Inqilab Logo

শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

প্রশ্নফাঁসে মাউশি কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার গ্রেপ্তার

এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মাউশির কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার মিল্টনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও ডিবির একটি দল। গ্রেপ্তারকৃত চন্দ্র শেখর হালদার ওরফে মিল্টন ৩১তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা।

গতকাল লালবাগ থানায় করা মামলায় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিমের এসআই সুকান্ত বিশ্বাস তার সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবু হানিফ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ ছিদ্দিকী আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে একদিনের রিমান্ডে পাঠান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা চন্দ্র শেখর হালদার ওরফে মিল্টন মাউশিতে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। তারা নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ বদলি ও এমপিওভুক্তি, পক্ষে-বিপক্ষে প্রতিবেদন দেয়াসহ নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।
তেজগাঁও ডিবির এডিসি সাহাদাত হোসেন সুমা জানান, ইতোপূর্বে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্য বিবরণী ও সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর তাকে লালবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গত ১৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ৫১৩টি পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালে গোয়েন্দা দল খবর পায় প্রশ্নফাঁসের। ইডেন কলেজ কেন্দ্র থেকে থেকে প্রশ্নপত্রের উত্তরসহ চাকরি প্রার্থী সুমন জোয়ার্দার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার প্রবেশপত্রের উল্টো পিঠে ৭০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর লেখা ছিল। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। সুমন ও সাইফুলকে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরীক্ষার আগেই প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি স্বীকার করে।
তিনি আরো বলেন, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক আবদুল খালেক বাদী হয়ে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে পরীক্ষা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জোয়ার্দার জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে তার মোবাইলে পটুয়াখালীর সাইফুল ও টাঙ্গাইলের খোকন উত্তরপত্র পাঠান। মাউশি সূত্রে জানা গেছে, ১৩ মে ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৫১৩টি পদের জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ মে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক রাশেদুল, মাউশির উচ্চমান সহকারী আহসান হাবীব ও অফিস সহকারী নওশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর এক সপ্তাহ পরই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে মাউশি।
ডিবি তেজগাঁও কর্মকর্তারা জানান, নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি মাউশি কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার ওরফে মিল্টন ফাঁস করেছিলেন। তিনি ওই নিয়োগ পরীক্ষার ইডেন কলেজ কেন্দ্র সমন্বয় করার দায়িত্বে ছিলেন। মাউশি কার্যালয় থেকে প্রশ্ন নিয়ে কেন্দ্রে যাওয়ার সময় তিনি প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সাইফুলের কাছে পাঠিয়েছিলেন।



 

Show all comments
  • Mohmmed Dolilur ২৬ জুলাই, ২০২২, ৯:৪১ এএম says : 0
    এই দেশে শিক্ষার মূল্য নেই,মেধা ছাত্র ছাত্রী সার্স পায় না,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাউশি

১৫ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ