পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে পাকিস্তানের পথ অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে যদি শক্তিশালি ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চান, তাহলে পাকিস্তানকে অনুসরণ করুন। পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার চালু করা হয়েছে। সেখানকার আদালত কিন্তু বলেনি, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করা ঠিক হবে না।
গতকাল শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে এক ছায়া সংসদে তিনি এ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করা হয় একজন সাবেক প্রধান বিচারপতিকে এবং রিটার্নিং অফিসার করা হয় জেলা জজদেরকে। জেলা জজরা রাজনীতির সাথে কম সম্পৃক্ত থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থায় যদি রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা কমাতে চান, তাহলে জেলা জজদেরকে রিটানিং কর্মকর্তা করুন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চেয়ে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা আরো বেশি বিতর্কিত।
ড. আকবর আলি খান আরো বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাহী বিভাগ ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি তারা ভবিষ্যত বেনিফিট নেয়ার চিন্তা করে। তাই বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
নির্বাচনে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশীদের পরোক্ষ চাপ থাকবে। তবে বিদেশীদের চাপ সরকার কিভাবে নিবে তা বলা কঠিন। বাংলাদেশের বর্তমান যে অবস্থা তাতে শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব না।
ড. আকবর আলি খান বলেন, বাংলাদেশে শতভাগের অধিক ভোট পেয়েও এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি। বরং সরকারকে খুশি রাখতে জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্তদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সাহসী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় সরকারি দল না চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন সহজ নয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী গণআন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি। নির্বাচনে হস্তেক্ষেপ করলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘ছায়া সংসদে’ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সুপারিশগুলো হচ্ছে ১. সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা; ২. সকল প্রার্থীর জন্য সমতল ক্ষেত্র তৈরি করা; ৩. নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন নির্মোহ পেশাজীবীদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব প্রকাশ করা; ৪. জেলা প্রশাসকদের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া; ৫. আগের নির্বাচন ব্যবস্থার কোন কর্মকর্তা আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী অপরাধ করে থাকলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া; ৬. নির্বাচনের পূর্বে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ দূর করা; ৭. অকারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি বন্ধ করা; ৮. যেসব আইনের দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম বাঁধা সম্মুখীন হতে পারে সাংবাদিকদের জন্য সে আইন শিথিল করা; ৯. নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রতিহিংসা রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং ১০. গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা তৈরি হলে প্রয়োজনে ইসিকে পদত্যাগের সৎ সাহস রাখা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।