পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। সরকারের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে সেটিকে গণতন্ত্র বলা যায় না। জাতীয় প্রেসক্লাবে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
আকবর আলি খান বলেন, যে দেশে জনগণ সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, সেটিই হলো গণতন্ত্র। যে দেশে জনগণের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেটি ভোট হোক আর যাই হোক, তাকে গণতন্ত্র বলা যায় না।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ঔপনিবেশিক শাসনামলে নানা সংকট সত্ত্বেও শিক্ষার মান অনেক ভালো ছিল। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থায়ই এমাজউদ্দীন আহমদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। সেই শিক্ষাব্যবস্থায় শুধু দুর্বলতাই ছিল না, তার কতগুলো সবল দিকও ছিল। সে সময়ের পাঠ্যক্রম ছিল পুরোনো ধরনের, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষকের অভাব ছিল, কিন্তু শিক্ষার মান অত্যন্ত উঁচু ছিল।
আকবর আলি খান বলেন, আজ আমাদের অবকাঠামোর অভাব নেই, দালানকোঠা-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরে গেছে, বই, লাইব্রেরি, শিক্ষকের অভাব নেই। শোনা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কোনো বিভাগে এত শিক্ষক আছেন যে পড়ানোর মতো কোর্স নেই এবং ভাগাভাগি করে একজন শিক্ষক সারা বছরে একটি কোর্স পড়াতে পারলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। অথচ এমাজউদ্দীন সাহেব যখন পড়াশোনা করেছেন, তখন শিক্ষকেরা দিনে তিন-চারটা করে ক্লাস নিতেন, কিন্তু পড়াশোনার মান কমেনি। ওই সময় নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও হল সংসদের নির্বাচন হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কোনো নির্বাচন হয় না, কলেজগুলোয় নির্বাচন হয় না এবং গণতন্ত্রের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি দূরের কথা, গণতন্ত্র সম্পর্কে আমাদের ছাত্রদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরা হয়।
আকবর আলি খান বলেন, উদারনৈতিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন এমাজউদ্দীন আহমদ, সবার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। তিনি সমঝোতার রাজনীতি করতেন, সংঘাতের রাজনীতি করতেন না। গণতন্ত্রের কাজ চার দশক ধরে করেছেন এমাজউদ্দীন আহমদ তার লেখার মাধ্যমে, কর্মের মাধ্যমে মন্তব্য করে আকবর আলি খান বলেন, অধ্যাপক এমাজউদ্দীন বেসামরিক এবং সামরিক আমলাদের ভূমিকা কি তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের পররাষ্ট্রনীতির দর্শন উল্লেখ করে তিনি বলেন, পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে অনেক লিখেছেন তার মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এবং সতর্ক থাকা উচিত। তার লেখা পড়লেই বোঝা যায় তিনি কোনো স্থায়ী বন্ধুত্বে বিশ্বাস করতেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন- রাষ্ট্রের স্বার্থ হলো স্থায়ী, কোনো বন্ধু স্থায়ী নয়।
স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন। তিনি এমাজউদ্দীন আহমদের ব্যক্তি ও কর্মজীবন সম্পর্কে বক্তব্য দেন। রওশন জিন্নাত বলেন, পড়ালেখার প্রতি ব্যাপক ঝোঁক ছিল এমাজউদ্দীন আহমদের। তিনি ৬০টির বেশি বই ও ১০০টির বেশি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তার তত্ত্বাবধানেই প্রথম এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া হয়।
এমাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি আবদুল হাই শিকদার। সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম। এ সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।