Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাঙ্কিপক্স নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২২, ৯:১৫ পিএম

সংক্রমণ ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা’ জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যে কোনো স্বাস্থ্য সংকটে এটিই সংস্থাটির জারি করা সবচেয়ে জোরালো সতর্কতা। শনিবার (২৩ জুলাই) মাঙ্কিপক্স ভাইরাস সম্পর্কিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি কমিটির দ্বিতীয় বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়। -বিবিসি

এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের বিস্তার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারা বিশ্বের সরকারগুলো মাঙ্কিপক্সের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালালেও, এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ‘সুস্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে। এর আগে মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাব নিয়ে ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করা হবে কিনা, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞ গ্রুপের সদস্যরা। কিন্তু শনিবার (২৩ জুলাই) রোগটি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন সংস্থাটির মহাপরিচালক তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ থেকে ১৬ হাজারের বেশি মানুষের মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রাদুর্ভাবের ফলে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ডব্লিউএইচও বলছে, মাঙ্কিপক্স ছাড়াও বর্তমানে এ ধরনের আরও দুটি স্বাস্থ্য জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা জারি রয়েছে। এর একটি করোনাভাইরাস মহামারি এবং অন্যটি পোলিও। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো দুই শিশুর শরীরে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার (২২ জুলাই) দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একটি নবজাতক ও একটি শিশু সংক্রামক এ রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছে। তবে নবজাতকটি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা নয়।

মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিএস) জানায়, এ দুটি সংক্রমণের ঘটনায় তারা বাইরের কারো সংস্পর্শে আসেনি। পরিবার থেকেই তারা সংক্রমিত হয়েছে। চলতি বছর বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে ১৪ হাজার মাঙ্কিপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছে। আর এতে আক্রান্ত হয়ে আফ্রিকায় মারা গেছে পাঁচজন। সিডিসির হাই কনসিকোয়েনস প্যাথোজেনস অ্যান্ড প্যাথলজি বিভাগের উপপরিচারক ডা. জেনিফার ম্যাককুইস্টিন বলেন, শিশুদের শরীরে মাঙ্কিপক্স শনাক্ত হওয়ায় বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমকামী, উভকামী কিংবা পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা পুরুষের বাইরে কেউ এতে আক্রান্ত হচ্ছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ইউরোপ হলো মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের বিশ্বব্যাপী প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল। কারণ, নিশ্চিত হওয়া মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগীর ৯০ শতাংশই এ অঞ্চলের। চলতি বছরের ১৫ জুন থেকে এ পর্যন্ত ইউরোপে নতুন সংক্রমণ বেড়েছে তিনগুণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কিপক্স বসন্তের একটি বিশেষ ধরন। সংক্রামক হলেও রোগীর সংস্পর্শে না এলে এই রোগ ছড়ায় না। বিভিন্ন বানর জাতীয় প্রাণীর মাধ্যমে এটি ছড়ায়। এ ছাড়া শ্বাসনালি, শরীরে তৈরি হওয়া কোনো ক্ষত, নাক কিংবা চোখের মাধ্যমেও অন্যের শরীরে প্রবেশ করতে পারে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ভাইরাস সম্পর্কে সবাইকে বিস্তারিত জানতে আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। কীভাবে মাঙ্কিপক্স ছড়াচ্ছে তা চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়েও জোর দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ