেতাদের একটি ভুল সিদ্ধান্তে পারমাণবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে বর্তমান প্রেক্ষাপটে পারমাণবিক যুদ্ধ বাধলে মানবজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) স্বাক্ষর করা দেশগুলোর এক সম্মেলনের উদ্বোধনীতে সোমবার ওপরের মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। পরমাণু যুদ্ধ কোনো সঙ্কটের সমাধানে বয়ে আনতে পারে না বলে সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সম্মেলনে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়েছেন অন্যান্য বিশ্বনেতাও।

বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রসার ঠেকাতে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে আয়োজিত এক সম্মেলনে যোগ দেন পরমাণু অস্ত্র বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে সই করা ১৯০টির বেশি রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। এ সময়, পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, বিশ্বনেতাদের একটি ভুলে মুহূর্তেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে মানবজাতি। পারমাণবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে সবাইকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমরা সত্যিই ভাগ্যবান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ববাসীকে আর কোনো পারমাণবিক বিপর্যয় দেখতে হয়নি। কোনো অবস্থাতেই পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার কোনো কৌশল হতে পারে না। বিভিন্ন রাষ্ট্র বর্তমানে যেভাবে একে অপরকে পারমাণবিক হামলার হুমকি দিচ্ছে তা মানবজাতির জন্য আশঙ্কাজনক। আমাদের একটি ভুলেই গোটা মানবজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।’

সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, কোনো অবস্থাতেই পরমাণু অস্ত্র সঙ্কট সমাধানের হাতিয়ার হতে পারে না। পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বানও জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পরমাণু চুক্তিতে ফেরা যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের এ পর্যন্ত নেয়া সেরা সিদ্ধান্তগুলোর একটি। আমি বিশ্বাস করি, কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়, পরমাণু ক্ষমতাধর অন্যান্য রাষ্ট্রের নেতারাও একবাক্যে স্বীকার করবেন, পারমাণবিক যুদ্ধে কেউ জয়ী হয় না। এটি কখনোই কোনো সংকটের সমাধান বয়ে আনতে পারে না।

এছাড়া সম্মেলনে পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবকসহ অন্যান্য বিশ্বনেতা। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এ চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা জানান ইউক্রেনীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সঙ্কটের পরে ১৯৬৮ সালে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি হয়। বলা হয়, ওই ঘটনার মাধ্যমেই বিশ্ব পারমাণবিক যুদ্ধের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। এনপিটি চুক্তির লক্ষ্য আরো বেশিসংখ্যক দেশে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে কাজ করা। পাঁচটি বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তিসহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ এনপিটিতে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু চারটি রাষ্ট্র স্বাক্ষর করতে রাজি নয়। ওই চারটি রাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র আছে বা আছে বলে সন্দেহ করা হয়। এরা হচ্ছে ভারত, ইসরাইল, উত্তর কোরিয়া ও পাকিস্তান। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ