Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কড়া নজরদারির পরও থামছে না বাল্যবিয়ে

মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া উপজেলা প্রশাসনের কড়া নজরদারির পরও থামছে না বাল্যবিয়ে। সরকারি নিয়মানুসারে বিয়ের বয়স মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ১৮ ও ছেলেদের ২১ নির্ধারণ রয়েছে। এর আগে বিয়ে আইনগত দ-নীয় অপরাধ। প্রকাশ, দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজ গত প্রায় ৫ মাস পূর্বে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক এক সভায় এই উপজেলায় বাল্যবিয়ে, ইভটিজিং, নারী নির্যাতনসহ মাদক বন্ধে বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এ লক্ষ্যে তার নেতৃত্বে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদসহ জনবহুল এলাকায় ডিজিটাল রঙিন ব্যানার টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও জনসচেতনা সৃষ্টির জন্য তিনি নিজেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষকম-লী ও ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে সমাবেশে করেন। সেই সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে সভাপতি করে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটিও গঠন করেন। এ ক্ষেত্রে অনেকটা সফলতাও আসে। তার নেতৃত্বে ৩ মাসে এ উপজেলায় প্রায় ১৫ জন স্কুলপড়–য়া ছাত্রী বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পায়। এরপরও প্রশাসনের এত কড়া নজরদারি ও তৎপরতার পরও থামছে না যেন বাল্যবিয়ে। গত এক মাসে এ উপজেলায় প্রায় ৫ জন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে গত ৭ নভেম্বর সোমবার রাতে উপজেলা সদরের পূর্ব আলোহালী গ্রামের মেকলেছার রহমানের মেয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী মোস্তাকিনা বাল্যবিয়ের শিকার হয়। পরের দিন ৮ নভেম্বর মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোরশেদা খাতুন পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন বাড়িঘর তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায়। উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের জোহাল মাঠাই গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী হুমাইয়ারা খাতুনের বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে ১১ নভেম্বর শুক্রবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদা খাতুন ঘটনাস্থলে যান। বাল্যবিয়ে দেয়ার অপরাধে মেয়ের মা ওলেদা ওরফে হাসেদা বেগম (৪৮)-এর ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন। গত ১২ নভেম্বর শনিবার রাতে চামরুলের ঘাটমাগুরা গ্রামের আইনুলের মেয়ে (১৪)-এর সাথে উপজেলা সদরের বোরাইয়ের জনৈক যুবকের বিয়ের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহেদ পারভেজের নির্দেশে স্থানীয় চেয়ারম্যান আলহাজ শাহ্জাহান আলী বিয়ে বন্ধ করে দেন। ওই রাতেই মেয়ের বাড়ির অনুষ্ঠান না করে অন্য বাড়িতে গিয়ে গোপনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এছাড়াও গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বেলাইল হিন্দুপাড়ার মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের স্কুলপড়–য়া মেয়ে রঞ্জনা রাণী সান্তনা (১৪) বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। গত ২১ নভেম্বর উপজেলার তালোড়া খাঁনপুর গ্রামের শ্যামল চন্দ্রের মেয়ে সীমা রাণী (১৪)-এর বাল্যবিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়েছে। এ বিষয়ে চলতি মাসে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় আলোচনা হয়। সভার সভাপতি ইউএনও শাহেদ পারভেজ বাল্যবিয়ে বন্ধে স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আরো আন্তরিক হয়ে বিয়ে বন্ধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাল্যবিয়ে

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ