Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভয়াবহ বন্যায় ছাতকের ক্ষত পরিস্কার হচ্ছে

বিধ্বস্ত ৩০০ কিমি সড়ক : রেলপথও লণ্ডভণ্ড

কাজি রেজাউল করিম রেজা, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২২, ১২:০৩ এএম

সিলেট বিভাগে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের ছাতকে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানির প্রবল তোড়ে ভেঙ্গে গেছে অনেক পাকা সড়ক। বিশেষ করে পানি নেমে যাওয়ার পর বর্তমানে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের অস্তিত্বই নেই বললে চলে। পাকা ও মাটি সরে গিয়ে অনেকগুলো রাস্তা বড় বড় গর্ত ও খালে পরিণত হয়েছে।
বন্যার পানি নামলেও ছাতকের বিভিন্ন ইউনিয়নের সাথে এখনো সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ছাতকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক বন্যায় ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। গ্রামঞ্চলের অনেকগুলো কাঁচা সড়ক নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বন্যায় রাস্তার যে ক্ষতি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজনরা জানান, ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছাতক-দোহালিয়া-সুনামগঞ্জ সড়ক, শ্যামপাড়া-কান্দিগাঁও, মিত্রগাঁও-বঙ্গবন্ধু সড়ক, বুরাইয়া-বসন্তপুর, চরমহল্লা-চাঁনপুর, নোয়ারাই-চৌমুহনীবাজার, মাদরাসাবাজার-নোয়াকোট, বড়কাপন-শ্রীপুর, কালারুকা তাজপুর, ঝাওয়া, হাসনাবাদ, ঝামক, কালারুকা, বাউসাবাজারসহ অসংখ্য সড়ক।
ছাতক-দোয়ারাবাজার, নরশিংপুর, জাউয়াবাজার সড়ক, কৈতক-হায়দারপুর, জাউয়া-ভমভমি, জালালপুর- লামারসুলগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ-লাকেশ্বর, বুড়াইরগাঁও-আলমপুর সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা মাটি ভরাট করে সাময়িকভাবে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করেছেন।
উপজেলার কালারুকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব উদ্দিন বলেন, ইউনিয়নের প্রায় সব ক’টি কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে। কালারুকা-তাজপুর, মুক্তিরগাঁও-গৌরিপুর, বঙ্গবন্ধু মিত্রগাঁও সড়ক, রাজাপুর-নোয়াগাঁও সড়ক বন্যায় প্রবল স্রোতে প্রায় বিধ্বস্ত।
এছাড়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ছাতক-সিলেট রেলপথ। ২০২০ সালের ২৩ মার্চ থেকে এ রেলপথটিতে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত সিলেট-ছাতকবাজার রেলপথটি প্রায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অনেক জায়গায় রেলপথের মাটি ও পাথর ভেসে গিয়ে ঝুলে আছে লাইন ও সিøপার। লাইনের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বন্যায় তছনছ হওয়া পুরনো রেলপথটি মেরামত করে পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী আফছর আহমদ জানান, ছাতকে বন্যায় এলজিইডির অধীনে ২০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক কমবেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর ভেঙ্গে গেছে। এতে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরো জানান, ৪ থেকে ৫টি সড়ক সাময়িকভাবে চলনসই করতে জরুরি মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ সকল রাস্তার তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দফতরে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ ছাতকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুম আহমেদ সিদ্দিকী জানান, ছাতক ও দোয়ারাবাজার দুই উপজেলায় সওজ বিভাগের ১২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৬০ কিলোমিটার। সড়ক ভেঙ্গে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ