মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মিয়ানমারে চার গনতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্টের মৃত্যদণ্ড কার্যকরের পর দেশটির জান্তা সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ আরও বাড়াতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই চার গণতন্ত্রপন্থীর মৃত্যুর পর মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘও।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, অন্য কোন দেশের চেয়ে মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক বেশ ভালো। তাই একমাত্র চীনই পারে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে। তবে চীন ছাড়াও বাকি দেশগুলোর প্রতিও একই আহ্বান জানিয়েছেন প্রাইস, যাতে তারা তাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করে মিয়ানমারকে গণতন্ত্রের পথে ফিরিয়ে আনতে ও দেশটির জনগণের জন্য কাজ করার চেষ্টা অব্যহত রাখে।
নেড প্রাইস জানান, অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের ওপর যে আর্থিক ও কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল, তা আদতে যথেষ্ট ছিল না। প্রাইস বিশ্বনেতাদের মিয়ানমারের প্রতি আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রও তার দিক থেকে যা করা প্রয়োজন তা করবে।
মিয়ানমার সে পর্যায়ে সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাতে মার্কিন সরকার, দেশটির সঙ্গে কোনরকম বাণিজ্যে যাবে না বলেও উল্লেখ করেছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র।
সেইসঙ্গে তিনি বাকি দেশগুলোকেও মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। প্রাইস বলেন, ‘আমরা সকল দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তারা মিয়ানমারের কাছে কোন ধরণের অস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম বিক্রি না করে।’ নেড প্রাইস এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের কাছেও সহযোগীতা চেয়েছেন, যাতে জোটটি মিয়ানমার জান্তার সঙ্গে সম্পর্কিত কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলকে কোন সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সুযোগ না প্রদান করে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা গত ২৫ জুলাই এক ঘোষণায় চার গনতন্ত্রপন্থী অ্যাক্টিভিস্টের মৃত্যদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি বিশ্বের সামনে প্রকাশ করে। দেশটির গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম কোন মৃত্যদণ্ড কার্যকর হওয়ার ঘটনা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, মৃত ওই চার ব্যক্তি হলেন, ফিয়ো জেয়া থ (৪১), কিয়াও মিন ইউ ওরফে কো জিমি (৫৩), হ্লা মিও আউং এবং আউং থুরা জও। এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে খুবই গোপন বিচারপদ্ধতির মাধ্যমে, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
এইচআরডব্লিউ এর সূত্রমতে- কাউন্টার-টেরোরইজম আইন-২০১৪ এর অধীনে ফিয়ো জেয়া থ এবং কিয়াও মিন ইউ ওরফে কো জিমির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারির ২১ তারিখে এবং হ্লা মিও আউং এবং আউং থুরা জও’কে সামরিক বাহিনীর এক সোর্সকে খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের এপ্রিলে।
এদিকে, এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া বিষয়ক প্রধান এলাইন পিয়ারসন এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনাকে মিয়ানমার জান্তার চুড়ান্ত নিষ্ঠুরতা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘অ্যাক্টিভিস্ট কো জিমি এবং বিরোধীদলের আইনপ্রণেতা ফিয়ো জেয়া থ এর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি চরম অন্যায় এবং রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর তাদের ফাঁসির বিষয়টি যে ওই চারজনের পরিবারকেও জানানো হয়নি, তারা এটা জেনেছে জান্তা বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ করার পর, এটিও মিয়ানমার জান্তার একটি বড় ব্যর্থতা।’
জাতিসংঘের হিউম্যানিটেরিয়ান অ্যাফেয়ার্স সমন্বয় কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সশস্ত্র সংঘাত এবং পরবর্তীতে সীমান্তের ভেতরে এবং সীমান্ত জুড়ে জনসংখ্যার বাস্তুচ্যুতি বাড়িয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব মিয়ানমারে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে এবং বেশ কয়েকটি এলাকায় তাতমাডাও এবং জাতিগত সশস্ত্র সংগঠন বা পিপলস ডিফেন্স ফোর্স এর মধ্যে সংঘর্ষের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে, ওইসব অঞ্চলে সামরিক জান্তা নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন অব্যাহত রেখেছে এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহারও বাড়িয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।