পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শ্রমিক-কর্মচারীদের ১১০ মামলা প্রত্যাহার করা হলেও নোবেল বিজয়ী একমাত্র বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ টেলিকম’ পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আর এই অনুসন্ধানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থার সচিব মো. মাহবুব হোসেন। দুদক সব ধরনের মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত করতে পারবেÑ এমন ঘোষণার ৩ দিন পর এ সিদ্ধান্তের কথা জানালো সংস্থাটি। দুদক সচিব বলেছেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ বিতরণ না করে আত্মসাৎ ও প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকম পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তিনি বলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সম্বলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠান। ওই অভিযোগ সম্বলিত প্রতিবেদন কমিশন পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের ৫ শতাংশ অর্থ লোপাট। শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধকালে অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফি’র নামে ৬ শতাংশ অর্থ কর্তন। শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দকৃত সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ।
উক্ত কোম্পানি থেকে ২ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং-এর উদ্দেশ্যে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশন অনুসন্ধান শুরু করেছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ হওয়ার পরে আপনারাই জানতে পারবেন এর সাথে কে কে সম্পৃক্ত।
আরেক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানকালে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা অবশ্যই গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবে। অনুসন্ধানের সময় তিনি বিধিবিধান অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ টেলিকম’র পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে একজন পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করছে দুদক। উক্ত টিম রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে।
এর আগে গত ২৩ মে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কর্মচারীদের পৃথকভাবে দায়েরকৃত ১১০ মামলা প্রত্যাহার করে নেন মামলার বাদীগণ। এর মধ্যে ৬টি মামলা চলমান রয়েছে হাইকোর্টে। ১০৪টি মামরা শ্রম আদালতে। শ্রমিকদের দাবিকৃত ৪৩৭ কোটি টাকা পরিশোধ করার প্রেক্ষিতে ১৭৬ জন কর্মচারি সবাই মামলা প্রত্যাহার করে নেন। প্রত্যেক শ্রমিক দেড় কোটি থেকে ৩ কোটি টাকা বুঝে পান। এর পরপরই তার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে চলমান মামলাগুলো নিষ্পত্তি করতে সময়সীমা বেঁধে দেন সুপ্রিম কোর্ট। এ প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের জারিকৃত রুলের চ‚ড়ান্ত শুনানির কথা রয়েছে আগামী ১১ আগস্ট।
মামলার বাদীপক্ষগণের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তাদের দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ করা হয়। এ ক্ষেত্রে শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে মামলা প্রত্যাহারে মধ্যস্থতা করেন গ্রামীণ টেলিকমের অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী। এ বাবদ এই আইনজীবী শ্রমিক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ১২ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন- মর্মে গত ৩০ জুন প্রসঙ্গ তোলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, উপ-মহাদেশের এমন কোনো আইনজীবীর জন্ম হয়নি যার ফি ১২ কোটি টাকা। এর পরপরই অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী ১২ কোটি টাকা ফি নেয়ার বিষয়টি ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দেন। পরে গত ১২ জুলাই এই আইনজীবী জানান, তার ৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুদক অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী ও ‘গ্রামীণ টেলিকম’র পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের ঘোষণা দিলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।