Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের ‘জিরো কোভিড’ নীতির ধাক্কা সামলাচ্ছে উহান

উহানে চীনের ‘জিরো কোভিড’ নীতির ধাক্কা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০২২, ৬:৪৫ পিএম

চীনের জিরো কোভিড নীতির কঠোর পদক্ষেপের কারণে করোনা ভাইরাসের ‘মূল উৎসস্থল’ উহান আবার শাটডাউন হয়ে গেছে। কারণ সম্প্রতি উপসর্গবিহীন চারজন নতুন রোগী শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে উহানে।

তা ছাড়া বিশ্বে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রাথমিক তদন্তের তদারকি করা চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের প্রধান জর্জ গাওস পদত্যাগ করেছেন। তিনি পাঁচ বছর ধরে ওই পদে ছিলেন।
কোভিড-১৯ এর নতুন যে ধরনে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে সেটি সম্পর্কে কেউই নিজের থেকে কিছু বলছে না। এটি আসলে ডেল্টার মতো অতিসংক্রামক কিংবা কম সংক্রামক বা প্রাণঘাতী নয় এ ব্যাপারে কেউ মন্তব্য করছে না। তবে চীনে সর্বশেষ লকডাউন ঘোষণার পর দেশটির জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েক মাস ধরে চলা লকডাউনের কারণে মানুষ যে ট্রমার মধ্যে চলে গিয়েছিল তা থেকে কেবল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে তারা। কমিউনিস্ট জাতি এখনও তার শূন্য কোভিড নীতি ছেড়ে দিতে অস্বীকার করে।
উহানের জিয়াংজিয়া জেলা প্রাথমিকভাবে তিনদিনের জন্য শাটডাউন করে দেওয়া হয়েছিল। তবে তার মধ্যে এমন ইঙ্গিতও ছিল যে যদি নতুন রোগী শনাক্ত অব্যাহত থাকে তবে শাটডাউন বাড়ানো হতে পারে। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ তাদের ঘরে বন্দী হয়ে পড়ে। অফিস, বিনোদনের কেন্দ্র, ক্লিনিক, কৃষিপণ্যের বাজার, রেস্তোরাঁ সব বন্ধ।
সমস্ত উপাসনালয় তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে এবং পর্যটকদের চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস, পাতাল রেল পরিষেবা থেকে শুরু করে সমস্ত গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বাসিন্দাদের একেবারে প্রয়োজন না হলে জেলা ত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। আরও চারটি পাড়াকে ‘মাঝারি-ঝুঁকি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যার অর্থ সেখানকার বাসিন্দারা তাদের কম্পাউন্ড ত্যাগ করতে পারবেন না।
এদিকে, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন থেকে জর্জ গাও পদত্যাগ করায় শুধু করোনার বর্তমান ধরন নয় ভবিষ্যতেও ভাইরাস মোকাবিলার পরিকল্পনার বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কেন্দ্রটিকে ‘একচেটিয়া কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত’ জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং সংস্কারের জন্য মহামারি যুগের আহ্বানের জন্ম দিয়ে একটি ‘নতুন নামমাত্র সুবিন্যস্ত ব্যুরো’ এর মধ্যে রাখা হয়েছে।
সিএনএন জানিয়েছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত গাও (৬০) নানজিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন সভাপতি শেন হংবিং যিনি বর্তমানে ২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত নতুন ব্যুরো রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জাতীয় প্রশাসনের সহ-পরিচালকের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
করোনাভাইরাসে উৎস নিয়ে তদন্ত নিয়ে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার সময় গাও সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তদারকি করেছেন। যদিও তদন্তে করোনার উৎস সম্পর্কিত তথ্য চীন গোপন করেছে বলে অভিযোগ আছে।
গাও ২০১৪ সালে ইবোলা প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে সিয়েরা লিওনে কাজের জন্য পরিচিত ছিলেন। যখন তিনি চীনের সিডিসির উপ-পরিচালক ছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে পরিচালকের দায়িত্ব নেন।
সিএনএন প্রতিবেদন করেছিল যে, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নেওয়ার আগে এর উৎসস্থল বলে পরিচিতি উহান সফরে চীনের যেসব শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে একজন ছিলেন গাও। স্থানীয় কর্মকর্তারা বিষয়টিকে প্রাদুর্ভাব বলে ঘোষণা করলেও চীন সেসময় যে ভূমিকা নিয়েছিল তার জন্য সমালোচিত হয়েছে।
গাও এর আগে চীন তার জিরো কোভিড নীতি শিথিল করতে পারে এমন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছিলেন। এই নীতিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ব্যক্তিগত নির্দেশ হিসেবেই দেখা হয়। সূত্র : এএনআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ